সাংবাদিক সম্মেলনে নীহাররঞ্জন ঘোষ (বাঁ দিক থেকে দ্বিতীয়)।—নিজস্ব চিত্র।
সেটা ছিল ২০০৫ সাল। তখনও ইংরেজবাজার পুরসভার চেয়ারম্যান ছিলেন কৃষ্ণেন্দুনারায়ণ চৌধুরী। সে বার বামেদের সমর্থন নিয়ে নির্দল প্রার্থী হিসেবে শহরের ১৬ নম্বর ওয়ার্ড থেকে ভোটে দাঁড়িয়ে কৃষ্ণেন্দুনারায়ণবাবুকে পরাজিত করেছিলেন নীহাররঞ্জন ঘোষ। পা রেখেছিলেন পুরসভায়।
১১ বছর বাদে একই ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি। এবারও সেই কৃষ্ণেন্দুনারায়ণ চৌধুরীকেই ৩৯ হাজার ৭২৭ ভোটে হারিয়ে প্রথম বিধানসভায় পা রাখলেন নীহাররঞ্জনবাবু।
রাজ্য রাজনীতিতে শোরগোল ফেলা সেই নীহাররঞ্জনবাবু জোটের সমর্থন নিয়ে কৃষ্ণেন্দুবাবুকে হারালেও, এ বার তৃণমূল শিবিরে যোগ দিচ্ছেন বলে জোর গুঞ্জন শুরু হয়েছে জেলা জুড়ে।
তবে শনিবার দুপুরে সিপিএমের জেলা কার্যালয়ে সাংবাদিক বৈঠক করে তৃণমূলের যোগ দেওয়ার জল্পনার ইতি টানার চেষ্টা করলেন নীহাররঞ্জনবাবু। তবে স্পষ্ট করে কিছু বলতে চাননি তিনি। এমনকি যে প্রেস বিজ্ঞপ্তি দিয়েছেন তাতেও তৃণমূলে না যাওয়ার কথা উল্লেখ করেননি। নীহাররঞ্জনবাবু বলেন, ‘‘শহরজুড়ে একটা গুঞ্জন শুরু হয়েছে আমি তৃণমূলে যোগ দিতে চলেছি। মানুষের কাছে আমাকে বদনাম করার জন্য এক শ্রেণির মানুষ এমন অপপ্রচার করছেন। আমি বাম এবং কংগ্রেস দু’দলের সমর্থন নিয়ে ইংরেজবাজারে লড়াই করেছি। আর সফলও হয়েছি। তাই দলবদলের কোন প্রশ্ন উঠছে না।’’
তবে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন নীহাররঞ্জনবাবু। এক্ষেত্রে অবশ্য তাঁর ব্যাখ্যা, ‘‘মানুষের স্বার্থে আমি একবার নয়, বারবার মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করব। এলাকার উন্নয়নের জন্য দেখা করব রাজ্যের বিভিন্ন মন্ত্রীদের সঙ্গেও। তার মানে এই নয়, আমি তৃণমূলে যোগ দিতে চলেছি।’’
এ বার ইংরেজবাজার বিধানসভা কেন্দ্রে কংগ্রেস এবং বাম কোনও দলই প্রার্থী দেয়নি। দু’দলই সমর্থন করেছিল নির্দলের নীহাররঞ্জনবাবুকে। তাঁর সমর্থনে কখনও সিপিএমের অশোক ভট্টাচার্য যেমন মিছিলে পা মিলিয়েছিলেন, তেমনই সামিল হয়েছেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীও। ফলে নীহাররঞ্জনবাবুর তৃণমূলে যোগে দেওয়ার জল্পনায় বিপাকে পড়ে গিয়েছে দু’ দলের নেতা নেত্রীরাই।
নীহারবাবুর ঘনিষ্ঠ সূত্রে জানা গিয়েছে, তিনি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন। এরপরেই চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে তিনি তৃণমূলে যোগ দিচ্ছেন। তাই এ দিন জরুরি ভিত্তিতে সিপিএমের কার্যালয়ে ডেকে তাঁকে দিয়ে সাংবাদিক বৈঠক করা হয়। যদিও সিপিএমের জেলা সম্পাদক অম্বর মিত্র বলেন, ‘‘অনেকে প্রচার করছেন নীহারবাবু তৃণমূলে যোগ দিচ্ছেন। তাঁর কাছ থেকে মানুষ পুরো বিষয়টি জানতে চাইছেন। তাই তিনি নিজেই সাংবাদিক বৈঠক করে সমস্ত জল্পনায় জল ঢাললেন।’’