নিজস্ব চিত্র।
তিনি এক সময়ে ছিলেন বামে। ২০১৯ লোকসভা ভোটের আগে দলের নীতি নিয়ে গুচ্ছ প্রশ্ন তুলে যোগ দিয়েছিলেন রাম শিবিরে। এ বার কি গেরুয়া বৃত্ত ছেড়ে তিনি রাজ্যের শাসক দলে? মালদহ উত্তরের বিজেপি সাংসদ খগেন মুর্মুকে নিয়ে এখন এই জল্পনাই মাত্রা ছাড়াচ্ছে। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী থেকে খগেন নিজে— পত্রপাঠ খারিজ করছেন এমন জল্পনার সত্যতা। যদিও বাতাসে অন্য গন্ধ পাচ্ছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একটি অংশ।
ব্যারাকপুরের সাংসদ অর্জুন সিংহের ফুল-বদলের পর এ বার কি খগেন? জল্পনায় জল ঢালতে মালদহের প্রভাবশালী আদিবাসী নেতা তুলে আনছেন তাঁর সিপিএম ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেওয়ার সময়ের ঘটনাবলী। দাবি করছেন, ১১ বছর আগে সিপিএম বিধায়ক থাকাকালীনও তাঁর কাছে তৃণমূলে যোগ দেওয়ার ‘অফার’ এসেছিল। এহ বাহ্য, উপরি হিসেবে দেওয়া হয়েছিল মন্ত্রিত্বের টোপও। ২০১৬-তেও একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হয়, জানাচ্ছেন খগেন। তাঁর দাবি, দু’বারই প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়েছিলেন। এ বারও তেমনই ব্যাপার। সাংসদ বলছেন, ‘‘আমি সিপিএম ছেড়েছিলাম নীতির জন্য। তখনও তৃণমূলে যাইনি। এখনও বিজেপিতেই থাকব। বিজপিকে দুর্বল করতেই তৃণমূল এই সব প্রচার করছে।’’
উত্তর ২৪ পরগনার নেতা তথা ব্যারাকপুরের সাংসদ অর্জুন সিংহও ক’দিন আগেই বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে ফিরেছেন। তিনিও শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত তৃণমূলে যোগ দিচ্ছেন তা বলেননি। খগেনও কি সেই পথেই হাঁটছেন? এই প্রশ্নের জবাবে খগেন বলেন, ‘‘অর্জুন সিংহের তৃণমূলে যাওয়ার সিদ্ধান্ত আত্মঘাতী। বিজেপির সংগঠন নিচুতলা পর্যন্ত। আর তৃণমূল পিসি-ভাইপোর দল। আমার সঙ্গে অর্জুনের তুলনা করবেন না।’’
এই প্রসঙ্গে মালদহ তৃণমূল অবশ্য মুখে কুলুপ এঁটেছে। সভাপতি আব্দুল রহিম বক্সী বলেন,‘‘এই রাজ্যে তৃণমূল তথা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কোনও বিকল্প নেই। আজ রাজ্য সরকারের উন্নয়নের কর্মকাণ্ডে বাংলার মানুষ বিজেপির পাশ থেকে সরে গেছে। খগেনবাবু পরিস্থিতি বুঝতে পেরেছেন। তাই তৃণমূলে প্রবেশের পথ মসৃণ করতে এমন মন্তব্য করছেন। আমাদের কেউ ওঁকে দলে নেওয়ার জন্য আগ্রহ দেখাননি।’’
প্রসঙ্গত, বেশ কিছুদিন নিষ্ক্রিয় থাকার পর শনিবার মালদহের সাহাপুরে শুভেন্দু অধিকারী, সুকান্ত মজুমদারদের উপস্থিতিতে খগেনকে সক্রিয় ভাবে সংগঠনে অংশ নিতে দেখা গিয়েছে। তাঁর দলবদলের জল্পনা নিয়ে শুভেন্দু নিজে দাবি করেছিলেন, ‘‘খগেন মুর্মু কোথাও যাচ্ছেন না। বিজেপিতেই আছেন।’’ কিন্তু জল্পনা থামছে না।
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ।