নাগরে পারাপার। নিজস্ব চিত্র
বৃষ্টি কমে যাওয়ায় স্বস্তিতে উত্তর দিনাজপুর জেলা প্রশাসন। কিন্তু বন্যার আগাম মোকাবিলায় জরুরি বৈঠক করলেন জেলাশাসক অরবিন্দকুমার মিনা। মঙ্গলবার তার আগে জলমগ্ন এলাকাগুলো পরিদর্শনও করেন তিনি। বুধবারই তিনি বন্যা মোকাবিলায় প্রস্তুতি বৈঠক করেছেন। সেখানেই জেলাশাসক জেলার প্রতিটি সরকারি দফতরের আধিকারিক এবং কর্মীদের ছুটি আপাতত বাতিল করেন। বৃহস্পতিবার সেই নির্দেশ জেলার প্রতিটি দফতরে পাঠানো হয়।
আচমকা বন্যা পরিস্থিতির মোকাবিলার সতর্ক নজর রাখছে প্রশাসন। বুধবার রায়গঞ্জের কর্ণজোড়ায় অনুষ্ঠিত বৈঠকে সমস্ত আধিকারিক-কর্মীর ছুটি বাতিল করে ব্লকগুলোর পরিস্থতির উপর সতর্ক নজর রাখার নির্দেশ দিয়েছেন মহকুমাশাসক। কন্ট্রোল রুম থেকে নজরদারি চালানোর পরামর্শ দেওয়া হয়। গত কয়েকদিন ধরে একটানা প্রবল বর্ষণের জেরে জেলার ডালখোলা,করণদিঘি, গোয়ালপোখর-১ ও ২ ব্লকের বিস্তীর্ণ এলাকা জলমগ্ন হয়ে পড়ে। বিহারের মহানন্দা নদীর বাঁধ ভেঙে জল ঢুকে পরে ডালখোলার বেশকিছু ওয়ার্ড ও চাকুলিয়ার সূর্যপুর এবং কানকি গ্রাম পঞ্চায়েত বেশকিছু গ্রামে। নাগরের জল উপচে করণদিঘি ব্লকের বেশকিছু গ্রাম প্লাবিত হয়। বন্ধ রাখা হয় নাগরের ধারের স্কুলগুলি।
জেলা প্রশাসন জানিয়েছে, টানা আটদিন বৃষ্টির পর বুধবার থেকে নতুন করে বৃষ্টি হয়নি। জেলার নদীগুলোতে জলের পরিমাণও অনেক কমেছে। ফলে,পরিস্থির উন্নতি হতে শুরু করেছে। দুর্যোগ মোকাবিলা দফতরের জেলার এক আধিকারিক বলেন, ‘‘ধীরে ধীরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হচ্ছে। জলমগ্ন এলাকাগুলোতে জল নামছে। ফলে স্বস্তিতে বাসিন্দারা। অনেকে ত্রাণ শিবির থেকে ঘরে যেতে শুরু করেছেন। ঝড়-বৃষ্টিতে বেশ কিছু এলাকায় ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। তবে উদ্বেগের কিছু নেই। পরিস্থিতে নজর রাখা হয়েছে।’’ ওই আধিকারিক আরও বলেন, ‘‘ক্ষতিগ্রস্ত ব্লকে ত্রাণ-সামগ্রী পাঠানো হয়েছে। ব্লক থেকে বিস্তারিত রিপোর্ট এলে তা খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হবে।’’ জেলা প্রশাসনের কর্তাদের একাংশ মনে করছেন, নেপাল জল ছেড়ে দিলে এখানে নদী তীরবর্তী এলাকায় পরিস্থিতির অবনতির আশঙ্কা রয়েছে।
জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর, ডালখোলা পুরসভা এবং তিনটি ব্লক মিলে এখনও পর্যন্ত ১১০০টি বাড়ি সম্পূর্ণ এবং দু’হাজার বাড়ি বাড়ি আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। জেলা প্রশাসন জানিয়েছে, ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ব্লকগুলোর কাছ থেকে রিপোর্ট চেয়ে পাঠানো হয়েছে।