পঞ্চায়েতে, পুরসভায় সাফল্য এলেও বড় টুর্নামেন্টে মালদহে ভরাডুবি ঘটেছে তৃণমূলের। ফাইল চিত্র।
লোকসভা ভোটের ফল ঘোষণার পরেই মালদহের তৃণমূলের পর্যবেক্ষক থেকে সরে গিয়েছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে জেরবার মালদহকে সামাল দিতে ফের সেই শুভেন্দুকেই দায়িত্ব দিলেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শহরের নেতাদের গ্রামে গিয়ে মাতব্বরি নিয়ে শুভেন্দু যে অসন্তুষ্ট, বৃহস্পতিবার কলকাতায় গিয়ে দলনেত্রীর কাছে সে কথা জানান তৃণমূল নেতৃত্বের একাংশ। তাঁদের দাবি, এর পরেই দলনেত্রী শহরের নেতাদের গ্রামে না গিয়ে শহরেই রাজনীতি করার নির্দেশ দেন। এ দিন কলকাতায় সাংসদ, মন্ত্রী, বিধায়কদের নিয়ে বৈঠক হলেও মৌসম নুরের খোঁজ নেন মমতা।
পঞ্চায়েতে, পুরসভায় সাফল্য এলেও বড় টুর্নামেন্টে মালদহে ভরাডুবি ঘটেছে তৃণমূলের। ২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে জেলার ১২টি আসনেই তৃণমূলের ভরাডুবি ঘটে। এ বারের লোকসভা নির্বাচনেও তৃণমূলের ঝুলিতে সেই শূন্য। এমনকি, কংগ্রেস থেকে মৌসমকে ভাঙিয়ে এনেও লোকসভা নির্বাচনে দু’টি আসনেই ভরাডুবি ঘটে তৃণমূলের। এই সময় মালদহের দলের পর্যবেক্ষক ছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। লোকসভা নির্বাচনে ভরাডুবি হতেই পর্যবেক্ষকের পদ থেকে সরে যান তিনি।
দলীয় সূত্রে জানা যায়, মালদহের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করে পর্যবেক্ষকের পদ থেকে সরে গিয়েছিলেন শুভেন্দু। তখন মালদহের পর্যবেক্ষক করা হয় রাজ্যের দুই মন্ত্রী সাধন পান্ডে এবং গোলাম রব্বানিকে। পর্যবেক্ষক হয়ে জেলায় এক বার এসেছেন সাধন। তবে রব্বানি জেলায় নিয়মিত আসছেন। তার পরেও দ্বন্দ্ব মেটেনি বলে দাবি তৃণমূলেরই একাংশের। এমনকি, তৃণমূল পরিচালিত মালদহের দুই পুরসভাতেই আসে অনাস্থা। পরিস্থিতি সামাল দিতে রাজ্য নেতৃত্বকে হস্তক্ষেপ করতে হয়।
যদিও মালদহে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব নতুন কিছু নয়। তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একাধিক বার নেতা-নেত্রীদের নাম করে এক সঙ্গে চলার বার্তা দিয়েছিলেন। তার পরেও সুরাহা হয়নি। এ দিন কলকাতায় দলের সাংসদ, মন্ত্রী এবং বিধায়কদের নিয়ে বৈঠক করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানেই শুভেন্দুকে ফের মালদহের দায়িত্ব দেন তিনি। যদিও দায়িত্ব নিতে আপত্তি জানিয়েছিলেন শুভেন্দু। জানা গিয়েছে, তিনি শহরের নেতাদের ভুমিকা নিয়ে দলনেত্রীর কাছে অসন্তোষ প্রকাশ করেন। শহরের নেতাদের গ্রামে গিয়ে মাতব্বরি নিয়েও অসন্তোষ দেখান তিনি। এর পরেও নেত্রী তাঁকেই মালদহ দেখার দায়িত্ব দেন। একই সঙ্গে বৈঠকে মৌসমকে নিয়ে খোঁজও নেন মমতা।
আর এখানেই জেলা নেতৃত্বের একাংশের সংশয় তৈরি হয়েছে। জেলায় এখন দু’জন পর্যবেক্ষক। প্রশ্ন উঠছে, শুভেন্দু কি তাঁদের মাথার উপরে থাকবেন, নাকি নিজেই ফের একা সামাল দেবেন জেলা। মৌসম বলেন, “দিদি যেমন নির্দেশ দেবেন, সে ভাবেই আমরা কাজ করব।”