স্বাগত: বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে ন্যাক-এর প্রতিনিধি দল। ছবি: বিনোদ দাস।
উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে বুধবার থেকে পরিদর্শন শুরু করল পাঁচ সদস্যের ন্যাশনাল অ্যাসেসমেন্ট অ্যান্ড অ্যাক্রিডিটেশন কাউন্সিলের (ন্যাক) প্রতিনিধি দল। মঙ্গলবার বাগডোগরায় বিমানে সদস্যরা পৌঁছন। বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি সূত্রে জানা গিয়েছে, তাঁদের নিয়ে আসতে অন্তত ৮টি গাড়ির বন্দোবস্ত করা হয় বিমানবন্দরে। তা দেখে প্রতিনিধি দলের সদস্যরাও হতবাক। পাঁচ জনের জন্য এতগুলো গাড়ি কেন, কেনই বা এর জন্য এত খরচ করা হচ্ছে তা নিয়ে কড়া সমালোচনা করেন। এমনকি, ক্যাম্পাসে তাঁদের ঘোরার জন্য গাড়ির বদলে টোটোর বন্দোবস্ত রাখতে বলেন। সেই মতো এ দিন তাঁদের জন্য টোটোর ব্যবস্থা ছিল। তাতেই বিভিন্ন দফতরে ঘুরেছেন তাঁরা। যদিও প্রতিনিধি দলটিকে বিলাসবহুল হোটেলেই রাখার বন্দোবস্ত করা হয়েছে। তবে ওই বিলাসবহুল হোটেলে থাকা-খাওয়া নিয়ে প্রতিনিধিরা কোনও আপত্তি তুলেছেন কিনা, তা অবশ্য জানা যায়নি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের আধিকারিকদের কয়েকজন জানান, প্রতিনিধি দলটিকে যাতে কোনও সমস্যায় না পড়তে হয় সেজন্য সব সময়ই ভাল ব্যবস্থা করা হয়। কেন না, অনেক সময় ঠিক মতো ব্যবস্থা না-থাকলে য়েটা তাদের অসন্তোষের কারণ হতে পারে।
দলে রয়েছেন রজন ওয়েলুকার, ওমপ্রকাশ সিংহ নেগি, ধরমজিৎ সিংহ পারমার, অনীশা সোফি, স্বর্ণলতা সরাফ। প্রথম তিনজন মহারাষ্ট্র, উত্তরাখণ্ড এবং পঞ্জাবের তিনটি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য। বাকি দু’জন জম্মু ও কাশ্মীর এবং ছত্তীসগঢ়ের দু’টি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক। এ দিন বিশ্ববিদ্যালয়ে তাঁদের স্বাগত জানাতে নানা আয়োজন হয়। বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষকদের সঙ্গে প্রশাসনিক ভবনে প্রাথমিক কর্তাবার্তার পর প্রতিনিধিরা রসায়ন বিভাগ, প্রাণিবিদ্যা বিভাগ, টি সায়েন্স বিভাগ, হিমালয়ান স্টাডি বিভাগ, সংগ্রহশালার মতো বিভিন্ন বিভাগ ঘুরে দেখেন। টোটোয় করেই তাঁরা বিভিন্ন বিভাগে যান। প্রতিনিধি দলের পরিদর্শনের জন্য এ দিন প্রশাসনিক ভবনে প্রবেশ নিয়ন্ত্রণে নিরাপত্তারক্ষী ছিল। বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচয়পত্র ছাড়া কাউকে সেখানে ঢুকতে দেওয়া হয়নি।
সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার পর বিভাগীয় প্রধানদের নিয়ে বৈঠক করেন প্রতিনিধিরা। বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি সূত্রে জানা গিয়েছে, চার বছর অন্তর ন্যাকের মূল্যায়ন হয়। তবে করোনা পরিস্থিতিতে তা সময় মতো করা যায়নি। শেষ মূল্যায়ন হওয়ার পর পাঁচ বছর পেরিয়ে গিয়েছে। শেষ মূল্যায়নে ৩.০৫ পয়েন্ট পেয়ে ‘এ’ গ্রেড পেয়েছিল এই বিশ্ববিদ্যালয়। ন্যাকের পরিদর্শনের মুখে বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়োগে অনিয়ম নিয়ে সরব হয় বিজেপি। তাদের একাধিক বিধায়ক বিক্ষোভ অবস্থানও করেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির তরফেও ক্যাম্পাসের জমি সরকারি বা বেসরকারি সংস্থার হাতে তুলে দেওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করে উপাচার্যের কাছে বিস্তারিত জানতে চান। সে সব চিন্তার কারণ হয়ে উঠেছে কর্তৃপক্ষের।
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ।