জালিয়াতির শিকার মোহন। নিজস্ব ছবি।
ব্যাঙ্কে টাকা তুলতে গিয়েছেন গ্রাহক। গিয়ে দেখলেন, তাঁর অ্যাকাউন্টে এক পয়সাও নেই! ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে পাওয়া হিসাব (স্টেটমেন্ট) দেখেই চক্ষু চড়কগাছ হল সেই গ্রাহকের। ভিন্ রাজ্যের অন্য একটি ব্যাঙ্ক থেকে চেকের মাধ্যমে কেউ তাঁর সব টাকা তুলে নিয়েছেন। অন্য দিকে, টাকা তুলতে যে দু’টি চেক ব্যবহার করা হয়েছে, সেই একই নম্বরের চেক গ্রাহকের বাড়িতেই রয়েছে।
অনলাইন লেনদেনে জালিয়াতির পর এ বার চেক জাল করে জালিয়াতির ঘটনা ঘটল শিলিগুড়িতে। শিলিগুড়ি পুরসভার ২৩ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা মোহন ঘোষ সম্প্রতি এই জালিয়াতির শিকার হয়েছেন। শিলিগুড়ির দেশবন্ধু পাড়ার একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কে পেশায় গাড়িচালক মোহনের একটি অ্যাকাউন্ট রয়েছে। সম্প্রতি সেই ব্যাঙ্কে টাকা তুলতে গিয়ে তিনি দেখেন, তাঁর জমানো ৯৭ টাকা হাজার অ্যাকাউন্ট থেকে উধাও। ব্যাঙ্ক স্টেটমেন্ট খতিয়ে দেখার পর জালিয়াতির বিষয়টি প্রকাশ্যে আসতেই শিলিগুড়ি থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন মোহন। তাঁর ভিত্তিতে তদন্ত শুরু হয়েছে। প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, বিহারের পটনা থেকে অন্য একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কে মোহনের চেক জমা করে টাকা তোলা হয়েছে। শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনার অখিলেশ চতুর্বেদী বলেন, ‘‘এ ধরনের প্রায়ই ঘটছে। পুলিশ তদন্ত করছে। খুব তাড়াতাড়ি এর নিষ্পত্তি হবে।’’
মোহন জানান, ব্যাঙ্ক থেকে টাকা গিয়েই বিষয়টি নজরে আসে। অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা কেটে নেওয়ার সময়েও তাঁর মোবাইলে কোনও বার্তা আসেনি। তাঁর কথায়, ‘‘ব্যাঙ্ক যখন জানতে পারে, চেক আমার বাড়িতেই রয়েছে, তখনই তারা নড়েচড়ে বসে। আমার বাড়িতে যে চেক রয়েছে, সেই চেক ব্যবহার করে কী ভাবে টাকা তোলা হল? আমি সাধারণ মানুষ। গাড়ি চালিয়ে সংসার টানতে হয়। আমার টাকা ফেরত চাই।’’
মোহনের যে ব্যাঙ্কে অ্যাকাউন্ট রয়েছে, সেই ব্যাঙ্কের আঞ্চলিক ম্যানেজার অসীম পাল এই ঘটনা প্রসঙ্গে জানান, চেকের মাধ্যমে যখন টাকা তোলা হয়, তখন সেই চেক বিভিন্ন ভাবে যাচাই করে নেওয়া জরুরি। এ ক্ষেত্রেও সেই চেক সঠিক ভাবে যাচাই করা হয়েছে কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন ম্যানেজার। তিনি বলেন, ‘‘যে ব্যাঙ্ক থেকে টাকা তোলা হয়েছে, তাদের থেকে আমরা কিছু তথ্য চেয়ে পাঠিয়েছি। আসলে গোটা দেশ জুড়েই এই ধরনের ঘটনা ঘটেছে।’’ অসীম আশ্বস্ত করেন, মোহনকে তাঁর চুরি যাওয়া টাকা ফেরত দেবে ব্যাঙ্ক।