মায়ের কোলে শিশু। নিজস্ব চিত্র
অবশেষে শনিবার রাতে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল থেকে চুরি যাওয়া সদ্যোজাতকে উদ্ধার করল পুলিশ। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, উত্তর দিনাজপুরের চোপড়ার বলরামপুর গ্রাম থেকে শিশুটিকে উদ্ধার করা হয়। পাকড়াও করা হয়েছে শিশু চুরিতে অভিযুক্ত এক মহিলাকেও। রাতেই শিশুটিকে নিয়ে চোপড়া থেকে রওনা দেয় পুলিশ। উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে তাকে ‘সিক নিউবর্ন কেয়ার ইউনিট’ (এসএনসিইউ)-এ রাখার সিদ্ধান্ত হয়। দেওয়া হয় মায়ের কোলে। শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনারেটের এডিসিপি শুভেন্দ্র কুমার শুধু বলেন, ‘‘শিশুটিকে পাওয়া গিয়েছে।’’ তিনি জানান, আজ, রবিবার উদ্ধার-পর্বের বিষয়ে বিশদে জানানো হবে।
এর আগে, ক্লোজ়ড সার্কিট ক্যামেরার ‘ফুটেজ’ পেলেও শিশু চুরিতে অভিযুক্ত মহিলার মুখ তাতে স্পষ্ট নয় বলে পেশাদার শিল্পীকে দিয়ে তার ছবি আঁকানো হয়। এ দিন কলকাতা থেকে বিমানে উড়িয়ে আনা হয় ওই ‘পোর্ট্রেট’ শিল্পী অপূর্ব ঘোষকে। শিশুর মা রঞ্জিতা সিংহ এবং রঞ্জিতার মা আলফা রাজবংশী-সহ যাঁরা ওই মহিলাকে দেখেছেন, তাঁদের কথা শুনে হাসপাতালের ওয়ার্ডে বসেই ল্যাপটপে ছবি আঁকে শিল্পী। শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনার অখিলেশ চতুর্বেদী বলেন, ‘‘আমরা সমস্ত ভাবে চেষ্টা করেছি। যা-যা পদক্ষেপ করা যায়, সে সব দিক থেকেই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।’’
উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল এবং পুলিশের একটি সূত্রে জানা গিয়েছে, শুক্রবার যে ‘ফুটেজ’ মিলেছিল, সে সূত্রে ধরে লাগোয়া ‘সিক নিউ বর্ন কেয়ার ইউনিট’ -এর করিডরে যে সমস্ত সিসি ক্যামেরা ছিল সেগুলোর ‘ভিডিয়ো ফুটেজ’ দেখা হয়। তাতে জানা যায়, পিছনের অংশে যে গেট রয়েছে, সে দিক দিয়েই শিশু নিয়ে বেরিয়েছে ছাপা শাড়ি পরা ওই মহিলা। ওই গেটে কোনও নিরাপত্তা রক্ষী থাকেন না। ওই দিক দিয়ে সহজেই কাওয়াখালি বাজারে পৌঁছে যাওয়া যায়। ওই অংশে লোকজনের যাতায়াত কম। মহিলা বেরোনোর সময়ে তার সঙ্গে আরও এক মহিলা পিছু নেয়। এ দিন অভিযুক্ত মহিলার ছবি আঁকার পরে, সে মহিলাকে চিহ্নিত করতে তৎপর হয় পুলিশ। এ দিন উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে গিয়ে ঘটনার প্রতিবাদে সুপারের দফতরের সামনে বিক্ষোভ দেখায় সিপিএমের মহিলা সমিতি এবং যুব সংগঠন। তবে ইদের ছুটি থাকায় এ দিন সুপার ছিলেন না। দফতর কার্যত বন্ধ ছিল। ডেপুটি সুপার এবং সহকারি সুপার এক জন ছিলেন। ডেপুটি সুপারকেই স্মারকলিপি দেয় তারা।
ডেপুটি সুপার সুদীপ্ত মণ্ডল বলেন, ‘‘ক্যামেরার যে সমস্ত ফুটেজ মিলছে তা বার বার দেখা হয়েছে। ওই সময় কারা ভর্তি ছিলেন, যাঁদের ছুটি হয়েছে সে সব খুঁটিয়ে দেখা হয়েছে। তার মধ্যে ওই ঘটনা চিহ্নিত করার চেষ্টা হয়। পুলিশকে নিয়েই সে সব দেখা হয়।’’
‘সিক নিউবর্ন কেয়ার ইউনিট’ (এসএনসিইউ)-এ রাখার সিদ্ধান্ত হয় শিশুকে। দেওয়া হয় মায়ের কোলে।