নেশার টাকা চেয়ে দাদুকে খুন, ধৃত নাতি

পায়েলির দাবি, মাধ্যমিক পাশ করে পলিটেকনিকে ভর্তি হয়েছিল তার ছেলে। কিন্তু প্রায় ছ’মাস হল নেশার চোটে পড়াশোনা ছেড়ে দেয়। মিথ্যে কথা বলে টাকাও নিত বলে দাবি মায়ের। 

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা 

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ৩০ নভেম্বর ২০১৯ ০৩:১৪
Share:

রহস্য: শোকার্ত পরিজন। নিজস্ব চিত্র।

নেশার টাকা জোগাড় করতে পরিকল্পনা করে দাদুকে খুনের অভিযোগে নাবালক নাতি এবং তার চার সঙ্গীকে গ্রেফতার করল পুলিশ। শুক্রবার সকালে শিলিগুড়ি থানার দেশবন্ধু পাড়ায় রামকৃষ্ণ সরণির ওই ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়ায় এলাকায়। পুলিশের প্রাধমিক অনুমান, বৃদ্ধকে শ্বাসরোধ করে খুন করা হয়েছে। অভিযোগের তির নাবালক নাতি এবং তার চার সঙ্গীর দিকে। তাদের মধ্যে এক জনের বয়েস ১৮ বছর। মাদক কেনার টাকা দিতে অস্বীকার করাতেই তাকে খুন করা হয়েছে বলে প্রাথমিক সন্দেহ করছেন পুলিশ কর্তারা।

Advertisement

পুলিশ এবং স্থানীয় সূত্রে খবর, ডাক বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত কর্মী ফাল্গুনী ঘোষ (৮০) একাই থাকতেন দেশবন্ধু পাড়ার বাড়ির দোতলায়। তাঁর ছোট মেয়ে পায়েলি ঘোষের শ্বশুরবাড়ি মহানন্দা পাড়ায়। পারিবারিক অশান্তির জন্য তিনি ছেলেকে নিয়ে মাঝে মধ্যে বৃদ্ধ বাবার সঙ্গে থাকতেন। পুলিশের দাবি, দাদুর কাছ থেকে টাকা চাইত নাতি। সেই টাকা নিয়ে দাদুর বাড়িতেই নেশার আসর বসতো বলেও দাবি। ফুলেশ্বরী মোড়ে একটি নেশার ঠেকেও সে যাতায়াত করত বলে অভিযোগ। পুলিশের বক্তব্য, নাতিই বন্ধুদের বলেছিল, দাদুর অনেক টাকা। তার পরেই খুনের পরিকল্পনা করা হয় ওই বৃদ্ধকে। গ্রেফতার পাঁচ জনের মধ্যে কার্তিক কর্মকার নামে এক যুবক রয়েছে। সে বৃহস্পতিবার রাতে আরও এক নাবালককে সঙ্গে নিয়ে উপরে যায়। নীচে পাহারায় ছিল আরও দুই অভিযুক্ত। তার পরেই টাকা না পেয়ে বৃদ্ধকে শ্বাসরোধ করকে মারা হয় বলে অভিযোগ।

বৃদ্ধের মেয়ে পায়েলির দাবি, তিনি বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ছেলেকে নিয়ে শ্বশুরবাড়ি ফিরে যান। এ দিন সকালে দেশবন্ধুপাড়ায় তার ছেলেই প্রথম দাদুর বাড়ি আসে। তখনই বিষয়টি সকলের নজরে আসে। ডাকা হয় ৩০ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর স্বপন দাসকে। তিনিই পুলিশে ফোন করেন। হাত পিছমোড়া করে বাঁধা অবস্থায় ফাল্গুনীবাবুর দেহ বিছানায় মুখ থুবড়ে পড়েছিল। পুরো ঘরের আসবাব, জিনিসপত্র তছনছ করে কিছু একটা খোঁজাও হয়েছিল বলে মনে করছে পুলিশ। ঘটনাস্থল থেকেই নাতিকে থানায় নিয়ে আসা হয় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য। পরে তার সঙ্গী আরও দু’জনকে ডাকা হয় থানায়।

Advertisement

পায়েলির দাবি, মাধ্যমিক পাশ করে পলিটেকনিকে ভর্তি হয়েছিল তার ছেলে। কিন্তু প্রায় ছ’মাস হল নেশার চোটে পড়াশোনা ছেড়ে দেয়। মিথ্যে কথা বলে টাকাও নিত বলে দাবি মায়ের।

পায়েলির কথায়, ‘‘পাড়ার লোক বা আত্মীয়েরা তো কেউ বাবাকে মারবে না। অনেক বারণ করা সত্ত্বেও ফুলেশ্বরী মোড়ের কাছে নেশার আড্ডায় যেত ছেলে। কাল আমি ছিলাম না। শত্রুতা করেই বাবাকে খুন করেছে ওর নেশার বন্ধুরা।’’ শিলিগুড়ি পুলিশের ডিসি ইন্দিরা মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ষড়যন্ত্র করে খুনের মামলা রুজু হয়েছে। পাঁচ জন গ্রেফতার হয়েছে। আগামী কাল তাদের আদালতে তোলা হবে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement