পড়শি রাজ্য অসম থেকে ঢাক বাজানোর বায়না আসেনি। বায়না জোটেনি নিজেদের এলাকার পুজো কমিটির তরফেও। অগত্যা পেটের তাগিদে শিল্পীসত্তা বিসর্জন দিয়ে অন্য পেশায় ঝুঁকছেন কোটবিহারের বহু ঢাকি।
দুর্গাপুজোয় ঢাক বাজিয়েই মাস কয়েক নিশ্চিন্তে কেটে যেত কোচবিহারের দেওয়ানহাট এলাকার শ্রীকৃষ্ণ কলোনির ঢাকিদের। ফি বছর দুর্গাপুজোর আগে দেওয়ানহাটে এসে তাঁদের বায়না দিয়ে অসমে নিয়ে যেতেন সেখানকার পুজো উদ্যোক্তারা। একটি পুজোমণ্ডপে ঢাক বাজানোর জন্য আয় হত ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা। তা দিয়ে পরিবারের সকলের নতুন জামাকাপড় থেকে শুরু করে পুজোর পরের কয়েক মাসের সংসার খরচ চলত। তবে চলতি বছরে অসম থেকে বায়নার সংখ্যা হাতেগোনা। করোনার দু’টি টিকা না নেওয়ায় বেশির ভাগ উদ্যোক্তারাই মুখ ফিরিয়েছেন। ফলে পেশাবদল করে রাজমিস্ত্রি হেল্পার হিসাবে অথবা চাষের জমিতে মজুরির কাজ শুরু করেছেন দেওয়ানহাটের বহু ঢাকি।
সারা বছর ধরেই নানা পুজোয় ঢাক বাজিয়ে সংসার চালান শ্রীকৃষ্ণ কলোনিতে প্রায় ১৫টি পরিবারের ঢাকিরা। সঞ্জীব দাস নামে এক ঢাকি বলেন, ‘‘করোনার জেরে বছর দুয়েক ধরে এ পেশা বন্ধ হওয়ার জোগাড়। বছরভর পুজোয় ঢাক বাজিয়ে সংসার চলত। দুর্গাপুজোয় অসমে গিয়ে মোটা টাকা আয়ও হত। কিন্তু সে সবই বন্ধ। এখানকার প্রায় সব ঢাকিদের একই অবস্থা। এই মুহূর্তে রাজমিস্ত্রির হেল্পার হিসাবে কাজ করছি। এ রকম চলতে থাকলে হয়তো ঢাক বিক্রি করে সংসার চালাতে হবে।’’