রতুয়ায় বাড়িতে গিয়ে পরিযায়ী শ্রমিকদের তথ্য সংগ্রহে মহকুমাশাসক (চাঁচল) কল্লোল রায় ও প্রশাসনের আধিকারিকেরা। —নিজস্ব চিত্র।
স্বামী ভিন্ রাজ্যে কাজে রয়েছেন। বাড়িতে দাওয়ায় বসে দেড় বছরের মেয়েকে খাওয়াচ্ছিলেন নারিজা খাতুন। ভরদুপুরে কয়েকজন বাড়িতে এসে স্বামী আমজাদের খোঁজ করতে শুরু করল। তাতে অজানা আশঙ্কায় বুক কেঁপে ওঠে নারিজার। ভয়ের কিছু নেই বলে, আশ্বস্ত করা হয় নারিজাকে। পরিযায়ী শ্রমিক কল্যাণ প্রকল্পে আমজাদের নাম নথিভুক্ত করতে এসেছেন, জানালেন তাঁরা। তাঁদের মধ্যে থাকা মহকুমাশাসক এর পর নিজের হাতে ফর্ম পূরণ করে তা সঙ্গে থাকা শ্রম দফতরের কর্মীদের হাতে তুলে দিলেন। নারিজা মালদহের রতুয়ার মাকাইয়া এলাকার বাসিন্দা। তিনি বললেন, ‘‘প্রথমে ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম। প্রশাসন বাডি়তে এসে সব করে দেওয়ায় আমি খুব খুশি।’’
আমজাদের মতো পরিযায়ী শ্রমিকের অধিকাংশ বাইরে আছেন। তাঁদের পরিবার শিবিরে এসে নাম নথিভুক্ত করাবে কি না তা নিয়ে প্রশাসনের সংশয় রয়েছে। তাই মহকুমার প্রতিটি ব্লকে বাড়ি গিয়ে পরিযায়ীদের নাম নথিভুক্তিকরণের উপরে জোর দিয়েছে প্রশাসন। এতে খুশি পরিযায়ী শ্রমিকদের পরিবারও।
মহকুমাশাসক (চাঁচল) কল্লোল রায় বলেন, ‘‘জেলাশাসকের নির্দেশে আমরা কাজ করছি। পরিযায়ী শ্রমিকদের মধ্যে যাতে কেউ বাদ না যান, তাই এই উদ্যোগ। পাশাপাশি, এই প্রকল্প নিয়ে সচেতনতার প্রচারও চালানো হচ্ছে।’’
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, সপ্তম দুয়ারে শিবিরে পরিযায়ী শ্রমিক কল্যাণ প্রকল্প চালু হয়েছে। তাতে পরিযায়ী শ্রমিকদের নাম নথিভুক্ত করা হবে। যেখানে শ্রমিকদের যাবতীয় তথ্য থাকবে। ভিন্ রাজ্যে তাঁরা কোথায় থাকেন, কী কাজ করেন, কার মাধ্যমে গিয়েছেন, থাকবে সে সব তথ্য। কিন্তু শ্রমিকদের অধিকাংশই বাইরে। পরিবারের লোকজন শিবিরে না এলে, প্রকল্প মুখ থুবড়ে পড়বে। তাই প্রশাসন বাড়ি গিয়ে ফর্ম পূরণ করে তা সঙ্গে সঙ্গে জমা করে নিচ্ছে।
দেবীপুরের দীপক মণ্ডল দিল্লির চাঁদনিচকে থাকেন। তাঁর বাবা নিবারণ বলেন, ‘‘প্রশাসনের আধিকারিকেরা বাড়িতে এসে ছেলের সম্পর্কে সব জেনে ফর্ম পূরণ করে নিয়ে গিয়েছেন।’’ বাজিতপুরের তারা মহালদারের বাবা বিষ্ণু বলেন, ‘‘ছেলে বাইরে কাজ করতে গিয়েছে। আমি অসুস্থ। প্রশাসন বাড়িতে না এলে শিবিরে যাওয়া আমার পক্ষে সম্ভবই হত না।’’