জেলাশাসক কার্যালয়। ছবি: সংগৃহীত।
বরাদ্দ খরচ যাঁরা করতে পারেনি তাঁদের বছরের প্রথম দিনে অফিসে ডেকে পাঠিয়ে ‘কাজ’ বোঝাল জলপাইগুড়ি জেলা প্রশাসন। বুধবার জলপাইগুড়ি জেলার ২৭টি গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান-সহ আধিকারিকদের জেলাশাসকের দফতরে বৈঠকে ডেকে পাঠিয়েছিল প্রশাসন। দুপুর ১২টার সময় বৈঠক ডাকা হয়েছিল। বৈঠক শেষ হল বিকেল পৌনে ৩টে নাগাদ। বৈঠক থেকে বেরিয়ে এক আধিকারিক বলেন, “১২টা থেকে বসিয়ে রেখে দেড়টা নাগাদ বৈঠক শুরু হল। শুধু কাজ করতে বলা হল। নতুন কোনও নির্দেশও নেই।খামোকা ছুটির দিনটা মাটি হল! বছরের প্রথম দিনে কত পিকনিকের আয়োজন ছিল। পরিবার নিয়ে বেরোনোর পরিকল্পনা ছিল। এখন ৩টে বাজতে চলল। ছুটিরদিনটাই মাটি।”
জানা গিয়েছে, এই ২৭টি গ্রাম পঞ্চায়েত পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের বরাদ্দ খরচই করতে পারেনি। প্রশাসন সূত্রের দাবি, কমিশনের বরাদ্দ অর্থ গত ডিসেম্বরের মধ্যে খরচ করার প্রক্রিয়া শুরু করতেই হবে বলে কড়া বার্তা আগেই দেওয়া হয়েছিল। গত ২৬ ডিসেম্বর জেলায় বৈঠক ডেকে সব গ্রাম পঞ্চায়েতকে বলা হয়েছিল, ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে টেন্ডার প্রক্রিয়া শুরু করতে হবে। সেই বৈঠকে অতিরিক্ত জেলাশাসক সাফ জানিয়েছিলেন, যে গ্রাম পঞ্চায়েতগুলি কাজ ফেলে রাখবে তাদের ১ জানুয়ারি ছুটির দিনও কাজ করতে হবে। সেই বার্তাই করে দেখাল জেলা প্রশাসন। গত ৩১ ডিসেম্বর জলপাইগুড়ি জেলা পরিষদের অতিরিক্ত জেলাশাসক রৌণক আগরওয়াল একটি নির্দেশিকা জারি করে ২৭টি গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান-সহ আধিকারিকদের জেলাশাসকের অফিসে বৈঠকে ডেকে পাঠান। গড়ালবাড়ি, মণ্ডলঘাট, খারিজা বেরুবাড়ি, পাতটাকা থেকে বিন্নাগুড়ি, ডামডিম, মেটেলিহাটের মতো ২৭টি গ্রাম পঞ্চায়েতকে বৈঠকে ডাকা হয়। একটি গ্রাম পঞ্চায়েতের আধিকারিকের কথায়, “৩১ ডিসেম্বর সন্ধেয় জানতে পারি, নতুন বছরের প্রথম দিন বৈঠক। ছুটির সব পরিকল্পনা বাতিল করতে বাধ্য হই।”
বুধবারের বৈঠকে জেলার গ্রামোন্নয়ন আধিকারিক জর্জে লেপচা ছিলেন। জেলাশাসক বা অতিরিক্ত জেলাশাসকেরা কেউ ছিলেন না। জেলার এক শীর্ষ আধিকারিকের কথায়, “কর্মসংস্কৃতি্র একটি বার্তা দেওয়া হল। কেন কাজ ফেলে রাখলেন এতদিন, বলার পরেও কাজ না করলে ছুটির দিনেই কাজকরতে হবে।”
সেই সঙ্গে জেলার পাঁচটি গ্রাম পঞ্চায়েতের সব নথি এবং কাজের হিসেব খতিয়ে দেখতে বিশেষ পরিদর্শনের নির্দেশ দিয়েছে প্রশাসন। এই গ্রাম পঞ্চায়েতগুলিতে মহকুমাশাসক এবং সেই স্তরের আধিকারিকেরা গিয়ে সব নথি পরীক্ষা করবেন।