‘নিয়োগ দুর্নীতি সংক্রান্ত নথি’ হাতে নিয়ে ‘গোর্খা আনপ্লয়েড প্রাইমারি ট্রেইনড টিচার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন’ সদস্য নিজস্ব চিত্র।
শিক্ষক নিয়োগ দূর্নীতি নিয়ে উত্তাল রাজ্য রাজনীতি। জেল হেফাজতে রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। আর এরই মধ্যে জিটিএ (গোর্খাল্যান্ড টেরিটোরিয়াল এডমিনিস্ট্রেশন)-র স্কুলগুলিতে শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগ উঠল।
জিটিএর অধীন প্রাথমিক, আপার প্রাইমারি ও উচ্চ বিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগে দূর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ, জিটিএর প্রশাসনিক বোর্ডে থাকাকালীন অনৈতিকভাবে প্রায় ৫০০ জনকে শিক্ষক নিয়োগ করেছেন বর্তমান জিটিএর মুখ্য কার্যনির্বাহী আধিকারিক অনিত থাপা ও বিনয় তামাং। বহু দলীয় কর্মী সমর্থক ও পরিবারের সদস্যকে টাকা নিয়ে নিয়োগ করা হয়েছে বলেও অভিযোগ।
সেই কারণে এ বার সিবিআই তদন্তের দাবি জানিয়ে আদালতের দ্বারস্থ ‘গোর্খা আনপ্লয়েড প্রাইমারি ট্রেইনড টিচার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন’। সোমবার ওই ‘নিয়োগ দুর্নীতি সংক্রান্ত নথি’ প্রকাশ্যে আনেন সংগঠনের সদস্যরা। যদিও ওই বিষয়ে মুখ খুলতে চাননি অনিত।
সংগঠনের সভাপত সুধন তামাং বলেন, ‘২০১৯ সালের জানুয়ারি মাসে জিটিএ এলাকা জুড়ে শিক্ষক নিয়োগ শুরু হয়েছিল। সেই সময় জিটিএর প্রশাসনিক বোর্ডের চেয়ারম্যান ছিলেন অনিত। তিনি টাকার বিনিময়ে দলীয় কর্মী, সমর্থক ও দলের সদস্যদের পরিবারের লোকজনদের চাকরি পাইয়ে দেন বলে অভিযোগ। সে জন্য নাকি মাথাপিছু ১০ লক্ষ থেকে ১৫ লক্ষ টাকা নেওয়া হয়েছিল। পাহাড় জুড়ে শিক্ষক নিয়োগে কোটি কোটি টাকার দুর্নীতি হয়েছে।
সংগঠনের এক সদস্য বলেন, ‘‘সেজন্য আমরা সিবিআই তদন্তের দাবি জানিয়ে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছি। আমরা চাই এই নিয়োগ দূর্নীতি নিয়েও তদন্ত করুক সিবিআই।’’
জানা গিয়েছে, ২০১৯ সালের জানুয়ারি মাসে জিটিএ এলাকায় শিক্ষক নিয়োগ শুরু হয়। দূর্নীতির বিষয়টি প্রকাশ্যে আসতেই মার্চ মাসে কলকাতা হাই কোর্টে মামলা দায়ের হয়। পরবর্তীতে কলকাতা হাই কোর্ট সেই মামলা জলপাইগুড়ি সার্কিট বেঞ্চে স্থানান্তরিত করেন। এরই মাঝে রাজ্যে শিক্ষক দূর্নীতি প্রকাশ্যে আসতে ফের সিবিআই তদন্তের দাবি জানিয়ে আদালতের দ্বারস্থ হয় মামলাকারীরা। অভিযোগ, জিটিএর অধীন প্রাইমারি স্কুলে ১২১ জন, আপার প্রাইমারি পদে ৫৯ জন ও উচ্চবিদ্যালয়ে ৩১৩ জনকে শিক্ষক নিয়োগে আর্থিক দূর্নীতি হয়েছে।
অভিযোগ, বর্তমান জিটিএ বোর্ডের সহকারী মুখ্য কার্যনির্বাহী আধিকারিক সঞ্চবীর সুব্বাকেও চাকরি পাইয়ে দেন অনিত। এ ছাড়া ভারতীয় গোর্খা প্রজাতান্ত্রিক মোর্চার সম্পাদক কেশবরাজ পোখরেলের পরিবারের ১৭ জন সদস্য ও ঘনিষ্ঠদের নিয়োগ দেওয়া হয়। নিয়োগের সময় আবেদনকারীদের কোন লিখিত পরীক্ষা বা ইন্টারভিউ নেওয়া হয়নি বলেও অভিযোগ।
ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিনয় তামাং বা অনিত থাপার কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। তাঁদের একাধিকবার ফোন করা হলেও কোনও উত্তর পাওয়া যায়নি।