অপ্রিতীকর ঘটনা এড়াতে, উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মূল গেটের সামনে মোতায়েন পুলিশ। ছবি: স্বরূপ সরকার।
গত বছরের ঘটনা। এখনও দগদগে হয়ে আছে অনেকের মনে। শিলিগুড়ির মাটিগাড়ায় এক স্কুল-ফেরত ছাত্রী উধাও হয়ে যায়। পরে জানা যায়, স্কুল থেকে ফেরার পথে মেয়েটিকে টেনে নিয়ে গিয়ে নির্জন জায়গায় ধর্ষণ করে, পরে খুন করা হয়। ওই ঘটনায় শিউরে উঠেছিল গোটা শহর। অভিযুক্তকে গ্রেফতারও করে পুলিশ। ঘটনার জেরে শহরের মেয়েদের নিরাপত্তায় নিয়ে শোরগোল পড়েছিল।
কলকাতায় আরজি কর হাসপাতালে মহিলা চিকিৎসককে খুনের ঘটনার প্রেক্ষিতে ফের নতুন করে এ শহরেও মেয়েদের নিরাপত্তা নিয়ে চিন্তা বেড়েছে। শহরে নজরদারি বাড়ানোর দাবি উঠেছে বিভিন্ন মহলে। রাস্তাতেও পুলিশি নজরদারি আরও বাড়ানোর দাবি মহিলাদের। কারণ, অনেকেরই অভিযোগ, শহরের বেশ কিছু এলাকায় সন্ধ্যার পর ফাঁকা রাস্তায় বেরোলেই ছিনতাইকারী বা অচেনা যুবকদের ভয়ে তটস্থ থাকতে হয় মহিলাদের। মাঝেমধ্যেই ভিড় রাস্তা, শুনশান গলিতে চলতে গিয়ে বাইকে আসা ছিনতাইয়ের মুখে পড়তে হয়। কয়েকমাসে এমন ঘটনার একাধিক খবর পুলিশের কাছেও পৌঁছেছে।
শহরের বাসিন্দা অনেকেই জানাচ্ছেন, পুজো আসছে। ভিড়ের সুযোগে বাজারে যৌন হেনস্থা, ব্যাগ কেটে টাকা-পয়সার কেপমারি বা ফাঁকা রাস্তায় উত্ত্যক্ত করার ঘটনাও ঘটে। সব জায়গায় পুলিশ থাকে না। তাই সমস্যায় পড়েন মেয়েরা। বহু বাণিজ্যিক ভবন, নার্সিংহোম, হোটেল-রেস্তরাঁ, শপিং মল থেকে রাতে বাড়ি ফেরেন মহিলারা। দুই মাইল, সেবক রোড, বর্ধমান রোড, বাইপাস, শালুগাড়়া, জংশন বা মাল্লাগুড়ির মতো এলাকায় সতর্ক থাকতে হয় মহিলাদের। যদিও পুলিশ কমিশনার সি সুধাকর বলেন, “নারী নিরাপত্তায় নজরদারি রয়েছে। উইনার্স বাহিনী টহল দিচ্ছে। প্রতিটি থানাও সমস্ত এলাকায় নজর রাখছে।”
শিলিগুড়িতে নারী নিরাপত্তায় পুলিশের তরফে কয়েক বছর আগে ‘উইনার্স বাহিনী’ গঠন করা হয়। শহরের নানা এলাকায় স্কুটার নিয়ে টহলদারি চালিয়ে থাকে এই বাহিনী। পুলিশ কর্তাদের দাবি, ‘উইনার্স বাহিনী’ বিভিন্ন সময়ে চোর, ইভটিজ়ারদেরও ধরেছে। যদিও রাতে শহরের বিভিন্ন ভেতরের রাস্তাগুলিতে পুলিশি টহলদারি থাকে না বলে বিভিন্ন সময়ে অভিযোগ উঠেছে।
দেবীডাঙার বাসিন্দা পেশায় নার্স কাজল রায় বলেন, “মাঝেমধ্যেই নার্সিংহোম থেকে ফিরতে অনেক রাত হয়ে যায়। কিছু এলাকায় পথবাতি নেই। অনেক সময় রাস্তাতেই মদের আসর চোখে পড়ে। এই ধরনের ঘটনাগুলি পুলিশের দেখা উচিত।’’ ওঁর কথায়, ‘‘এ শহর এখনও জোর গলায় বলে না, তোমরা নিরাপদ। তাই
ভয় তো করেই।”