প্রতীকী ছবি
শিলিগুড়ি শহরে ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা গত দুই বছরের রেকডর্কেও ছাপিয়ে গেল। জেলা স্বাস্থ্য দফতরের যা পরিসংখ্যান তাতে শিলিগুড়ি শহরে ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ১৫০০ ছাড়িয়েছে। গত দুই বছরের চেয়ে যা অনেকটাই বেশি। ২০১৭ সালে শিলিগুড়িতে ডেঙ্গি ভয়াবহ আকার নিয়েছিল। অন্তত ১৩ জনের মৃত্যু হয়েছিল শিলিগুড়ি পুর এলাকা এবং মহকুমা মিলিয়ে। আক্রান্তের সংখ্যা সরকারি হিসাবে ছিল সাড়ে এগারোশোর একটু বেশি। গত বছর ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে হয় ১২৮৬। এ বছর, সেখানে ইতিমধ্যেই বৃহস্পতিবার পর্যন্ত আক্রান্ত ১৫২০ জন। তার মধ্যে এখনও ডেঙ্গির প্রকোপ চলছে শহরে। তাতে এই সংখ্যা আরও অনেকটাই বাড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতালের চিকিৎসকদের কয়েক জন জানান, ডেঙ্গির সংক্রমণ চলছেই। অনেকেই ডেঙ্গি নিয়ে ভর্তি রয়েছেন। পরিস্থিতি নিয়ে এ দিন জরুরি বৈঠক ডাকেন মেয়র অশোক ভট্টাচার্য। বিশিষ্ট চিকিৎসক শেখর চক্রবর্তী, স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিক, স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা, পুরসভার স্বাস্থ্য বিষয়ক আধিকারিকদের নিয়ে বৈঠক করেন। প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে কী কী করণীয় চিকিৎসক বিষয়টি বিস্তারিত বুঝিয়ে দেন। মেয়র বলেন, ‘‘নভেম্বর মাসে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েছে। তবে আগামীতে আরও সচেতন হতে হবে। এখন যেমন ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে সেটা চলবে। আবার জানুয়ারি মাস থেকেও আলাদা ভাবে রোগ প্রতিরোধে ব্যবস্থা নেওয়ার পরিকল্পনা নেওয়া হচ্ছে।’’
চিকিৎসকদের একাংশের মত জানুয়ারি থেকে এপ্রিল পর্যন্ত যখন ডেঙ্গির প্রকোপ থাকে না তখনই প্রতিরোধের মূল ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। না হলে যখন প্রকোপ ছড়াতে শুরু করে, তখন প্রতিরোধের ব্যবস্থা কার্যকর হয় খুব কম। তাই জানুয়ারি থেকে চার মাস নিকাশি সাফাই, ‘স্প্রে’ করার উপর জোর দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন পুর কর্তৃপক্ষ। বাড়িগুলোতে গিয়ে ভিতরের পরিস্থিতি সরেজমিনে দেখার উপরেও জোর দিতে বলা হয়েছে। আশঙ্কা, বাড়ির ভিতরেই অনেক ক্ষেত্রে জল জমে ডেঙ্গির বাহক এডিস মশার বংশ বৃদ্ধি ঘটছে।
স্বাস্থ্য দফতর এবং পুরসভার একটি সূত্রে জানা গিয়েছে, গত অক্টোবর মাসে ডেঙ্গিতে আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৪৯৮ জন। নভেম্বরেও পাঁচশোর মতো। গত দুই মাসেই কার্যত আক্রান্তের সংখ্যা এক হাজার ছাড়িয়ে যাবে। চিকিৎসকদের একাংশের দাবি, বেসরকারি হিসাবে আক্রান্তের সংখ্যা কয়েক হাজার।
হাসপাতালে অন্তত ১০ জন ডেঙ্গি আক্রান্ত ভর্তি রয়েছে। তাদের সঙ্গে রয়েছে অন্য রোগীরা। অনেক ক্ষেত্রেই তাঁদের মশারি না দেওয়ায় অন্য রোগীরাও চিন্তায় রয়েছেন বলে জানান। হাকিমপাড়া, বর্ধমান রোড, সেবকমোড়, খালপাড়া, মাটিগাড়ার নার্সিংহোমগুলোতেও ডেঙ্গি নিয়ে অনেকেই ভর্তি রয়েছেন।