ফাইল চিত্র।
কলকাতায় বিশ্ব বঙ্গ শিল্প সম্মেলনে প্রতিনিধি পাঠিয়েছে ভুটান। কিন্তু করোনার সময় থেকে ভুটান গেট বন্ধ থাকায় উত্তরবঙ্গের অন্যতম বাণিজ্য শহর জয়গাঁর অর্থনীতি কার্যত মুখ থুবড়ে পড়েছে। স্থানীয় ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, ভুটান সীমান্ত লাগোয়া ওই এলাকায় খুচরো বাজারে প্রায় নব্বই শতাংশ ব্যবসাই শেষ হয়ে গিয়েছে। বন্ধ হয়েছে প্রায় ষাট শতাংশ দোকান। পেটের তাগিদে প্রচুর ব্যবসায়ী চলে গিয়েছেন ভিন্ রাজ্যে। জয়গাঁর ভুটান সীমান্ত দিয়ে কমেছে রফতানিও।
শিলিগুড়ির পর জয়গাঁকেই সাধারণত উত্তরবঙ্গের দ্বিতীয় বাণিজ্য শহর বলা হয়। ব্যবসায়িক কারণেই এ রাজ্যের অনেক এলাকার পাশাপাশি দেশের নানা প্রান্তের মানুষের বাস এই শহরে। মূলত প্রতিবেশী রাজ্য ভুটানের ক্রেতাদের উপরেই জয়গাঁর খুচরো বাজার নির্ভরশীল। কিন্তু করোনায় দীর্ঘ সময় বন্ধ জয়গাঁর ভুটান গেট। এখন করোনার প্রকোপ কমলেও ভুটান গেট খোলেনি। তাই জয়গাঁর অর্থনীতি যত দিন যাচ্ছে ততই তা আরও তলানিতে যাচ্ছে বলে অভিযোগ।
জয়গাঁ মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক রামাশঙ্কর গুপ্ত বলেন, “করোনার সময় থেকে টানা ভুটান গেট বন্ধ থাকার জেরে জয়গাঁর ব্যবসা-বাণিজ্য কার্যত শেষ হয়ে গিয়েছে। গেট বন্ধ থাকার ফলে ভুটানের ক্রেতারা আসতে পারছেন না। ফলে জয়গাঁর নব্বই শতাংশ ব্যবসা-বাণিজ্যই কার্যত নেই। ষাট শতাংশ দোকানের ঝাপ বন্ধ হয়ে গিয়েছে। অনেক ব্যবসায়ী নিজ নিজ রাজ্যে চলে গিয়েছেন। যাদের পুঁজি রয়েছে, তাঁরা হয়তো সেখানে নতুন করে কিছু ব্যবসা শুরু করেছেন। বাকি অনেক ব্যবসায়ী পেশা বদল করতেও বাধ্য হয়েছেন।”
দুই বছরের মধ্যে জয়গাঁর এই পরিণতিতে চিন্তা বাড়ছে প্রশাসনিক মহলেও। সেই সঙ্গে জয়গাঁর এই পরিস্থিতিকে ঘিরে রাজনীতির রংও লেগেছে। জয়গাঁ উন্নয়ন পর্ষদ বা জেডিএ-র চেয়ারম্যান গঙ্গাপ্রসাদ শর্মা বলেন, “ভুটান গেট খুললে তবেই জয়গাঁর স্থানীয় অর্থনীতি আবার আগের মতো ফিরিয়ে আনা সম্ভব। এ জন্য আলিপুরদুয়ার জেলা প্রশাসন ভুটানের স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করে প্রয়োজনীয় চেষ্টা চালাচ্ছে। কিন্তু এটা আন্তর্জাতিক বিষয়। এ নিয়ে বিজেপির সাংসদ-মন্ত্রীদের উদ্যোগী হওয়া প্রয়োজন। আলিপুরদুয়ার থেকে নির্বাচিত সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তো নাকে সরষের তেল দিয়ে ঘুমচ্ছেন। ভুটান গেট খোলার ব্যাপারে কেন্দ্রের উপরে চাপ সৃষ্টির আর্জি জানিয়ে জেডিএ-র তরফে শীঘ্রই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যাকে চিঠি দেওয়া হবে।”
বিষয়টি নিয়ে ফোনে যোগাযোগ করা হলেও কথা বলেননি কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী জন বার্লা। বিজেপির রাজ্য সাধারণ সম্পাদক দীপক বর্মণ বলেন, “আমাদের কেন্দ্রীয় মন্ত্রী থেকে বিধায়করা সংশ্লিষ্ট সব মহলে দরবার করেছেন। কিন্তু এ নিয়ে রাজ্যের তৃণমূল সরকারের সদিচ্ছার অভাব রয়েছে। সেজন্যই বিষয়টি এগচ্ছে না।”
জেডিও-র কর্তারা জানিয়েছেন, গত দুই বছরে জয়গাঁ সীমান্ত দিয়ে ভুটানে রপ্তানি বাণিজ্যও অনেকটাই কমে গিয়েছে।
বিদ্যুতে মৃত্যু
মাথাভাঙা: মাথাভাঙা ২ নম্বর ব্লকের পূর্ব শিলডাঙা সংলগ্ন এলাকায় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে এক জনের মৃত্যু হয়েছে। মঙ্গলবার। স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, তাঁর নাম বিমল দত্ত (৫৩)। ওই দিন ঝড়ে তাঁর বাড়ির বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে যায়। সেটি সারাতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হন তিনি। হাসপাতালে নিয়ে গেলে মৃত বলে জানানো হয়।