পুজোর মরসুমে অসম ও মণিপুর থেকে চোরাশিকারি দল ঢুকবে জলদাপাড়ায়, এই আগাম খবর পেয়ে নড়েচড়ে বসেছে বনদফতর। শুরু হয়েছে জোরদার নজরদারি। ছুটি বাতিল করা হয়েছে বনকর্মীদের। গত বছরেও চোরাশিকারী আক্রমণে মারা গিয়েছিল একাধিক গন্ডার। ধারালো অস্ত্র দিয়ে কেটে নেওয়া হয়েছিল খড়্গ। তারপরেই পুলিশ ও এসএসবি-র সঙ্গে যৌথ টহলদারি শুরু করে বনদফতর। রাজ্যের বনমন্ত্রী বিনয়কৃষ্ণ বর্মণ বলেন, “সচেতনা বৃদ্ধি আমাদের আসল লক্ষ্য ছিল। জঙ্গল সংলগ্ন আশেপাশের বনবস্তি ও গ্রামগুলির বাসিন্দাদের সচেতনতা অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। তারা জঙ্গল ও বন্য প্রাণীর গুরুত্ব বুঝতে পেরেছেন। সেখান থেকেই আমাদের কাছে আগাম খবর আসছে।”
বন দফতর সূত্রে খবর গত বছর জলদাপাড়ায় গুলি করে দু’টি গন্ডার মেরে খড়গ কেটে নিয়ে গিয়েছিল চোরাশিকারিরা। একটি গন্ডারের দেহ পচে গলে কঙ্কাল বের হওয়ার পরে বিষয়টি জানাজানি হয়। প্রশ্ন ওঠে জঙ্গলে বনকর্মীদের টহলদারি নিয়েও। সে বছরেই বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের জঙ্গলে হাতিকে গুলি করে দাঁত কেটে নিয়ে যায়। বনদফতর জানতে পারে চোরাশিকারীরা আশেপাশের গ্রামে এসে আশ্রয় নিয়ে জঙ্গলে নজরদারি চালিয়ে সময় বুঝে শিকার করত। তারপর থেকেই নিয়মিত বনদফতর, পুলিশ ও এসএসবি জওয়ানরা গ্রাম ও বনবস্তিগুলিতে যৌথ টহলদারি শুরু করে। শুরু হয় সচেতনতাও। পরে বেশ কয়েকজন গ্রেফতার হয়। উদ্ধার হয় গন্ডারের খড়গও।
জলদাপাড়ার ডিএফও ভাস্কর জেভি জানান, গোপন সূত্রে খবর রয়েছে, পুজোর সময় মণিপুর ও অসমের একটি শিকারী দল জলদাপাড়ায় ঢুকতে পারে। তাই এসএমএসের মধ্যে বিভিন্ন ইডিসি এবং এফপিসি কমিটির সদস্য ও গ্রামবাসীদের সচেতন করা হচ্ছে। গ্রামে অচেনা লোকের সন্দেহজনক গতিবিধি দেখলেই বনদফতরকে খবর দিতে। প্রায় ৪০টি কুনকি হাতি জঙ্গলে টহলদারি চালাচ্ছে। ওয়াচটাওয়ার থেকে জঙ্গলের গতিবিধি নজর রাখছেন বনকর্মীরা। বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের এডিএফও মঞ্জুলা তিরকে জানান, কর্মীদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে। জলদাপাড়া সংলগ্ন বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পেও দিনরাত চলছে টহলদারি, গ্রামগুলিতেও বিশেষ নজর রাখা হচ্ছে।