কে বলবে জেলা অরেঞ্জ জ়োন! ভিড় এড়াতে মালদহের চাঁচল দৈনিক বাজার সরানো হয়েছে রাস্তার পাশে। কিন্তু সেখানেও বিধি ভেঙে এমনই ভিড়। ছবি: বাপি মজুমদার
‘গ্রিন’ থেকে ‘অরেঞ্জ’ জোন হয়েছে মালদহ। কিন্তু দোকান-বাজার থেকে শুরু করে রাস্তাঘাটে সাধারণ মানুষের ভিড় দেখে উদ্বিগ্ন স্বাস্থ্য দফতরের কর্তারা। তাঁদের দাবি, মালদহ যেন স্বাভাবিক ছন্দে ফিরতে শুরু করেছে। অথচ, এখনই বেশি করে মেনে চলতে হবে ‘লকডাউন’। সর্বত্র ভিড় উপচে পড়লেও পুলিশ-প্রশাসন একেবারে নির্বিকার বলে অভিযোগ। অভিযোগ, পুলিশ প্রশাসনের নজরদারি শিথিল হতেই লকডাউন ভাঙার প্রবণতা বাড়ছে জেলায়। যদিও নাকা চেকিং, নজরদারি নিয়মিত চলছে বলে জানিয়েছেন পুলিশ প্রশাসনের কর্তারা।
প্রশাসনিক সূত্রে খবর, মালদহে এখনও পর্যন্ত সাড়ে পাঁচশো জনের লালারসের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এর মধ্যে দু’জনের রিপোর্ট ‘পজিটিভ’। তার জেরে ‘অরেঞ্জ’ জোনে চিহ্নিত করা হয়েছে মালদহ জেলাকে।
অথচ, মালদহে লকডাউন পালন হচ্ছে না বলে অভিযোগ উঠেছে। ইংরেজবাজার শহরের রথবাড়িতে থিকথিকে ভিড় আনাজ বাজারে। গোল্লাছুট এঁকে দেওয়া হলেও সামাজিক দূরত্ব না মেনেই কেনাবেচা চলছে। আনাজ, মুদির দোকান ছাড়াও কাপড়, জুতো, ফাস্টফুডের দোকানও খুলে যাচ্ছে বলে অভিযোগ। শুধু রথবাড়ি নয়, কালিয়াচক, সুজাপুর, পুরাতন মালদহ, হবিবপুর, গাজল, চাঁচল জেলার অধিকাংশ ব্লকেই একই ছবি। অভিযোগ, দোকান-বাজার খোলা, রাস্তায় দেদার চলছে মোটরবাইক, টোটো, ছোটগাড়ি। তা দেখে উদ্বিগ্ন স্বাস্থ্য দফতরের কর্তারা।
মালদহ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের চিকিৎসক পীযূষকান্তি মণ্ডল বলেন, ‘‘করোনাভাইরাসের রুখতে হলে লকডাউন অবশ্যই মেনে চলতে হবে। সামাজিক দূরত্ব মেনে চলাচল করতে হবে। সেই নিয়ম না মানলে আমাদেরই ক্ষতি হয়ে যাবে।’’
ভিড়ের জন্য পুলিশ প্রশাসনের নজরদারিকেই দুষেছেন সাধারণ মানুষের একাংশ। তাঁদের অভিযোগ, পুলিশের নজরদারি নেই, বাজারগুলিতে অভিযান, ধরপাকড় নেই। আর তাতেই ভিড় ক্রমশ বাড়ছে। পুলিশ জানিয়েছে, ২২ এপ্রিল পর্যন্ত জেলায় শতাধিক মামলা হয়েছে। সাড়ে চারশো জন গ্রেফতার হয়েছে। শতাধিক টোটো, দেড় শতাধিক মোটরবাইক আটক করা হয়েছে। লাঠি হাতে রাস্তায় বের হয়েছে পুলিশ। লকডাউন ভাঙার অভিযোগে কানধরে ওঠবসও করানো হয়েছে। নিয়মিত মাইকিং করে সচেতন করা হয়েছে। পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়া বলেন, ‘‘সর্বত্র নজরদারি চালানো হচ্ছে। জেলা জুড়ে নাকা চেকিং চলছে।’’