ফুলহীর নদী। — ফাইল চিত্র
লাগাতার বৃষ্টিতে আরও ফুঁসছে ফুলহার। নদীর উপচে পড়া জলে প্রতিদিনই প্লাবিত হচ্ছে নতুন নতুন এলাকা। এর ফলে মালদহের রতুয়া ও হরিশ্চন্দ্রপুরে বানভাসি এলাকার বাসিন্দাদের দুর্ভোগ বেড়েই চলেছে। পুজোর আনন্দের কথা ভুলে অনিশ্চিত ভবিষ্যতের চিন্তায় মুষড়ে পড়েছেন আটটি গ্রাম পঞ্চায়েতের লক্ষাধিক বাসিন্দা।
টানা কয়েকদিন ধরে জলবন্দি হয়ে থাকায় এলাকায় কাজকর্ম সব বন্ধ। ঘরের খাবারও প্রায় শেষ। তার উপর রতুয়ার বহু বাসিন্দা এখনও সরকারি ত্রাণসামগ্রী পাননি বলে অভিযোগ। হরিশ্চন্দ্রপুরের দু’টি গ্রাম পঞ্চায়েতের বানভাসি এলাকাগুলিতে এখনও ত্রাণ বিলিই শুরু হয়নি বলে জানিয়েছেন বাসিন্দারা। প্রশাসনের অবশ্য দাবি, বৃষ্টির জন্য ত্রাণ বিলিতে সমস্যা হচ্ছে। চাঁচলের মহকুমাশাসক সব্যসাচী রায় বলেন, ‘‘প্রতিদিনই দুর্গত এলাকাগুলিতে ত্রাণ বিলি করা হচ্ছে। তবে টানা বৃষ্টিতে কিছুটা সমস্যা হচ্ছে।’’
সেচ দফতর সূত্রের খবর, সোমবার ফুলহারের জলস্তর দাঁড়িয়েছে ২৭.৭৫ মিটারে। যা চরম বিপদসীমা থেকে ৩৩ সেন্টিমিটার বেশি। উত্তরবঙ্গের নদীগুলির জল নামছে। তবে স্থানীয় ভাবে বৃষ্টির জেরে ফুলহারের জল বাড়ছে বলে জানিয়েছেন সেচ দফতরের মহানন্দা এমব্যাঙ্কমেন্টের নির্বাহী বাস্তুকার বাদিরুদ্দিন শেখ।
ফুলহারের জলে আগেই প্লাবিত হয়েছে রতুয়ার মহানন্দটোলা ও বিলাইমারি গ্রাম পঞ্চায়েতের বিস্তীর্ণ এলাকা। পরে ফুলহারের সঙ্গে গঙ্গা মিশে সেই জলের তোড়ে কাহালায় বাঁধ ভেঙে যায়। বিপর্যস্ত হয় সংরক্ষিত এলাকা রতুয়া, বাহারাল, দেবীপুর, কাহালা গ্রাম পঞ্চায়েতের বহু এলাকা। টারপর টানা বৃষ্টিতে ফুলহারের জল উপচে রবিবার থেকে হরিশ্চন্দ্রপুরের ইসলামপুর ও দৌলতপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের ১৫টি এলাকায় নতুন করে বন্যায় ডুবেছে। রাস্তাঘাট ডুবে যাওয়ায় মূল ভূখণ্ড থেকে পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছেন তাঁরা। ওই এলাকায় যাতায়াতের জন্য সরকারি একটি নৌকা দেওয়া হয়েছে বলে প্রশাসন জানিয়েছে।
স্থানীয় ইসলামপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্য জুলি মণ্ডল বলেন, ‘‘এই এলাকায় দুর্গতদের কেউ এখনও ত্রাণ পাননি। প্রশাসনকে সমস্যার কথা জানিয়েছি।’’ উত্তর ভাকুরিয়া এলাকার রাজেন মণ্ডল, লতিকা পরিহাররা জানান, পুজোর মুখে আনন্দ ভুলেছেন তাঁরা। কীভাবে পরের দিনগুলো কাটবে তা ভেবেই দুশ্চিন্তায় ঘুম হচ্ছে না তাঁদের।