Dulal Sarkar Murder Case

দুলালকে মারতে ১০ দিন ধরে ‘রেকি’ করে দুষ্কৃতীরা! ছিল কাজ সেরে বিহারে চলে যাওয়ার পরিকল্পনাও

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, বিগত কয়েক দিন ধরেই দুলাল কোথায় যাচ্ছেন, কখন যাচ্ছেন, সেই সব দিকে নজর রাখছিল দুষ্কৃতীরা। প্রথমে ঠিক হয়, বড়দিনের অনুষ্ঠানে দুলালকে গুলি করে খুন করা হবে।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৩ জানুয়ারি ২০২৫ ১২:২৭
Share:

দুলাল সরকারকে খুনের নেপথ্যে কে বা কারা? খতিয়ে দেখছে পুলিশ। গ্রাফিক: আনন্দবাজার অনলাইন।

মালদহের তৃণমূল নেতা দুলাল সরকার ওরফে বাবলাকে খুন করতে ১০ দিন ধরে রেকি করেছিল দুষ্কৃতীরা। মৃত্যু সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়ার পরে বিভিন্ন গলিপথ ধরে মালদহের মানিকচকে পৌঁছে সেখান থেকে বিহারে পালানোর পরিকল্পনাও করে ফেলে তারা। ধৃতদের গ্রেফতার করে এই তথ্য মিলেছে বলে পুলিশ সূত্রে খবর।

Advertisement

দুলালকে খুনের ঘটনায় বৃহস্পতিবারই দু’জনকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। এক জনের নাম মহম্মদ সামি আখতার। তিনি বিহারের কাটিহারের বাসিন্দা। অপর জনের নাম টিঙ্কু ঘোষ। তিনি ইংরেজবাজারের গাবগাছি অঞ্চলের বাসিন্দা। শুক্রবার সকালে আরও পাঁচ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানান ইংরেজবাজার পুরসভার পুরপ্রধান কৃষ্ণেন্দুনারায়ণ চৌধুরী। পরে মালদহ জেলা পুলিশ এবং হরিশ্চন্দ্রপুর থানার পুলিশের যৌথ অভিযানে বিহার থেকে গ্রেফতার করা হয় আব্দুল গনি নামের এক দুষ্কৃতীকে। দুলালকে খুনের ঘটনায় বিহার-যোগ ক্রমশ স্পষ্ট হচ্ছে বলে মনে করছেন তদন্তকারীরা।

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, বিগত কয়েক দিন ধরেই দুলাল কোথায় যাচ্ছেন, কখন যাচ্ছেন, সেই সব দিকে নজর রাখছিল দুষ্কৃতীরা। প্রাথমিক ভাবে তারা ঠিক করেছিল, বড়দিনের অনুষ্ঠানে ভিড়ের মধ্যে দুলালকে গুলি করে খুন করবে। কিন্তু দুলালকে একা না পাওয়ায় বড়দিনের পরিকল্পনা বাতিল করা হয়। প্রসঙ্গত, ইংরেজবাজারের ভবানী মোড়ে নিজের দফতর লাগোয়া অ‌ঞ্চলে প্রতি বছরই বড়দিনের ‘কার্নিভ্যাল’ আয়োজন করে থাকেন দুলাল। তাঁর ঘনিষ্ঠমহল সূত্রে খবর, এ বার এই অনুষ্ঠান করতে চাননি ওই তৃণমূল নেতা। পরে অনুগামীদের অনুরোধে মত বদলান।

Advertisement

পুলিশ সূত্রে খবর, দুষ্কৃতীদের কয়েক জনকে ইংরেজবাজারের ২৩ নম্বর ওয়ার্ডের কুলদীপ মিশ্র কলোনি থেকে গ্রেফতার করা হয়। প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে, দুলালের মাথা লক্ষ্য করে গুলি চালিয়েও তাঁর মৃত্যু সম্পর্কে নিশ্চিত হয়নি দুষ্কৃতীরা। মৃত্যু নিশ্চিত করতে ফের তারা এলাকায় ঢোকে। তার পর মানিকচক হয়ে বিহারে পালানোর পরিকল্পনা ছিল তাদের। এই দুষ্কৃতীদের কে বা কারা ভাড়া করল, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।

পুলিশ সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, দুলালের গাড়িচালককে জিজ্ঞাসাবাদ করে নতুন কিছু তথ্য পাওয়া গিয়েছে। বৃহস্পতিবার নিজের মহানন্দাপল্লির বাড়ি থেকে বেরিয়ে ১৫০ মিটার দূরের প্লাইউড কারখানায় যাচ্ছিলেন দুলাল। তৃণমূল নেতা আগেই জানিয়েছিলেন, প্লাইউড কারখানায় গিয়ে কর্মীদের বেতন মেটাবেন। তার পর গাড়ি ঘুরিয়ে যাবেন নিজের দলীয় দফতরে। বাইকে চেপে কয়েক জন তাঁর গাড়ির উপর নজর রাখছে, দুলালকে এই কথা জানান গাড়িচালক। তৃণমূল নেতাকে গাড়ি থেকে নামতে বারণও করেন। কিন্তু ‘কোন মাতব্বর কী করবে’ বলে গাড়ির দরজা খুলে নেমে যান দুলাল। তার পরের ঘটনাপ্রবাহের সাক্ষী সিসি ক্যামেরা। সেখানকার ফুটেজে দেখা যাচ্ছে বন্দুক হাতে দুলালের দিকে তেড়ে যাচ্ছে চার দুষ্কৃতী। পড়িমরি করে দৌড়চ্ছেন তৃণমূল নেতা। দু’জন দুলালকে অনুসরণ করে গুলি করতে করতে প্লাইউড কারখানায় ঢুকছে। এক জন বাইরে থেকে গুলি ছুড়ছে। আর এক জন আছে বাইরে পাহারায়। প্লাইউড কারখানার সামনে বসা দুই কর্মীকে দেখা যাচ্ছে প্রাণভয়ে পালিয়ে যেতে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement