Partha Pratim Roy

সাইকেলে গ্রামে নেতা, ‘নাটক’ বলছে বিরোধী

পার্থপ্রতিম রায়ের কথায়, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী তথা দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় গাড়ি ছেড়ে সাইকেল নিয়ে বা হেঁটে মানুষের সঙ্গে যোগাযোগের বার্তা দিয়েছেন। আমরা সেই চেষ্টা করছি।”

Advertisement

নমিতেশ ঘোষ

কোচবিহার শেষ আপডেট: ২৫ জুলাই ২০২৪ ০৬:৫৩
Share:

সাইকেলে জনসংযোগ তৃণমূল নেতা পার্থপ্রতিম রায়ের। বুধবার কোচবিহারে। —নিজস্ব চিত্র।

গ্রামের বাড়িতে খোঁজ নিয়ে শুনলেন, পুরনো সাইকেল চালানোর মতো অবস্থায় নেই। কর্মীদের জিজ্ঞাসা করলেন, ‘‘কার কার কাছে সাইকেল রয়েছে?’’ নিয়ে আসা হল কয়েকটি সাইকেল। এর পরে একটি সাইকেলে উঠে নেতা রওনা দিলেন গ্রামের পথে। নিরাপত্তারক্ষীরা সঙ্গে এগোলে তাঁদের বললেন, ‘‘না না আপনারা কেউ আসবেন না।’’ কয়েক জন কর্মীকে বললেন, ‘‘তোরা চাইলে যেতে পারিস।’’

Advertisement

বুধবার কোচবিহার তৃণমূলের প্রাক্তন সভাপতি তথা দলের মুখপাত্র পার্থপ্রতিম রায়কে এমন ভাবেই দেখা গেল গ্রামের পথে। তাঁর কথায়, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী তথা দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় গাড়ি ছেড়ে সাইকেল নিয়ে বা হেঁটে মানুষের সঙ্গে যোগাযোগের বার্তা দিয়েছেন। আমরা সেই চেষ্টা করছি। প্ৰতি দিন সম্ভব না হলেও সপ্তাহে অন্তত এক দিন এ ভাবেই গ্রামে ঘুরতে যাব।’’ তিনি আরও বললেন, ‘‘এক কর্মীর সাইকেল নিয়ে এসেছি। নতুন সাইকেলে কিনব।’’

যা শুনে কটাক্ষ করেছেন বিজেপির কোচবিহার দক্ষিণ কেন্দ্রের বিধায়ক নিখিলরঞ্জন দে। তিনি বলেন, ‘‘যাঁরা দামী গাড়ি, নিরাপত্তারক্ষী ছাড়া এক পা বার হন না, তাঁরা সাইকেলে, হেঁটে ঘুরবেন কী ভাবে? এ সবই লোকদেখানো নাটক। এক-দু’দিনের বিষয়।’’

Advertisement

রবিবার ধর্মতলায় একুশের মঞ্চ থেকে মমতা বলেন, “গাড়িতে ঘোরার চেয়েও, পায়ে হেঁটে ঘোরা ভাল। বড় বড় গাড়ির থেকে সাইকেলে, স্কুটারে ঘোরা ভাল।” এখানেই থেমে না থেকে মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য, “তৃণমূল কংগ্রেস সেবার মঞ্চ। আমি বিত্তবান চাই না, বিবেকবান মানুষকে চাই।”

পার্থপ্রতিম একুশে জুলাইয়ের সভায় ছিলেন। দলনেত্রীর নির্দেশের পরে তিনি সিদ্ধান্ত নেন, বাড়ি ফিরেই সাইকেল নিয়ে জনসংযোগে বেরোবেন। পার্থপ্রতিমের গ্রামের বাড়ি জিরাণপুরে। কিন্তু তিনি কয়েক বছর ধরে কোচবিহার শহরে বসবাস করছেন। তিনি উত্তরবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহন নিগমের চেয়ারম্যানের দায়িত্বে রয়েছেন। সাধারণত গাড়িতেই চলাচল করেন।

এ দিন সকালে বাড়ি থেকে বেরিয়ে তিনি নিগমের অফিসে যান। সেখান থেকেই বেলা ১টা নাগাদ সাইকেল নিয়ে কয়েক কিলোমিটার দূরে টাকাগাছ-রাজারহাটে গ্রামে যান। ওই গ্রামে তিনি দুই ঘন্টার বেশি সময় ঘুরে বেড়ান। একটি শিশু শিক্ষাকেন্দ্র, একটি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে যান।

সেই শিক্ষা প্ৰতিষ্ঠানের পক্ষ একাধিক অভিযোগ জানানো হয় পার্থপ্রতিমকে। কোথাও পাখা নেই, কোথাও খাবার সরবরাহ ঠিক নেই— সে সব শুনে পদক্ষেপের আশ্বাস দেন পার্থপ্রতিম। কয়েক জন নেতা-কর্মীর বাড়িতেও যান তিনি। স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য শিবানী দাস,লিপি খাতুন, তৃণমূল নেতা মীর মহিরুদ্দিন, তৃণমূল কর্মী মফিজুল হোসেনদের সঙ্গে দেখা করেন।

শিবানী বলেন, ‘‘এ ভাবে নেতাকে গ্রামে পাব ভাবিনি। খুব ভাল লেগেছে। আমরাও হেঁটে মানুষের কাছে যেতে চাই।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement