প্রতীকী ছবি।
গ্রেফতারি পরোয়ানায় এক নাম হওয়ার খেসারত দিতে হয়েছে। এক গোপাল মাহাতোর বদলে অন্য জনকে ধরে নিয়ে যায় পুলিশ। তিন দিন জেলে থাকার পর অবশেষে ছাড়া পেলেন মালদহের এক নিরাপরাধ বৃদ্ধ। ঘটনাচক্রে, যাঁর নাম গোপাল মাহাতো।
বৃহস্পতিবার রাত ৮টা নাগাদ মালদহ জেলা সংশোধনাগার থেকে গোপালকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। জেল থেকে বেরিয়ে মালদহ থানার পুলিশের ভূমিকায় প্রশ্ন তুলেছেন তিনি। এই ঘটনাকে পুলিশের অনিচ্ছাকৃত ভুল বলে মন্তব্য করেছেন সরকারি আইনজীবী।
গোপাল মাহাতোর বাড়ি পুরাতন মালদহের যাত্রাডাঙা গ্রাম পঞ্চায়েতের ঈশ্বরগঞ্জে। তবে ২০০৫ সালের পুরনো একটি খুনের মামলায় সোমবার বাড়ি থেকে যে গোপালকে গ্রেফতার করে মালদহ থানার পুলিশ, তিনি এতে জড়িতই নন। পরিবারের লোকজন পরে নথিপত্র খতিয়ে দেখে তা জানতে পারেন। শুধুমাত্র নাম এক হওয়ায় নিরাপরাধ এক বৃদ্ধকে পুলিশ গ্রেফতার করেছিল। অন্য দিকে, অভিযুক্ত গোপাল মাহাতোর বাড়ি দুর্গাপুর গ্রামে। তাঁর বাবার নামও আলাদা। এই খবর চাউর হতেই তোলপাড় পড়ে যায় জেলায়।
মঙ্গলবার মালদহ থানায় গিয়ে এ নিয়ে পুলিশের সঙ্গে কথা বলেন এলাকার বিধায়ক গোপালচন্দ্র সাহা। সংবাদমাধ্যমে এই খবর প্রকাশিত হলে নড়েচড়ে বসে আদালতও। বৃহস্পতিবার আদালতে এই ভুলের জন্য ভর্ৎসনা করা হয় মালদহ থানার পুলিশকে। শেষ পর্যন্ত আদালতের নির্দেশেই রাতে মুক্তি পান নিরপরাধ বৃদ্ধ গোপাল।
সংশোধনাগার থেকে বেরিয়ে ঘটনার দিনের কথা নিয়ে গোপাল বলেন, ‘‘সে দিন রাতে ঘুমিয়ে পড়েছিলাম। রাত সাড়ে ১১টার পর পুলিশ আমাকে বিছানা থেকে তুলে নিয়ে যায়। আমাদের কারও কথা শোনেননি পুলিশ অফিসার। উল্টে এ নিয়ে প্রতিবাদ করলে ওই অফিসার আমার ছেলেকে অশ্লীল ভাষায় কথা বলেন। পুলিশের ভুলে কোনও দোষ না করেও তিনদিন জেলে কাটালাম।’’
এই ঘটনাকে পুলিশের ভুল বলে মেনে নিয়েছেন সরকারি আইনজীবী দেবজ্যোতি পাল। তিনি বলেন, ‘‘আদালতে মালদহ থানার পুলিশ নিজেদের ভুল স্বীকার করেছে। অভিযুক্ত গোপাল মাহাতো ১০ বছর আগেই দুর্গাপুর গ্রাম ছেড়ে চলে গিয়েছে বলে জানিয়েছেন সেখানকার পঞ্চায়েত সদস্য। তাঁর বিরুদ্ধে নতুন গ্রেফতারি পরোয়ানা রুজু হয়েছে। নিরাপরাধ গোপাল মাহাতোকে সংশোধনাগার থেকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে।’’