GTA

বোর্ডও জিটিএ হাতে? ক্ষমতা বাড়ছে বিনয়ের

এদিন সকালে দার্জিলিঙে বিনয়দের তরফে শক্তিপ্রদর্শন করা হয়েছে। বিরাট এই শান্তি মহামিছিলের পাল্টা বিমল গুরুংপন্থীরা মিরিকে টাউন হলে বড় সভা করেছে।

Advertisement

কৌশিক চৌধুরী

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ০৪ নভেম্বর ২০২০ ০৪:৫৫
Share:

পাহাড়ে বিনয়পন্থীদের সভা। নিজস্ব চিত্র।

পাহাড়ের অস্থায়ী সরকারি কর্মীদের স্থায়ীকরণ নিয়ে রাজ্যের মুখ্যসচিবকে জিটিএ-র সঙ্গে আলোচনা করে সমস্যা মেটানোর নির্দেশ দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মঙ্গলবার বিকেলে নবান্নে বিনয় তামাং, অনীত থাপার সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর বৈঠক হয়। সেথানে মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়, জিটিএ-র প্রধান সচিব সুরেন্দ্র গুপ্ত ছাড়াও দুই মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস এবং ফিরহাদ হাকিমও ছিলেন। পাহাড়ের শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রাখার সঙ্গে সঙ্গে একাধিক উন্নয়নের কাজ নিয়েও আলোচনা হয়। বৈঠকের পরে বিনয়রা জানান, আলোচনা সফল। রাতে পাহাড়ে আতশবাজিও ফাটান বিনয়পন্থীরা।

Advertisement

সরকারি সূত্রের খবর, জিটিএ-র জন্য আরও তহবিল বরাদ্দ, সিঙ্কোনা চা বাগানের কর্মীদের নিয়মিত করা, মিরিক লেকের সংস্কার ছাড়াও জিটিএ কর্মীদের স্থায়ীকরণের দাবি নিয়ে আলোচনা হয় এ দিনের বৈঠকে। সব শুনে সিঙ্কোনা বাগান এবং জিটিএ কর্মীদের বিষয়টি নিয়ে এক সপ্তাহের মধ্যে মুখ্যসচিবকে সব পক্ষকে নিয়ে বৈঠকের নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী। তেমনিই, পাহাড়ের সব জনজাতি বোর্ডকে বিনয় তামাং, অনীত থাপার নেতৃত্বধীন কোনও সরকারি ব্যবস্থার আওতায় আনার সরকারি বিজ্ঞপ্তিও জারি করা হবে বলে তিনি দুই নেতাকে আশ্বাস দিয়েছেন। তাতে পাহাড়ের প্রশাসনিক এবং রাজনৈতিক ক্ষমতা রাজ্য বিনয়, অনীতের হাতেই রাখছে, তা স্পষ্ট।

এদিন সকালে দার্জিলিঙে বিনয়দের তরফে শক্তিপ্রদর্শন করা হয়েছে। বিরাট এই শান্তি মহামিছিলের পাল্টা বিমল গুরুংপন্থীরা মিরিকে টাউন হলে বড় সভা করেছে। বিনয় তামাং বলেছেন, ‘‘কোনও শক্তি প্রদর্শন নয়, বিমলের প্রতি ক্ষোভ থেকে মানুষ রাস্তায় নামছে। দার্জিলিঙে ২০ হাজারের বেশি মানুষ ছিলেন। মিরিকে বড়জোর ২০০ জন। আমরা এসব না ভেবে পাহাড়ের শান্তি, উন্নয়নের কাজে আরও মন দিতে চাই। মুখ্যমন্ত্রী আমাদের সেই নির্দেশই দিয়েছেন।’’

Advertisement

পাহাড় সমস্যার মধ্যে সরকারি অস্থায়ী কর্মীদের বিষয়টি এখন অন্যতম। সেখানেই বিমল, বিনয় শিবিরে দুই গোষ্ঠী ভাগ হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। গত সোমবার অস্থায়ী কর্মীদের সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটির নেতারা বিনয়ের থেকে সমর্থন প্রত্যাহার করে নেন। কয়েক ঘন্টার মধ্যে বিনয়, অনীতের সমর্থনে নতুন সংগঠন তৈরি হয়ে যায়। এদিন কার্শিয়াঙে নতুন সংগঠনের পদাধিকারীদের বৈঠক হয়েছে। নতুন সংগঠনের সভাপতি সন্দীপ বল বলেছেন, ‘‘লালকুঠিতে যাঁরা ক্ষমতায় থাকবেন তাঁদের সঙ্গে সমন্বয় রেখে আমাদের স্থায়ীকরণের দাবি আদায় করতে হবে। রাজনীতি করে আমাদের লাভ নেই।’’

দুপুরে এই বক্তব্যের কয়েক ঘন্টার মধ্যে কলকাতার নবান্ন থেকে মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশের খবর পাহাড়ে পৌঁছয়। তাতে অস্থায়ী কর্মীদের মধ্যে খুশির হাওয়া। তাঁদের আশা, রাজ্য ও জিটিএ মিলে দ্রুত স্থায়ীকরণের দাবি মেটাবে। মোর্চা নেতারা জানান, গোটা দার্জিলিং, কালিম্পং জেলার পাহাড়ি এলাকা মিলিয়ে কয়েক হাজার অস্থায়ী কর্মী আছেন। সুবাস ঘিসিংয়ের আমল থেকে কাজ করে অনেকে অবসর নিয়েছেন। কিন্তু কেউ কোনওদিন স্থায়ী হননি। বিধানসভা ভোটের আগে তা বিনয়, অনীত করে দিতে পারলে ভোটে প্রভাব পড়তে বাধ্য। কারণ, ওই অস্থায়ী কর্মী এবং তাদের পরিবার মিলিয়ে সংখ্যাটা কম নয়।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement