ওমর ফারুক
একেই পঞ্চায়েত সদস্য। তার উপর কমিশনে শ্রমিক সরবরাহের কাজ করেন। ফলে ছেলেকে অপহরণ করে মোটা অঙ্কের টাকা আদায় করার আশা ছিল। ৫০ লক্ষ টাকা মুক্তিপণ দিতে না পারাতেই হাফিজুল ইসলাম নামে তৃণমূলের ওই পঞ্চায়েত সদস্যর ১০ বছরের ছেলে ওমর ফারুককে রবিবার রাতে অপহরণকারীরা খুন করে বলে অভিযোগ। পুলিশ দাবি করেছে, ধৃত দুই অপহরণকারী প্রাথমিক ভাবে জেরায় সে কথা স্বীকার করেছে। পুলিশ আরও জানিয়েছে, ধৃত রশিদুল ইসলাম ওই পঞ্চায়েত সদস্যের নিকটাত্মীয়। পাশের বাড়িতেই সে থাকে। আর রমজান শেখের বাড়ি পাশের গ্রাম সাটাঙ্গা পাড়ায়। সে রশিদুলের বন্ধু। বুধবার দুপুরে পুলিশ তাদের গ্রেফতার করার পরে রমজান নিজেই পুলিশকে চকপ্রতাপপুর সংলগ্ন নিমাজোল গ্রামের তুঁতের জঙ্গলে নিয়ে যায়, যেখানে ওই বালকের দেহ ফেলে রাখা হয়েছিল।
তবে, স্থানীয়দের একাংশের মতে, পুরনো পারিবারিক শত্রুতার জেরেও এই খুন হয়ে থাকতে পারে। পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়া অবশ্য বলেন, ‘‘জেরায় প্রাথমিক ভাবে জানতে পারা গিয়েছে টাকার দাবিতেই এই ঘটনা।’’
এ দিন দুপুরে ছেলের খুনের কথা জানতে পেরে কান্নায় ভেঙে পড়েন মোথাবাড়ি পঞ্চায়েতের ওই তৃণমূল সদস্য হাফিজুল ইসলাম। আমলিতলা গ্রাম তো বটেই, আশপাশের গ্রাম থেকেও প্রচুর মানুষ সেখানে ভিড় করেন। পুলিশ কেন অপহরণকারীদের সময়ের মধ্যে গ্রেফতার করতে পারল না এবং ওই বালককে অক্ষত অবস্থায় উদ্ধার করতে পারল না, তা নিয়ে ক্ষোভ ছড়িয়েছে। হাফিজুল বলেন, ‘‘আমার সঙ্গে কারও রাজনৈতিক বিবাদ ছিল না। শ্রমিক সরবরাহের কাজে টাকা-পয়সা বকেয়া নেই। তার পরেও কেন এমন হল? পুলিশকে সব রকম সহযোগিতা করেছি। কিন্তু পুলিশ তিন দিন পরেও ছেলেকে জীবিত উদ্ধার করতে পারল না। অভিযুক্তদের ফাঁসি চাই।’’
এ দিকে, দেহ মালদহ মেডিক্যালের মর্গে আনা হলে ভিড় করেন ব্লকের তৃণমূল নেতৃত্ব। মোথাবাড়ির বিধায়ক সাবিনা ইয়াসমিন, কালিয়াচক ২ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি টিঙ্কুর রহমান বিশ্বাস, জেলা পরিষদের প্রাক্তন দুই সদস্য আসাদুল হক ও দ্বিজেন মণ্ডল সহ অনেকেই ছিলেন। সাবিনা বলেন, ‘‘খুবই মর্মান্তিক ঘটনা। মোথাবাড়িতে এর আগে এ ভাবে নিষ্পাপ বালককে অপহরণ করে খুন হয়নি।’’
এ দিকে, সন্ধ্যায় দেহ গ্রামে নিয়ে গেলে উত্তেজনা চরমে ওঠে। উত্তেজিত বাসিন্দাদের একাংশ এক অভিযুক্তর বাড়িতে ভাঙচুর চালায়। পুলিশ অবশ্য পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।