দুই মন্ত্রী: জন বার্লা ও নিশীথ প্রামাণিক। শিলিগুড়িতে। নিজস্ব চিত্র।
উত্তরবঙ্গকে আলাদা রাজ্য বা কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল করার দাবির প্রসঙ্গটি এ বার এড়িয়ে গেলেন কেন্দ্রীয় সংখ্যালঘু প্রতিমন্ত্রী জন বার্লা। বিধানসভা ভোটে রাজ্যে বিজেপির আশানুরূপ ফল না হওয়ার পরে তিনি বিষয়টি সামনে আনেন। দাবি করেন, এটা মানুষের আওয়াজ। প্রতিমন্ত্রী হওয়ার পরে এ দিনই প্রথমবার শিলিগুড়িতে এলেন তিনি। সেখানে আলাদা রাজ্যের প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হলে বার্লা বলেন, ‘‘জনতার আওয়াজ যার কাছে যাওয়ার, চলে গিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী আগামী দিনে জনতার জন্য কাজ করার যে দায়িত্ব দিয়েছেন, তাই করব।’’
জন বার্লার দাবি, রাজ্যের সঙ্গে মিলে রাজ্যের বিকাশ করতে চায় কেন্দ্র। কিন্তু রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী সর্বদাই কেন্দ্রের সঙ্গে লড়াই করছেন। তাতে বঞ্চিত হচ্ছে উত্তরও। রাজ্যে বিকাশের নামে সন্ত্রাস, অত্যাচার হচ্ছে বলেও দাবি করেন তিনি। আগামী পঞ্চায়েত, পুরভোটের আগে ভয় পেয়েই শাসকদল সে সব করছে বলে তাঁর অভিযোগ। এ দিন সকালে হাসমিচকে বিজেপি বিধায়ক, নেতা-কর্মীরা মিছিল করতে গেলে পুলিশ তাঁদের গ্রেফতার করেছে। সেই প্রসঙ্গ তুলে বার্লা বলেন, ‘‘এ ভাবে জনতাকে রোখা যাবে না।’’
একই অভিযোগ করেছেন কেন্দ্রের স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী নিশীথ প্রামাণিকও। এবং এ দিন তাঁর মুখেও উত্তরবঙ্গকে আলাদা রাজ্য করার দাবি শোনা যায়নি। বরং রাজ্যের বিরুদ্ধে তোপ দেগে তিনি বলেন, ‘‘তৃণমূল চায়নি আদিবাসী, মতুয়া, রাজবংশীদের কেউ মন্ত্রী হোক। সে জন্য আজও বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিরোধিতা করছে তারা।’’ তিনি দাবি করেন, ‘‘তৃণমূল রাজনৈতিকভাবে লড়াই করতে না পেরে সন্ত্রাস করছে। তারা ভয় পেয়েছে।’’ এ দিন নারায়ণী স্বেচ্ছাসেবকরা উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন এলাকা থেকে তাঁকে সংবর্ধনা দিতে বাগডোগরা বিমানবন্দরে যাচ্ছিলেন। সেই সময়ে তাঁদের বাধা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে পুলিশের বিরুদ্ধে। অনেককে গ্রেফতারও করা হয়েছে। নিশীথ বাগডোগরা থানায় গিয়ে তাঁদের ছাড়ান।
তৃণমূলের দাবি, বাংলাকে ভাগ করার চেষ্টা করছিলেন বিজেপি নেতারা। এখন তাঁরা বুঝে গিয়েছেন, উত্তরবঙ্গের মানুষ বঙ্গভঙ্গ চান না। তাই মুখে কুলুপ এঁটেছেন। তৃণমূলের দার্জিলিং জেলা সভানেত্রী পাপিয়া ঘোষ বলেন, ‘‘এই বিভেদকামীদের ছুড়ে ফেলে দেবে মানুষ। ওঁরা ফের উত্তরবঙ্গে গণ্ডগোল বাঁধানোর চেষ্টা করলে মানুষ মানবে না।’’
কেন্দ্রের এই দুই প্রতিমন্ত্রীকে নিয়ে উত্তরবঙ্গে আশীর্বাদ যাত্রার আয়োজন করেছেন বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব। এ দিনের পরিস্থিতি দেখে এই কর্মসূচি কী ভাবে সফল হবে, তা নিয়ে নেতাদের মধ্যেই প্রশ্ন উঠছে।