বৃদ্ধ গোপালের মুক্তির চেষ্টা প্রশাসনের দরজায় পরিবার। প্রতীকী চিত্র।
গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হয়েছিল পুরাতন মালদহের যাত্রাডাঙা গ্রাম পঞ্চায়েতের দুর্গাপুর গ্রামের বাসিন্দা গোপাল মাহাতোর বিরুদ্ধে। সংঘর্ষ এবং ধর্ষণ মামলায় অভিযুক্ত গোপালকে ধরতে ওই গ্রামে পৌঁছয় পুরাতন মালদহ থানার কর্তব্যরত সিভিক ভলান্টিয়াররা। মাঝরাতে পাড়া জাগিয়ে গ্রেফতার করা হয় গোপালকে। তার পর পুলিশ লকআপ থেকে আদালত হয়ে ফের সংশোধনাগারে ঠাঁই হয় অভিযুক্তের। কিন্তু হঠাৎই ভাঙল ভুল। অভিযোগ, প্রকৃত আসামি গোপাল মাহাতোর বদলে পুলিশ ‘তুলে নিয়ে গিয়েছে’ যাত্রাডাঙা গ্রাম পঞ্চায়েতেরই ঈশ্বরগঞ্জ গ্রামের ৬৫ বছর বয়সি এক বৃদ্ধকে। তাঁর নামও গোপাল মাহাতো। যদিও পুলিশের দাবি, তাদের কোথাও কোনও ভুল হয়নি।
গত সোমবারের এই ঘটনার পর নাজেহাল অবস্থা বৃদ্ধ গোপাল মাহাতোর পরিবারের সদস্যদের। ভোটার কার্ড, পঞ্চায়েতের শংসাপত্র-সহ বৃদ্ধ বাবার যাবতীয় নথিপত্র নিয়ে থানায় যান ছেলে অশোক। তাঁর অভিযোগ, বিনা অপরাধে জেল খাটছেন এক জন বৃদ্ধ মানুষ। অপরাধীকে না ধরে শুধুমাত্র নামের মিল বলে তাঁর বাবাকে ধরে নিয়ে যান কয়েক জন সিভিক ভলান্টিয়ার।
কী অপরাধে তাঁর বাবাকে ধরা হল, তা জানতে দু’দিন লেগে গিয়েছে অশোক মাহাতোর। পরে আদালতের মাধ্যমে তিনি জানতে পারেন গোপাল মাহাতোর নামে এক জনের নামে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হয়েছে। কিন্তু সমনামী বৃদ্ধ বাবাকে ধরে গারদে পুরেছে পুলিশ। এখন বাবাকে ছাড়াতে এখানে-ওখানে ঘুরছেন তিনি। মানবাধিকার কমিশন থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছেও অভিযোগ করার কথা ভেবেছেন।
পুলিশ সূত্রে খবর, ২০০৫ সালের একটি সংঘর্ষ এবং ধর্ষণের মামলা রুজু হয়েছিল মালদহ থানার যাত্রাডাঙা গ্রাম পঞ্চায়েতের দুর্গাপুর এলাকার বাসিন্দা গোপাল মাহাতোর বিরুদ্ধে। দীর্ঘ দিন ধরে ওই মামলা চলে। পরে জামিনে মুক্তি পান ওই ব্যক্তি। সম্প্রতি আবার ওই অভিযুক্তের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হয়েছে। অভিযোগ, সেখানেই ভুল করে বসে পুলিশ।
বৃদ্ধ গোপালের ছেলের কথায়, ‘‘বাবার বয়স হয়েছে। জীবনে কোনও ঝুটঝামেলায় জড়ায়নি। অথচ, বাড়িতে কয়েক জন সিভিক ভলান্টিয়ার গিয়ে বাবার নামে গ্রেফতারি পরোয়ানা আছে বলে তাঁকে ধরে নিয়ে গেল। আমরা বার বার বলেছি যে, আপনাদের কোথাও ভুল হচ্ছে। কিন্তু ওরা কোনও কথা শোনেনি।’’
এ প্রসঙ্গে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক পুলিশ আধিকারিক বলেন, ‘‘আমরা কোর্টের নির্দেশ পালন করেছি। ওয়ারেন্টে গোপাল মাহাতোর বাবার নাম ছিল না। এমন নয় যে, আমরা ভুল কাউকে ধরেছি। এ বার যা দেখার আদালত দেখবে। যদি ভুল হয় আদালত দেখবে।’’