নেই ছাত্র, নেই শিক্ষক, বন্ধের মুখে স্কুল। নিজস্ব চিত্র।
জলপাইগুড়ির বানারহাট ব্লকের দেবপাড়া হিন্দি জুনিয়র স্কুল। নামেই স্কুল। না আছে পড়ুয়া, না দেখা মেলে শিক্ষকদের। স্কুল বাড়ি, বন্ধ ক্লাস ও সাইনবোর্ডেই শুধু অস্তিত্ব বজায় রেখেছে স্কুলটি। স্থানীয় বাসিন্দারা চান, যে করে হোক হাল ফিরুক স্কুলের। পড়ুয়াদের গুঞ্জনে আবার প্রাণ ফিরুক এলাকায়।
দেবপাড়া চা-বাগানের মাঝখানে তৈরি এই স্কুলে পড়ুয়ার সংখ্যা শূন্য। দু’জন শিক্ষক ছিলেন বটে, কিন্তু এক জন রাজ্য সরকারের উৎসশ্রী প্রকল্পে অন্যত্র বদলি নিয়েছেন। আর এক জন শিক্ষক স্বাস্থ্যের কারণে বদলির আবেদন জানিয়ে রেখেছেন। তিনি স্কুলেও আসেন না বলে অভিযোগ। স্বভাবতই চরম সমস্যায় এলাকার পড়ুয়ারা। আস্তে আস্তে পড়ুয়ার সংখ্যা কমতে কমতে এখন শূন্যে এসে দাঁড়িয়েছে।
দেবপাড়া হিন্দি জুনিয়র স্কুলের প্রাক্তনী, বর্তমানে অন্য স্কুলের পড়ুয়া আসিফ বরা বলে, ‘‘স্কুলে আগে ৩-৪ জন পড়ুয়া ছিল। কিন্তু মাস্টারমশাইরা অন্য স্কুলে পাঠিয়ে দিয়েছিলেন। এখন একজনও ছাত্রছাত্রী নেই। স্কুল খোলা হয় না, মিড ডে মিলও হয় না। তাই কেউ যায় না।’’
স্থানীয় সমাজসেবী মনিকা ছেত্রী বলেন, ‘‘বর্তমানে ছাত্রছাত্রী নেই। ঠিক ভাবে স্কুল খোলাও হয় না। তাই বন্ধ স্কুলের বারান্দায় এই চা-বাগানের পড়ুয়াদের বিনা পয়সায় টিউশনি দেওয়া হয়। যাতে তারা পড়াশোনাটা একটু শিখতে পারে।’’
স্থানীয় বাসিন্দা জয়ন্তী মাহাতোর দাবি, হিন্দি জুনিয়র হাই স্কুলটিকে বাংলা মাধ্যমের জুনিয়র হাইস্কুল করা হোক। কারণ ওই জুনিয়র স্কুলটির পাশেই রয়েছে বাংলা মাধ্যমের প্রাইমারি স্কুল। তাই এখানকার পড়ুয়ারা সেই জুনিয়র স্কুলে বাংলা মাধ্যম খোলা হলে সেখানে পড়ার সুযোগ পাবে।’’
স্কুল পরিদর্শক শেফালি ওঁরাও বলেন, ‘‘এই স্কুলে একটা সময় ছাত্রছাত্রী ছিল। কিন্তু বর্তমানে শূন্য। শিক্ষকেরা মাঝেমধ্যে আসেন। তবে ক্লাস হয় না। বাংলা মাধ্যমের পড়ুয়া রয়েছে কিন্তু হিন্দি মাধ্যমের কোনও শিশু নেই। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে যাতে হিন্দি জুনিয়র হাইস্কুলকে বাংলা মাধ্যমে পরিবর্তন করা হয়।’’
বন্ধ হতে বসা হিন্দি জুনিয়র হাইস্কুলের একটি ঘরকে আইসিডিএস সেন্টার হিসেবে বেছে নেওয়া হয়েছে। কারণ বাগানে কোনও আইসিডিএস সেন্টার নেই। যে হেতু স্কুলটি বন্ধ হয়ে পড়ে রয়েছে তাই একটি ক্লাস ঘরকে অস্থায়ী ভাবে আইসিডিএস সেন্টার হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে।