সরেজমিনে: মাটির উনুনে রান্না হচ্ছে করণদিঘিতে একটি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে। পরিদর্শনে বিডিও নীতীশ তামাং। নিজস্ব চিত্র
বারান্দায় কাঠের উনুনে রান্না চাপিয়েছেন দিদিমণি। ঘরের ভিতরে তখন দু’চোখ দিয়ে অঝোরে জল পড়ছে কচিকাঁচাদের। ধোঁয়ায় ভরে গিয়েছে ঘর। কাশতে শুরু করে দিয়েছে কেউ কেউ। চোখ মুছতে মুছতে প্রায়ই উড়ে আসে প্রশ্নটা, ‘দিদিমণি রান্না কখন শেষ হবে?’
উত্তর দিনাজপুরের অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রগুলোতে মাটির চুল্লিতে রান্না করাই দস্তুর। গ্রামের অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রগুলি চলে এ ভাবেই। রান্না করতে হিমসিম দশা কর্মীদের। কবে ধোঁয়া থেকে মুক্তি পাবে তা নিয়ে সন্দিহান খোদ কর্মীরা।
অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রগুলির পরিকাঠামো খতিয়ে দেখছেন প্রশাসনের আধিকারিকরা। আধিকারিকদের পেয়ে কেন্দ্রের দিদিমণিরা জানান, খুব কষ্টে উনুনে রান্না করতে হয়। চোখ জ্বালা করে। বিশেষ করে বর্ষাকালে খড়ি দিয়ে রান্না করতে সমস্যা বাড়ে। ধোঁয়ায় ছোট শিশুরা অসুস্থ হয়ে পড়ে। গ্যাসে রান্না হলে সমস্ত সমস্যার সমাধান হবে।
জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, উত্তর দিনাজপুরে সমস্ত অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে উনুনের বদলে গ্যাসে রান্নার ব্যবস্থা চালু করার জন্য রাজ্যের সংশ্লিষ্ট দফতরে প্রস্তাব পাঠিয়েছে জেলা প্রশাসন। কত খরচ হবে তার তালিকা-সহ পাঠানো হয়েছে। ধোঁয়া থেকে মুক্তি পেতে অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রগুলিতে গ্যাসে রান্নার দাবিও জানিয়েছেন বাসিন্দারা। এর আগে হাই স্কুলের পাশাপাশি প্রাথমিকেও ধোঁয়া থেকে মুক্তি পেতে মিড-ডে মিল রান্নার ব্যবস্থা গ্যাসে হয়। কিন্ত অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রগুলোতে এখনও তা চালু হয়নি।
জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, উত্তর দিনাজপুরে মোট অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের সংখ্যা ৩৭৫০টি। যে সব কেন্দ্রের নিজস্ব ঘর আছে প্রাথমিক ভাবে তেমন কেন্দ্রগুলোকে বেছে নিয়ে এই প্রকল্প চালু করা যেতে পারে বলে পরিদর্শক দল রিপোর্ট জমা দিয়েছে। বিভিন্ন ব্লকের সিডিপিওরা জানান, পরিদর্শনের পর জেলা প্রশাসনের কাছে রিপোর্ট জমা করা হবে।
আইসিডিএস প্রকল্পের জেলা আধিকারিক পার্থ দাশগুপ্ত বলেন, ‘‘জেলাশাসকের নির্দেশে অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রগুলোতে পরিদর্শন চলছে।’’