চাকরি দেওয়ার নামে প্রতারণায় ধৃত উত্তরকন্যার নিরাপত্তারক্ষী। — নিজস্ব চিত্র।
চাকরি দেওয়ার নামে প্রতারণার অভিযোগে গ্রেফতার হলেন উত্তরবঙ্গের শাখা সচিবালয় উত্তরকন্যার এক নিরাপত্তারক্ষী। এই ঘটনায় জড়িত আরও এক নিরাপত্তাকর্মী পলাতক। এই ঘটনায় প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে পুলিশ প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে।
বিষ্ণুপদ গুপ্ত এবং মইনুল রহমান— দু’জনেই উত্তরকন্যা সংলগ্ন ফুলবাড়ি এলাকার বাসিন্দা। দু’জনেই উত্তরকন্যায় বেসরকারি সংস্থার অধীন নিরাপত্তারক্ষীর কাজ করেন। অভিযোগ, উত্তরকন্যায় কাজ করার সুযোগ নিয়ে ছেলেমেয়েদের চাকরি দেওয়ার নাম করে টাকা নিয়েছিলেন অভিযুক্তেরা। নির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্তে নামে উত্তরকন্যা ফাঁড়ির পুলিশ। বুধবার উত্তরকন্যা থেকে গ্রেফতার করা হয় বিষ্ণুপদ গুপ্ত নামে এক নিরাপত্তারক্ষীকে।
কয়েক বছর ধরে ওই দু’জন নিরাপত্তারক্ষী কাজ করছেন উত্তরকন্যায়। পুলিশ সূত্রে খবর, রাজ্য সরকারি সচিবালয়ের মতো গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় চাকরি করার সুবাদে বহিরাগত ছেলেমেয়েদের কাছ থেকে নানা কাজের প্রলোভন দেখিয়ে তাঁরা টাকা হাতিয়ে নিতেন বলে অভিযোগ। জানা গিয়েছে, জলপাইগুড়ির তিন যুবতীর কাছ থেকে মইনুল টাকা নেন শিলিগুড়িতে কোন একটি নার্সিংহোমে চাকরি করে দেওয়ার নাম করে। যদিও টাকা হাতে পেতেই যোগাযোগ বন্ধ করে দেন মইনুল। বুধবার ফোন করে তিন জনকে আর এক নিরাপত্তারক্ষী বিষ্ণুপদ গুপ্তের সঙ্গে দেখা করার কথা বলেন। তিন যুবতী সেখানে পৌঁছনোর পর নিরাপত্তারক্ষী বিষ্ণুপদ তাঁদের কাছে ফের টাকার দাবি করেন।
এতে যুবতীদের সন্দেহ হয় যে, তাঁরা প্রতারণার শিকার হয়েছেন। বিষয়টি উত্তরকন্যার আধিকারিকদের জানালে তাঁরা এনজেপি থানার পুলিশকে খবর দেন। পুলিশ পৌঁছে প্রাথমিক তদন্তের পর বিষ্ণুপদকে গ্রেফতার করে। তবে অপর অভিযুক্ত মইনুল এই ঘটনার পর থেকেই গা ঢাকা দেন। তাঁর খোঁজ শুরু করেছে এনজেপি থানার পুলিশ।
প্রতারিত রীতু পারভিন বলেন, ‘‘আমাদের বেসরকারি হাসপাতালে চাকরি করে দেবেন বলে টাকা চেয়েছিলেন। এক জন টাকা নেন। তার পর উত্তরকন্যায় আর এক জনের কাছে পাঠানো হয়। তিনিও টাকা দাবি করেন। কিন্তু কোথায় ইন্টারভিউ হবে তা জানাতে পারেননি। এতেই আমাদের সন্দেহ হয়। তখন আমরা পুলিশকে সব জানাই।’’
এ বিষয়ে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী উদয়ন গুহ বলেন, ‘‘পুলিশ ঘটনাটির তদন্ত করছে। আইন আইনের মতো ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। তবে ওঁদের যাতে কঠোর শাস্তি হয় তা নিয়ে অবশ্যই প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলব। আগামিদিনে যাতে এই ধরনের ঘটনা না ঘটে, তার জন্য কঠোর নজরদারি চলবে।’’