Kunki elephant

সঙ্গিনীর খোঁজে চঞ্চল ‘বাধ্য’ দুই কুনকি

সপ্তাহ দুয়েক আগে বিশ্বকর্মা পুজোর দিনই প্রাণী চিকিৎসককে শুঁড় দিয়ে ধাক্কা মেরে বিষম কাণ্ড ঘটিয়েছিল গরুমারার ধূপঝোড়ার পিলখানায় থাকা কিরণরাজ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ০৮:০৪
Share:

সঙ্গিনীর খোঁজে কুনকি। —ফাইল চিত্র।

Advertisement

শরতের নীল আকাশের দিকে শুঁড় উঁচু করে সঙ্গিনী খুঁজছে গরুমারার দুই কুনকি হাতি। ওদের পায়ে বেড়ি, গায়ে জড়ানো শিকল। পিলখানার অন্যান্য হাতিগুলিকেও ওদের থেকে দূরে সরিয়ে রাখা হয়েছে। ‘মস্তি’ এসেছে জলপাইগুড়ি বন্যপ্রাণী বিভাগের দুই কুনকি হাতির। আপাতত সরকারি কাজ থেকে ওদের ছুটি দেওয়া হয়েছে। রাখা হয়েছে কড়া নজরদারিতে। কারণ, সঙ্গিনীর খোঁজে শিকল, মোটা দড়ির সব বাঁধন ছিঁড়ে পিলখানা থেকে কুনকিদের পালিয়ে যাওয়ার একাধিক উদাহরণ রয়েছে এই গরুমারাতেই। সে কারণে আপাতত বাঁধন শক্ত হয়েছে কিরণরাজ এবং অরণ্যের।

সপ্তাহ দুয়েক আগে বিশ্বকর্মা পুজোর দিনই প্রাণী চিকিৎসককে শুঁড় দিয়ে ধাক্কা মেরে বিষম কাণ্ড ঘটিয়েছিল গরুমারার ধূপঝোড়ার পিলখানায় থাকা কিরণরাজ। বন দফতরের অতিপ্রিয় কিরণরাজ ‘ডিউটি’তে সকলের সেরা বলে দাবি করা হয়। স্বভাবও শান্তশিষ্ট। হঠাৎ বিশ্বকর্মা পুজোর দিন কেন তার মেজাজ বিগড়ে গেল তা নিয়ে নানা তর্ক হয়েছিল। তবে মাহুত এবং হাতিদের খাবারের দায়িত্বে থাকা পাতাওয়ালারা আন্দাজ করেছিলেন কিরণরাজের ‘মস্তি’ হয়েছে। পুরুষ হাতিদের সঙ্গিনীর সঙ্গে মিলনের ইচ্ছে হলে ‘মস্তি’ আসে। মাহুতেরা বলেন, সে সময়ে হাতির শরীরের নাকি প্রবল জোর আসে। মুখ দিয়ে লালা ঝরতে থাকে। মাথা ঘেমে যায়। গায়ে এত শক্তি আসে যে লোহার শিকলও ছিঁড়ে ফেলতে পারে যে কোনও সময়ে। জলপাইগুড়ি বন্যপ্রাণী বিভাগের বিভাগীয় বনাধিকারিক দ্বিজপ্রতীম সেন বলেন, “দুটি কুনকি হাতির যত্ন নেওয়া হচ্ছে, নজরদারিতে আছে। বন্যপ্রাণীদের দেখাশোনা করার যে বিধিনিষেধ রয়েছে তা মেনেই ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।”

Advertisement

এর আগে গরুমারার পিলখানা থেকে একাধিক কুনকি হাতি ‘মস্তির’ সময়ে শিকল ছিঁড়ে পালিয়ে গিয়েছিল। জলপাইগুড়ির বন্যপ্রাণী বিভাগের বন পাহারার কাজে আর একটি দক্ষ কুনকি হাতি অরণ্য। সেটি আছে কালীপুর লাগোয়া মেদলা নজরমিনারের কাছে পিলখানায়। অরণ্যেরও ‘মস্তি’ এসেছে। সেটিকেও কাজ থেকে ছুটি দিয়ে বেঁধে রাখা হয়েছে। দুটি হাতিই বন কর্মীদের কাছে ‘বাধ্য’ হলেও সঙ্গিনী খোঁজার তাড়নায় যখন-তখন যা ইচ্ছে ঘটিয়ে ফেলতে পারে আশঙ্কা করে বেড়ি, শিকলে আটকে রাখা হয়েছে। বন দফতরের কাছে মেয়ে কুনকি হাতি থাকলেও ‘মস্তির’ সময়ে পুরুষ এবং মহিলা হাতিদের পছন্দমতো সঙ্গী বেছে নিতে দেওয়া হয় না। এক প্রাক্তন বনাধিকারিকের কথায়, “মস্তির সময়ে হাতিকে ছেড়ে দিলে সেটি যে কোথায় চলে যাবে কেউ জানে না। একবার শিকলের বাধ আলগা করলে সব কিছু তছনছ করে দেবে, তখন তাকে রোখে কার সাধ্য। সে কারণে মস্তির সময়ে বেঁধেই রাখতে হয়।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement