নিজস্ব চিত্র
১০৫ বছর জীবিত ছিলেন ঠাকুমা। চুটিয়ে সংসার করেছেন। তাই তাঁর মৃত্যুতে শোকের বাতাবরণ নেই। হাসি মুখে, নেচে, আবির খেলতে খেলতে তাঁকে শেষ যাত্রায় নিয়ে যাচ্ছেন আত্মীয়, প্রতিবেশীরা। এমনই এক অবাক করা ঘটনার সাক্ষী রইল মালদহের মানিকচক থানার গোয়ালপাড়া। শ্মশান যাত্রায় চলল, ‘‘হেলেদুলে যাব শ্মশান ঘাটে।’’
শতবর্ষ পার করা রোহিলা ঘোষের মৃত্যু হয় মঙ্গলবার দুপুরে। বার্ধক্যজনিত রোগেই তাঁর মৃত্যু হয়েছে বলে জানায় পরিবার। তার পরই শেষযাত্রার আয়োজন। একটি মাচায় দেহ তুলে ঘাড়ে করেই শ্মশানের উদ্দেশে বেরিয়ে পড়েন আত্মীয়, পরিজন, প্রতিবেশীরা। পিছনে ছিল ব্যান্ড পার্টি। খোল-কর্তালেরও আয়োজন ছিল। একদম শেষে ছিল আধুনিক রিমিক্স করা গানের আয়োজন। সেই গান ঘিরে চলছিল উদ্দাম নৃত্য। আবির খেলাও হচ্ছিল মাঝে মাঝে। এমনই এক আনন্দের শেষ যাত্রায় শ্মশানে পাড়ি দিলেন রোহিলা।
রোহিলার নাতি মানিক ঘোষ জানিয়েছেন, ‘‘ঠাকুমা ১০৫ বছর বেঁচেছিলেন। আনন্দে সংসার করেছেন। সকলকে পেয়েছেন। তাই তাঁর মৃত্যুতে আমরা শোক করতে চাই না। তিনি জীবন থেকে সবকিছুই পেয়েছেন। আনন্দে কাটানো দীর্ঘ জীবনের অবসান হয়েছে মঙ্গলবার। সেই আনন্দের ছোঁয়া তাই শ্মশান যাত্রায়ও। তাই আবির খেলা, তাই গানের আয়োজন।’’ একই কথা বলছেন প্রতিবেশীরাও। রোহিলা প্রতিবেশীদের সঙ্গেও মিলেমিশে আনন্দে থাকতেন। সেই কারণে শুধু পরিবারের লোকেরা নন, পাড়া, প্রতিবেশীরাও শেষ যাত্রায় অংশ নিয়েছেন আনন্দে। মৃত্যু বেদনার। রোহিলার মৃত্যুতে শোক ছিল। কিন্তু সবার মনে ছিল পূর্ণতার আনন্দ। কারণ জীবনকে পুরো মাত্রায় উপভোগ করার সুযোগ পেয়েছেন রোহিলা। সবাই বলছেন, ‘‘ওঁর আত্মার শান্তি হোক।’’