বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী, রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস এবং আইএসএফ বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকি। —ফাইল চিত্র।
পঞ্চায়েত নির্বাচনে মনোনয়ন-পর্বে অশান্তির ঘটনায় রাজ্যপালের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলল বিরোধীরা। এই নিয়ে রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের ভূমিকায় আবার উষ্মাপ্রকাশ করলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। একই সঙ্গে রাজ্যপালকে বিঁধলেন আইএসএফ বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকিও। বুধবারের পর বৃহস্পতিবারও রাজ্যপালকে আক্রমণ করলেন শুভেন্দু। বলেছেন, ‘‘রাজ্যপালের যখন করার ছিল, তখন কিছু করেননি।’’ রাজ্য নির্বাচন কমিশনার পদে রাজীব সিংহের নিয়োগ রাজ্যপাল আটকাতে পারতেন বলে সরব হয়েছেন শুভেন্দু। বিরোধী দলনেতার পাশাপাশি রাজ্যপালকে কটাক্ষ করেছেন নওশাদও। তিনি বলেছেন, ‘‘রাজ্যপাল এখন কোথায় গিয়েছেন আমি জানি না। শুনলাম আউট অফ স্টেশন। আর রাজ্যে এই পরিস্থিতি চলছে।’’
রাজ্য নির্বাচন কমিশনার পদে রাজীব সিংহের নিয়োগের পর থেকেই রাজ্যপালের বিরুদ্ধে আক্রমণ শানাতে শুরু করেন শুভেন্দু। বুধবার বিরোধী দলনেতা অভিযোগ করেন, ‘‘এই কমিশনার মুখ্যমন্ত্রীর নিজের লোক। রাজ্যপালের সঙ্গে সমঝোতা করে একে বসানো হয়েছে।’’ বুধবারের পর বৃহস্পতিবারও মনোনয়ন ঘিরে উত্তেজনা ছড়িয়েছে। এই আবহে আবার রাজ্যপালকে আক্রমণ করলেন শুভেন্দু। তিনি বলেন, ‘‘উনি সাংবিধানিক পদে রয়েছেন। ওঁর চেয়ারকে সম্মান করি। ওঁর কাজকর্ম নিয়ে আগে বহুবার বলেছি। রাজ্যপালের যখন করার ছিল, কিছু করেননি। রাজীব সিংহকে আটকাতে পারতেন।’’ রাজ্য নির্বাচন কমিশনার হিসাবে অন্য যে দুই নাম প্রস্তাব করেছিল রাজ্য, তাঁদের মধ্যে কাউকে রাজ্য নির্বাচন কমিশনার করা হলে তাঁরা রাজীবের মতো ‘এত খারাপ হত না’ বলে মন্তব্য করেন শুভেন্দু।
বাংলার রাজ্যপাল হিসাবে সিভি আনন্দ বোসের দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই বিভিন্ন সময় তাঁর ভূমিকায় অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন শুভেন্দু। এ বার পঞ্চায়েত ভোটে মনোনয়ন ঘিরে অশান্তির ঘটনায় রাজ্যপালের দিকে বার বার পরোক্ষে আঙুল তুলছেন বিরোধী দলনেতা। রাজ্য নির্বাচন কমিশনার হিসাবে রাজীব সিংহের নামে রাজ্যপালের ‘সিলমোহর’ দেওয়াকেই হাতিয়ার করেছেন শুভেন্দু। রাজ্য নির্বাচন কমিশনার হিসাবে প্রথম রাজীবের নাম রাজভবনে পাঠিয়েছিল নবান্ন। তবে সঙ্গে সঙ্গে সেই নামে সায় দেননি রাজ্যপাল। এর পর, আরও নাম চেয়েছিলেন তিনি। যদিও শেষ পর্যন্ত রাজীবের নিয়োগেই সম্মতি দেন রাজ্যপাল বোস। আর এই নিয়েই প্রথম থেকে রাজ্যপালের ভূমিকায় প্রশ্ন তুলেছেন শুভেন্দু।
তবে এ বার শুধু শুভেন্দু নন। আরও এক বিরোধী বিধায়ক নওশাদও রাজ্যপালের বিরুদ্ধে সরব হলেন। মনোনয়ন ঘিরে অশান্ত হয়েছে দক্ষিণ ২৪ পরগনার ভাঙড়ও। সেখানে গুলিবিদ্ধ হয়ে ২ জনের মৃত্যু হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে রাজ্যপালের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন নওশাদ।
পঞ্চায়েত ভোটে মনোনয়ন-পর্বে অশান্তি নিয়ে অবশ্য আগেই সরব হয়েছিলেন রাজ্যপাল। গত শনিবার রাজ্যপাল বলেছিলেন, ‘‘পঞ্চায়েত নির্বাচনে কোনও রকম গন্ডগোল বরদাস্ত করা হবে না। নির্বাচন কমিশনারের সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। অবাধ ও শান্তিপূর্ণ ভোটের কথা জানিয়েছি তাঁকে। কোনও অশান্তি বরদাস্ত করা হবে না।’’