কখনও দেখেছেন, ছাত্রদের মিছিল। কখনও দেখেছেন, সাঁজোয়া গাড়ির ধাক্কায় ছিন্নভিন্ন দেহ। ব্যক্তিগত কাজে বাংলাদেশে গিয়ে কোটা সংস্কারের দাবিতে ছাত্র আন্দোলনের মধ্যে পড়েছিলেন আজিজুল হক। তখনই এমন অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হন কোচবিহারের এক সময়ের এই ছাত্রনেতা। বাংলাদেশে প্রায় দশ দিন আটকে ছিলেন তিনি। ভারতীয় নাগরিক শুনে মিলেছিল পুলিশের সহযোগিতাও। শুক্রবার চ্যাংরাবান্ধা সীমান্ত হয়ে দেশে ফিরেছেন আজিজুল। বললেন, ‘‘প্রায় গৃহবন্দি হয়ে পড়েছিলাম। তার মধ্যেই বাড়ির বাইরে বেরোতে চেষ্টা করেছি। সে সময়ে চোখের সামনে ছাত্রের মৃত্যুও দেখেছি। কী ভয়ানক পরিস্থিতি! পরিবারের সঙ্গেও কয়েক দিন যোগাযোগ করতে পারিনি। সবাই চিন্তায় পড়েছিলেন।’’
আজিজুলের বাড়ি কোচবিহারের দিনহাটায়। তিনি এসইউসিআই দলের সদস্য। এক সময়ে এআইডিএসও'র নেতা ছিলেন। অনেক ছাত্র আন্দোলনের সঙ্গেও জড়িত ছিলেন আজিজুল। তাঁর সম্পাদনায় একটি ‘লিটল ম্যাগাজ়িন’ প্রকাশ হয়। সে কাজেই বাংলাদেশ লেখকদের সঙ্গে দেখা করতে যান। ১১ জুলাই তিনি বাংলাদেশের লালমণিরহাটে যান। সেখানে দু’দিন থাকার পরে
১৪ জুলাই ঢাকায় পৌঁছন।
১৬ জুলাই থেকে ছাত্র আন্দোলনে উত্তাল হয়ে ওঠে বাংলাদেশ। পুলিশের গুলিতে মৃত্যু হয় একাধিক
ছাত্রের। ঢাকা থেকে তখন তিনি উত্তরা যান। সেই সময়ে পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদের মুখে পড়েন। ভারতীয় নাগরিক জেনে পুলিশ নির্দিষ্ট স্থানে পৌঁছে দেন তাঁকে।
১৭ জুলাই রাতে তিনি ফেসবুকে লেখেন, ‘‘চার দিন ধরে ঢাকায় আটকে আছি। এইমাত্র বাড়ির পাশের গলি দিয়ে দু’টো ছেলে পালিয়ে গেল। দেখে নিজেকে অসহায় লাগছে। আন্দোলনরত ছাত্রছাত্রীদের উপরে আক্রমণকে ধিক্কার জানাই।’’ তার পর থেকে মোবাইল বন্ধ ছিল তাঁর।
আজিজুল বলেন, ‘‘উত্তরাতেই হইচই শুনে বাইরে বেরিয়েছিলাম। দেখলাম, পুলিশের গাড়ি ঘিরে বিক্ষোভ শুরু হয়েছে। গাড়িটি বেপরোয়া ভাবে চালাতে গিয়ে এক জন ছাত্রকে পিষে দিল।’’ এসইউসিআইয়ের দিনহাটা লোকাল কমিটির সম্পাদক প্রদীপ রায় বলেন, ‘‘আমরা খুব উৎকন্ঠার মধ্যে ছিলাম। আজিজুল সুস্থ ভাবে ফিরে আসায় ভাল লাগছে।’’