মায়ের কোলে ক্যানসার আক্রান্ত নাসিরুদ্দিন। নিজস্ব চিত্র।
ইংরেজবাজারে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়ের কর্মীসভার আগেই ক্যানসার আক্রান্ত ব্যক্তির হাতে স্বাস্থ্যসাথী কার্ড তুলে দিল স্থানীয় প্রশাসন। এই সহযোগিতা পেয়ে ফের চিকিৎসা শুরু করাতে পেরেছেন মালদহ জেলার হরিশ্চন্দ্রপুরের কুশিদা এলাকার বাসিন্দা নাসিরুদ্দিন শেখ।
কয়েক দিন আগে ক্যানসার নিয়ে ভিন রাজ্য থেকে বাড়ি ফিরেছিলেন নাসিরুদ্দিন। মাথার উপর ছাদটুকুও তাঁর নেই। এই অবস্থায় চিকিৎসা কেমন করে চলবে, তা ভেবে কুলকিনারা পাচ্ছিলেন না তাঁর বাবা-মা। উপায় না দেখে প্রশাসনের দ্বারস্থ হয় ওই পরিবার। বিষয়টি জেনেই দ্রুত স্বাস্থ্যসাথী কার্ড তৈরির নির্দেশ দেন প্রশাসনিক কর্তারা। তা হাতে পেয়েই চিকিৎসা শুরু করাতে পেরেছে ওই পরিবার।
পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, মামুন এবং তাঁর ছেলে নাসিরুদ্দিন পেটের তাগিদে রাজস্থানের আজমেঢ়ে শ্রমিকের কাজ করেন। সেই রোজগারের কোনও রকমে চলে সংসার। ছেলের ক্যানসার ধরা পড়তেই বিপর্যয় নেমে এসেছে মামুনের পরিবারে। তাঁদের কাছে না আছে টাকা, না আছে স্বাস্থ্যসাথী কার্ড। এই অবস্থায় প্রশাসনের দ্বারস্থ হন তাঁরা। এই আবেদন করার ২৪ ঘন্টার মধ্যে মালদহ জেলা শাসকের অফিস থেকে স্বাস্থ্যসাথী কার্ড পান। তার পর অসুস্থ ছেলেকে নিয়ে কলকাতার চিত্তরঞ্জন ক্যানসার হাসপাতালে চিকিৎসার উদ্দেশ্যে রওনা দেয় নাসিরুদ্দিনের পরিবার।
জানা গিয়েছে, হরিশচন্দ্রপুর-১ ব্লকের বিডিও অনির্বাণ বসুর উদ্যোগে এই কার্ড পেয়েছেন তাঁরা। এ ছাড়াও তাঁদের পাশে দাঁড়িয়েছেন এলাকার জনপ্রতিনিধিরা। মালদহের নারী, শিশু ও ত্রাণ কর্মধ্যক্ষা মর্জিনা খাতুন নাসিরুদ্দিনের পরিবারের সঙ্গে দেখা করেছিলেন। মালদহ তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক বুলবুল খানও আর্থিক সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন। অঞ্চলের উপপ্রধান মহম্মদ নুর আজমও এই পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছেন। ক্যানসার আক্রান্তের কাকা মুক্তার আলম বলেছেন, ‘‘কিছুদিন আগে ও অসুস্থ হয়। পরে জানা যায়, ওর ক্যানসার হয়েছে। পঞ্চায়েত উপপ্রধান আমাদের অনেক সাহায্য করেছেন।’’ এ নিয়ে কুশিদা গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান মহম্মদ নুর আজম বলেছেন, ‘‘দরিদ্র পরিবারের ছেলে নাসিরুদ্দিন। অসুস্থ অবস্থায় বাড়ি এসেছিল ছেলেটি। স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের জন্য আবেদন করতে বলেছিলাম। বিডিও স্যারের সহযোগিতায় মালদহে এসে কার্ডটি করিয়ে নিই। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়র পাশাপাশি সংবাদমাধ্যমকেও ধন্যবাদ জানাচ্ছি।’’