বাংলাদেশে পাঠরত পড়ুয়ারা ফিরছে এদেশে। রবিবার ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত, ফুলবাড়িতে। — নিজস্ব চিত্র।
কার্ফু থাকায় গত কয়েক দিন থেকে রাস্তায় বেরোতে পারছিলেন না। বন্ধ ইন্টারনেট পরিষেবা, যানবাহনও। এই পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ থেকে ভারতীয় পড়ুয়াদের দেশে ফেরাতে তৎপর হল ভারতীয় হাই কমিশন। প্রতিবেশী দেশ নেপাল এবং ভুটানের পড়ুয়াদেরও ফেরাতে সাহায্য করছে ভারত সরকার। রবিবার ফুলবাড়ি সীমান্ত দিয়ে ভারতের এক পড়ুয়ার সঙ্গে নেপালের ১০ এবং ভুটানের তিন পড়ুয়া ভারতে ফিরলেন। এ দিন ফুলবাড়ি দিয়ে মোট ভারতে ফিরেছেন ৫৬ জন। তাঁদের অনেকের চোখেমুখে ছিল আতঙ্কের ছাপ।
বাংলাদেশে ডাক্তারি পড়তে গিয়েছিলেন উত্তরপ্রদেশের গোরক্ষপুরের বাসিন্দা সফিরুল্লাহ। রাজশাহিতে থাকেন তিনি। জানালেন, ভারত, নেপাল, ভুটান এবং ভিন দেশের পড়ুয়ারা ছাড়া হস্টেল থেকে সে দেশের বেশিরভাগ পড়ুয়াই ঘরে ফিরেছেন। এ অবস্থায় কী ভাবে দেশে ফিরবেন চিন্তায় ছিলেন। গত শনিবার ভোরে ভারতীয় হাই কমিশনারের তরফে তাঁকে ফোন করা হয়েছিল। আজ সকালে দেশে ফিরতে বলা হয়েছিল বলে দাবি। কিন্তু যানবাহন চালু না থাকায় সীমান্তে পৌঁছতে পারবেন তিনি জানান। এর পরে ভারতের তরফেই ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়। তাঁর সঙ্গে নেপাল, ভুটানের ৯ জন পড়ুয়াকেও ফেরানোর ব্যবস্থা করা হয়। রবিবার সকালের দিকে ফেরেন তাঁরা।
সফিরুল্লাহের বক্তব্য, ‘‘নিরাপত্তার সমস্ত আশ্বাস দেওয়া হলেও নানা আশঙ্কায় দিন কাটছিল। পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছিলাম না।’’ বাংলাদেশ থেকে ভারতে ফিরতে যেমন সমস্যায় পড়ছেন পড়ুয়া থেকে বিভিন্ন প্রয়োজনে যাওয়া অনেকে, তেমনই ভারত থেকে বাংলাদেশে ফিরতেও সমস্যার অভিযোগ তুলছেন সে দেশের অনেক মানুষ। সপ্তাহখানেক আগে শিলিগুড়িতে চিকিৎসা করাতে এসেছিলেন পঞ্চগড়ের বাসিন্দা মহম্মদ জমিরউদ্দিন। তাঁর হাত ভেঙেছে। গত বুধবার শিলিগুড়ির একটি নার্সিংহোমে অস্ত্রোপচার হয়েছে। তাঁর সব টাকাই শেষ বলে দাবি। হোটেল ভাড়াও দিতে পারছিলেন না। ভাঙা হাত নিয়ে স্ত্রীর সঙ্গে ফুলবাড়ি সীমান্তের কাছে ঠায় বসে। জমিরউদ্দিন বলেন, ‘‘বাংলাদেশ থেকে যদি কোনও পরিচিতের দেখা পাই। যদি কেউ সাহায্য করেন দেশে ফিরতে, সেই অপেক্ষায় রয়েছি। পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছি না।’’
ফুলবাড়ি কাস্টমসের সুপার সঞ্জীব কুমার বলেন, ‘‘সীমান্ত খোলা থাকলেও আমদানি, রফতানি বন্ধ। ভারতের দিকে কোনও সমস্যা নেই।’’ ব্যবসায়ীরা জানাচ্ছেন, গত কয়েক দিনে কয়েক কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে।