উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল। ফাইল চিত্র
তিনি অভিযোগ করেছেন, ১০২ নম্বরে ফোন করেও অ্যাম্বুল্যান্স থেকে সদুত্তর পাননি। বলা হয়েছে, মৃত শিশুর ক্ষেত্রে তারা পরিষেবা দিতে পারবে না। কালিয়াগঞ্জের অসীম দেবশর্মার সেই অভিযোগের প্রেক্ষিতে ১০২ পরিষেবার ক্ষেত্রে কিছু প্রশ্ন সামনে এনেছে। স্বাস্থ্যকর্তাদের একাংশের মত, সরকারি নির্দেশিকায় সব স্পষ্ট বলা নেই বলে সমস্যা রয়েছে। বিষয়টি নিয়ে মঙ্গলবার উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে বৈঠক করেন দার্জিলিং জেলা পরিবহণ আধিকারিক সোনম শেরিং লেপচা। বৈঠকের পরে, অধ্যক্ষ ইন্দ্রজিৎ সাহা এবং পরিবহণ আধিকারিক জানান, সরকারি নিয়ম অনুযায়ী অ্যাম্বুল্যান্সের ভাড়া নিতে হবে। অধ্যক্ষ জানান, ওয়ার্ড থেকে দেহ ছাড়ার ব্যাপারে নেওয়া হবে কিছু সতর্কতাও।
রাজ্যের স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণস্বরূপ নিগম সোমবার জানান, অ্যাম্বুল্যান্সে শব বহন করার কথা নয়। সরকারি হাসপাতালে শববাহী গাড়ির ব্যবস্থা নেই। অথচ, উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে ওই ঘটনার পরে বেশ কিছু জায়গায় ‘অস্পষ্টতা’ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে বলে দাবি স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের। নিয়ম মাফিক এক বছর বা তার কম বয়সের অসুস্থ শিশু এবং মায়েরা এই পরিষেবা পান। তা হলে এক বছর বয়সের মধ্যে অসুস্থ শিশুকে মা নিয়ে হাসপাতালে যাওয়ার পথে যদি শিশুটি মারা যায় বা হাসপাতালে পৌঁছনোর পরে তাকে মৃত ঘোষণা করলে কি সেই শিশুকে বাড়ি পৌঁছে দেওয়া হবে না?
আরও প্রশ্ন, মা দুই শিশুকে ভর্তি করার পরে একটি শিশু সুস্থ হলে তাকে অ্যাম্বুল্যান্সে নিখরচায় বাড়ি পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা হবে। দ্বিতীয় শিশু মারা গেলে তাকে অভিভাবক (মা ছাড়া অন্য কেউ)-সহ কি বাড়িতে পৌঁছে দেবে না ১০২ পরিষেবার গাড়ি? বা অসুস্থ শিশুকে (এক বছরের মধ্যে বয়স) নিয়ে অসুস্থ মা হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পরে যদি মা সুস্থ হয়ে যান, কিন্তু শিশু মারা যায়, তখন কী হবে?
শিশুর দেহ কোন গাড়িতে নিয়ে যাওয়া হবে, তা স্পষ্ট নয়। তা হলে এ ক্ষেত্রে কেন গাড়ির সুবিধা মিলবে না? উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালের সুপারের দফতরের একাধিক আধিকারিক এই নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। মেডিক্যালের অধ্যক্ষ ইন্দ্রজিৎ সাহা বলেন, ‘‘সুপার ১০২ পরিষেবার সঙ্গে কথা বলছেন। রাজ্যকে জানানো হয়েছে।’’ সুপার সঞ্জয় মল্লিকের দাবি, সরকারি নিয়মে সব স্পষ্ট করে বলা নেই। এখন ঘটনার পরে সে সব সামনে আসছে। তাঁরা বিষয়গুলি স্বাস্থ্য দফতরে জানাচ্ছেন।
এ দিন পরিবহণ আধিকারিকের বৈঠকের পরে ঠিক হয়েছে, ক্যাম্পাসের ১৩০টি বেসরকারি অ্যাম্বুল্যান্সের নাম, ফোন নম্বর নথিভুক্ত করে ‘স্টিকার’ দেওয়া হবে। এক যোগে ৩০টির বেশি গাড়ি হাসপাতাল চত্বরে থাকবে না। ‘প্রিপেড বুথ’ করা হবে। ভাড়ার তালিকা টাঙানো থাকবে সর্বত্র। থাকবে নজরদারিও। অধ্যক্ষ জানান, মৃতের দেহ কী ভাবে নেওয়া হচ্ছে তা জেনেই দেহ ছাড়ার ব্যবস্থা হবে। ওয়ার্ড থেকেই যাতে তা জানা হয়, সেই ব্যবস্থা রাখা হবে। সমস্যা হলে হাসপাতালের তরফে সরকারি ব্যবস্থায় তা মেটানো হবে।