মনোনয়ন জমা দেওয়ার শেষ দিনে চোপড়ায় হিংসার অভিযোগ। — নিজস্ব চিত্র।
উত্তর দিনাজপুরের চোপড়ায় সন্ত্রাসের রাজনীতি চলছে। এই পঞ্চায়েত নির্বাচনের মাধ্যমে আলোয় ফিরতে চান তাঁরা। এমনটাই দাবি করলেন মনোনয়ন জমা করতে গিয়ে আহতদের পরিজনেরা। তাঁরা জানালেন, ‘‘মানুষ মরছে মরুক, তবু অন্ধকার থেকে বার হতে চাই।’’
মনোনয়ন জমা দেওয়াকে কেন্দ্র করে বৃহস্পতিবার চোপড়ার কাঁঠালবাড়ি এলাকায় হিংসার অভিযোগ উঠেছে। গুলিবিদ্ধ হয়ে এক জনের মৃত্যুও হয়। আহত বেশ কয়েক জন। ঘটনায় বিরোধীরা অভিযোগের আঙুল তুলেছে তৃণমূলের দিকে। বাম, কংগ্রেস, বিজেপির অভিযোগ, তাদের মনোনয়ন জমা দিতে দেয়নি তৃণমূল। বৃহস্পতিবার, মনোনয়ন জমা দেওয়ার শেষ দিন সব দল একত্রে মনোনয়ন জমা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। মিছিল করে বিডিও অফিসের দিকে যাওয়ার সময় গুলি চলে বলে অভিযোগ।
ঘটনায় যাঁরা আহত হয়েছেন, তাঁদের মধ্যে একই পরিবারের ৬ জন রয়েছেন৷ আহত অনেকেই ইসলামপুর হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। দু’জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাঁদের পাঠানো হয়েছে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে। পায়ে গুলি লেগে ইসলামপুর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন মুস্তাফা আলম বলেন, ‘‘আমরা মিছিল করে মনোনয়নপত্র জমা দিতে যাচ্ছিলাম। কাঁঠালবাড়ি এলাকায় প্রথমে বোমাবাজি করা হয়। পরে গুলি চালায়। ওদের কাছে একে-৪৭-সহ অন্যান্য পিস্তল ছিল। আমার পায়ে গুলি লাগে।’’ মুস্তাফা এ-ও দাবি করেন যে, এলাকার তৃণমূল বিধায়ক হামিদুল রহমানের নেতৃত্বে এই কাজ হয়েছে৷ তাঁর কথায়, ‘‘এঁরা কোনও দলকে মনোনয়ন জমা দিতে দেয়নি৷ নির্বাচন কমিশনের কাছে আমাদের আবেদন, মনোনয়ন জমা দেওয়ার বিকল্প ব্যবস্থা ভাবা হোক, আমরা ভোটে লড়তে চাই।’’
এক আহতের আত্মীয় গিয়াসউদ্দিন জানিয়েছেন, গত পাঁচ বছর ধরে হিংসার অন্ধকারে রয়েছেন চোপড়ার বাসিন্দারা। এই নির্বাচনকে তাই ঘুরে দাঁড়ানোর মঞ্চ হিসাবে দেখছেন তাঁরা। তাঁর কথায়, ‘‘আমরা চোপড়া, দাসপাড়া এলাকার মানুষ গত পাঁচ বছর ধরে অন্ধকারে রয়েছি। এ বারের পঞ্চায়েত নির্বাচনে আমরা আলোতে আসতে চাই৷ বোমা, বন্দুক আর সন্ত্রাসের রাজনীতি চলছে।’’ গিয়াসউদ্দিন জানিয়েছেন, মনোনয়ন জমা দিতে গিয়ে তাঁর পরিবারের ৬ জন আহত হয়েছেন। তবে তাতে দমতে নারাজ তাঁরা। তাঁর কথায়, ‘‘আমাদের দাবি, আমাদের নিজেদের মানুষ মরছে মরুক, কিন্তু আমরা এই অন্ধকার থেকে বেরোতে চাই৷’’