তোড়জোড়। নিজস্ব চিত্র।
বছর তিনেক আগে নিরাপত্তার বলয় ভেঙে হেমতাবাদে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারি জনসভার মঞ্চে উঠে পড়েছিলেন করণদিঘির বাসিন্দা দুই তরুণী। ওই ঘটনার কথা মাথায় রেখে আজ, বুধবার রায়গঞ্জের স্টেডিয়াম মাঠে মুখ্যমন্ত্রীর সভাকে কেন্দ্র করে বাড়তি সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিয়েছেন উত্তর দিনাজপুর জেলা প্রশাসন ও রায়গঞ্জ পুলিশ জেলা কর্তৃপক্ষ।
আজ, বেলা ১১টা নাগাদ ওই মাঠে উত্তর ও দক্ষিণ দিনাজপুরের তৃণমূল নেতা ও কর্মীদের নিয়ে জনসভা করার কথা মুখ্যমন্ত্রীর। মুখ্যমন্ত্রীর নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা অফিসারদের একাংশের দাবি, হেমতাবাদের ঘটনার কথা মাথায় রেখে মুখ্যমন্ত্রীর নিরাপত্তার স্বার্থে শেষ মূহুর্তে কালিয়াগঞ্জের চান্দোইল এলাকার সরকারি মাঠের বদলে কংক্রিটের দেওয়াল ও গ্যালারির ঘেরাটোপে থাকা রায়গঞ্জের স্টেডিয়াম মাঠে মুখ্যমন্ত্রীর সভা সরানো হয়েছে।
মঙ্গলবার দিনভর রায়গঞ্জ পুলিশ জেলার সুপার সুমিত কুমার, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জসপ্রীত সিংহ ও উত্তর দিনাজপুরের জেলাশাসক অরবিন্দ কুমার মিনা মুখ্যমন্ত্রীর সভাস্থলের ডি-জোনের ব্যারিকেড, মুখ্যমন্ত্রীর মূল মঞ্চ-সহ বাকি তিনটি মঞ্চ, পাশের পলিটেকনিক কলেজ মাঠের অস্থায়ী হেলিপ্যাড থেকে মুখ্যমন্ত্রীর সভাস্থলে যাতায়াতের রাস্তা ও মাঠ জুড়ে সিসি ক্যামেরা লাগানোর কাজ খতিয়ে দেখেন।
পুলিশ কর্মীরা মাঠ ও গ্যালারির কোন কোন জায়গায় দাঁড়িয়ে নিরাপত্তার কাজ করবেন তাও পুলিশ সুপার চূড়ান্ত করে দেন। জেলা পুলিশের এক কর্তা বলেন, ‘‘হেমতাবাদের ঘটনার কথা মাথায় রেখে মুখ্যমন্ত্রীর সভাস্থল ও সংলগ্ন এলাকায় নিরাপত্তার জন্য এদিন পুলিশ ও গোয়েন্দার সংখ্যা এক হাজার থেকে বাড়িয়ে দেড় হাজার করা হয়েছে। পাশাপাশি, সভাস্থলের বিভিন্ন এলাকায় ৮০টি সিসি ক্যামেরার মাধ্যমে নজরদারি চালানো হবে।’’
পুলিশ সুপার বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর সভাস্থলে যাতে নিরাপত্তার কোনও ফাঁক-ফোকর না থাকে, আচমকা কেউ মঞ্চের সামনে যেতে না পারেন তার সবরকম ব্যবস্থা করা হয়েছে।’’ জেলা তৃণমূলের প্রাক্তন পর্যবেক্ষক শুভেন্দু অধিকারী বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পর কালিয়াগঞ্জের পুরসভার বিদায়ী পুরপ্রধান কার্তিকচন্দ্র পাল ছাড়া জেলার কোনও স্তরের নেতা এখনও পর্যন্ত বিজেপিতে যোগ না দেওয়ায় মুখ্যমন্ত্রীর সফরের আগে স্বস্তিতে তৃণমূল নেতারা।
তবে জেলা তৃণমূল সভাপতি কানাইয়ালাল আগরওয়ালের সঙ্গে ইসলামপুরের তৃণমূল বিধায়ক আব্দুল করিম চৌধুরীর দীর্ঘদিন ধরে দ্বন্দ্ব লেগে রয়েছে বলে অভিযোগ। হেমতাবাদ, কালিয়াগঞ্জ, রায়গঞ্জ ও করণদিঘিতেও তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বও নতুন নয়। এই প্রেক্ষাপটে এদিন দলনেত্রী জেলায় দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব রুখতে সব পক্ষকে কড়া বার্তা দিতে পারেন বলে মনে করছে জেলা নেতৃত্ব। কানাইয়ার অবশ্য বক্তব্য, ‘‘জেলায় দলে কোনও গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব নেই। সবটাই বিরোধীদের অপপ্রচার।’’