দফতরে লিপিকা। নিজস্ব চিত্র
বিজেপি শিবির ছেড়ে সভাধিপতি লিপিকা রায় তৃণমূলে ফিরতেই দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা পরিষদ সরগরম।
সোমবার সকালে বালুরঘাটে জেলা পরিষদ দফতরে দেহরক্ষী নিয়ে তাঁর পুরনো অফিসে গিয়ে বসেন লিপিকা। জেলা পরিষদের এক আধিকারিক সভাধিপতির জন্য বরাদ্দ সরকারি মোবাইল ফোন তাঁর হাতে তুলে দেন। ওই ঘরে ভিড় জমান তৃণমূলের একাধিক কর্মাধ্যক্ষ, সদস্যরা। বেলা ১১টা নাগাদ জেলা পরিষদে যান জেলাশাসক নিখিল নির্মল। সভাধিপতির সঙ্গে তিনি বৈঠক করেন। পরে জেলাশাসক বলেন, ‘‘রাস্তা, সেতু তৈরির মতো থমকে থাকা প্রস্তাবিত একাধিক গ্রামোন্নয়ন প্রকল্পের কাজ শুরুর বিষয়ে সভাধিপতির সঙ্গে কথা হয়েছে।’’
তৃণমূল ছেড়ে সভাধিপতি লিপিকা বিজেপিতে যোগ দেওয়ায় প্রায় ৬ মাস ধরে জেলা পরিষদে জটিলতা দেখা দেয়। অভিযোগ, তার জেরে উন্নয়নের কাজও ব্যাহত হয়েছিল।
জেলা পরিষদ সূত্রে খবর, অনিয়মিত ভাবে জেলা পরিষদে আসতেন লিপিকা। শাসক শিবিরের সদস্য থেকে পরিষদের আধিকারিকেরা তাঁকে এড়িয়ে চলতেন বলে অভিযোগ। লিপিকা ফের তৃণমূলে ফিরে এ দিন জেলা পরিষদে পা রাখতেই কাটল সেই ‘গুমোট পরিবেশ’। জেলাশাসকের সঙ্গে বৈঠক করেই লিপিকা বালুরঘাট থেকে বুনিয়াদপুরে সিএএ-র বিরুদ্ধে তৃণমূলের বিক্ষোভ আন্দোলনে যোগ দিতে যান।
রবিবার বালুরঘাটে তৃণমূল জেলা সভাপতি অর্পিতা ঘোষের হাত থেকে ঘাসফুল পতাকা নিয়ে দলে ফেরার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে সভাধিপতির জন্য বরাদ্দ দেহরক্ষী ফিরে পান। বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পরে তাঁর নিরাপত্তা সরিয়ে নেওয়া হয়েছিল বলে অভিযোগ। এ দিকে, সভাধিপতি দলে ফেরায় জেলাপরিষদে সংখ্যালঘিষ্ঠ বিজেপির ৪ জন কর্মাধ্যক্ষের বিরুদ্ধে তৃণমূলের আনা অনাস্থা প্রক্রিয়া গুরুত্ব হারাল। তৃণমূলের দাবি, দল বদলে গেরুয়া শিবিরে যাওয়া পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ ইতিমধ্যে এনআরসি-র প্রতিবাদে বিজেপি থেকে ইস্তফা দিয়েছেন। বাকি তিন বিজেপি কর্মাধ্যক্ষও তৃণমূলে যোগ দিতে চলেছেন। দলের জেলা সভাপতি অর্পিতা ঘোষ জানান, ১৮ সদস্য-বিশিষ্ট জেলা পরিষদে সভাধিপতি-সহ ১৪ জন সদস্য তৃণমূলের দিকে থাকায় উন্নয়নের প্রকল্প রূপায়ণ থেকে জেলা পরিষদের অন্য সব কাজ চালাতে কোনও বাধা থাকল না। এ দিন অর্পিতা বলেন, ‘‘বাকি চার সদস্যও তৃণমূলে যোগ দেওয়ার ইচ্ছাপ্রকাশ করেছেন। তাঁদের সঙ্গে বৈঠকও করা হয়েছে। কয়েক দিনের মধ্যে তাঁরা আনুষ্ঠানক ভাবে তৃণমূলে ফিরবেন।’’