মর্মান্তিক: রায়ডাক নদী থেকে শনিবার দুই দেহ উদ্ধারের ঘটনায় চাঞ্চল্য পশ্চিম চিকলিগুড়ি এলাকায়। নিজস্ব চিত্র
স্ত্রী ও এবং দুই কন্যাসন্তানকে খুন করে নদীতে ভাসিয়ে চলন্ত ট্রেনের নীচে আত্মঘাতী হলেন এক ব্যক্তি। শামুকতলা থানার উত্তর চিকলিগুড়ি গ্রামে এই ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, মৃত ব্যক্তির নাম পিঙ্কু পাল (৪৫)। ভ্যানরিকশায় ঘুরে ঘুরে মাটির হাঁড়ি-কলসি বিক্রি করতেন তিনি। শুক্রবার পিঙ্কুর দেহ উদ্ধার হয়। শনিবার দুপুরে পশ্চিম চিকলিগুড়ি এবং কোচবিহারের ধলপল ও তুফানগঞ্জ এলাকার রায়ডাক নদী থেকে তাঁর স্ত্রী জয়ন্তী পাল (৩৫), বড় মেয়ে পায়েল (১৩) ও ছোট মেয়ে কোয়েলের (৯) দেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
উত্তর চিকলিগুড়ি পিঙ্কুর প্রতিবেশীরা জানান, ছোট মেয়ে স্বাস্থ্য ভাল যাচ্ছিল না। তাই এক তান্ত্রিকের দ্বারস্থ হয়েছিলেন পিঙ্কু ও তাঁর স্ত্রী। অভিযোগ, তান্ত্রিকের পরামর্শেই প্রতিবেশীদের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করেছিলেন শামুকতলা থানার উত্তর চিকলিগুড়ি গ্রামের পেশায় কুমোর পিঙ্কু। স্থানীয় বাসিন্দারা জানালেন, মানসিক রোগীর মতো ব্যবহার করতেন পিঙ্কু। কথাও বলতেন না। কেউ বাড়িতে গেলে তেড়ে আসতেন। তাই ওই পরিবারের কোনও খোঁজ রাখতেন না কেউই।
প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশ জানিয়েছেন, কোনও কারণে এক বছর ধরে মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন পিঙ্কু। বৃহস্পতি রাতে ভ্যানরিকশায় স্ত্রী এবং দুই মেয়েকে চাপিয়ে বাড়ি থেকে বেড়িয়ে যান পিঙ্কু। তার পর থেকে তাঁদের আর কোনও খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না। শুক্রবার দুপুরে রেললাইন থেকে পিঙ্কুর ছিন্নভিন্ন দেহ উদ্ধার করে রেল পুলিশ। এ দিন রায়ডাক নদীতে একটি দেহ ভাসতে পুলিশকে খবর দেয় স্থানীয় লোকজন। সকালে পুলিশ নৌকো নামিয়ে তল্লাশি চালিয়ে পিঙ্কুর স্ত্রী এবং বড়মেয়ের দেহ উদ্ধার করে। সন্ধেয় নদী থেকে ছোটমেয়ের দেহ উদ্ধার হয়েছে।
শামুকতলা থানার ওসি বিরাজ মুখোপাধ্যায় জানান, মানসিক অবসাদ থেকে খুন এবং আত্মহত্যার ঘটনা হতে পারে। আমরা তদন্ত শুরু করেছি। দেহগুলি ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়েছে। স্ত্রী এবং দুই সন্তানকে শ্বাসরোধ করে খুন করে দেহ নদীতে ভাসিয়ে নিজে রেলে সামনে ঝাঁপ দিয়ে আত্মঘাতী হয়েছে বলে পুলিশ প্রাথমিক তদন্তে জানিয়েছে।
আলিপুরদুয়ার-২ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি অনুপ দাস বলেন, ‘‘দেহগুলি সৎকারের ব্যবস্থা করা হবে।’’