সিবিআই তদন্তের দাবি তুলেছেন হাফিজুল। ফাইল চিত্র।
ছেলেকে অপহরণ করে খুনের ঘটনায় সিবিআই তদন্তের দাবি তুললেন মোথাবাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূল সদস্য হাফিজুল শেখ। ওই ঘটনায় রাজনৈতিক যোগ থাকতে পারে বলেও তাঁর আশঙ্কা।
হাফিজুলের অভিযোগ, দু’জনকে গ্রেফতার করা হলেও ওই ঘটনায় আরও কেউ জড়িত রয়েছে। তাই সিবিআই তদন্তের দাবি তুলেছেন তিনি। তাঁর কথায়, ‘‘সে জন্য যত দূর যেতে হয় আমি যাব।’’ অপহরণ করে খুনের মামলায় ধৃত দু’জনকে বৃহস্পতিবার মালদহ জেলা আদালতে তোলা হয়। বিচারক ধৃতদের সাত দিন পুলিশ হেফাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, গত রবিবার সন্ধ্যায় মোথাবাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূল সদস্য হাফিজুল শেখের ১০ বছরের ছেলে ওমর ফারুককে অপহরণ করা হয়। মুক্তিপণ বাবদ ৫০ লক্ষ টাকা দাবি করে অপহরণকারীরা। বুধবার দুপুরে বাড়ি থেকে তিন কিলোমিটার দূরে চকপ্রতাপপুর গ্রামের একটি জঙ্গল থেকে ওমরের মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। অপহরণ করে খুনের ঘটনায় ওই পঞ্চায়েত সদস্যরই আত্মীয় রশিদুল ইসলাম ও তার বন্ধু রমজান শেখকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার দুপুরে হাফিজুল বলেন, ‘‘রাজনীতির জন্যেই আমার ছেলের জীবন গেল। যারা এই ঘটনা ঘটিয়েছে তাদের ফাঁসি চাই।’’ তাঁর অভিযোগ, ওমরকে অপহরণ করার দিনসাতেক আগে রশিদুল ও রমজান ২০ হাজার টাকার দু’টি মোবাইল কিনেছে। তাদের এক জন মোটরবাইকও কেনে। নিহত নাবালকের বাবার প্রশ্ন, ‘‘কাজ না থাকা ওই দু’জন সে সব কেনার টাকা কোথায় পেল?’’
তাঁর অভিযোগ, গ্রাম পঞ্চায়েত পরিচালনা নিয়ে দলেরই পঞ্চায়েত সদস্যদের একাংশের সঙ্গে গোলমাল চলছিল। তিনি প্রধানের পক্ষে ছিলেন। বিরোধী গোষ্ঠী তাঁকে টানতে ‘টোপ’ দিয়েছিল। কিন্তু তিনি প্রধানের পক্ষেই ছিলেন। বদলা নিতেই তাঁর ছেলেকে অপহরণ করে খুন করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন হাফিজুল। মোথাবাড়ির বিধায়ক সাবিনা ইয়াসমিন বলেন, ‘‘ঘটনাটি খুবই মর্মান্তিক। পুলিশ তদন্ত করছে।’’
প্রাথমিক তদন্তে অনুমান, পুরনো কোনও পারিবারিক বিবাদ এবং ব্যক্তিগত শত্রুতার কারণেই অপহরণ করে ওই নাবালককে খুন করে থাকতে পারে অভিযুক্তেরা। যে দু’জন গ্রেফতার হয়েছে, তাঁদের ৫০ লক্ষ টাকা দরকার হল কেন, তা নিয়েও পুলিশ তদন্ত চালাচ্ছে।
জেলা পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়া বলেন, ‘‘ধৃতদের হেফাজতে নিয়ে জেরা করা হবে। ওই ঘটনার পিছনে অন্য কোনও কারণ আছে কিনা তা দেখা হচ্ছে।’’
বৃহস্পতিবার বিকেলে মোথাবাড়ির ওই তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্যর বাড়ি যান দক্ষিণ মালদহের সংসদ আবু হাসেম খান চৌধুরী (ডালু) এবং সুজাপুরের বিধায়ক ইশা খান চৌধুরী। ডালু বলেন, ‘‘খুনের প্রকৃত রহস্য উদঘাটনে সিআইডি তদন্ত চাই।’’