জলদাপাড়ার কুনকি হাতি সুন্দর। ফাইল চিত্র।
প্রায় ছয় মাস ধরে ‘নির্বাসন’ কাটানোর পরে কাজে যোগ দেওয়ার দুই সপ্তাহও কাটেনি। এরই মধ্যে জলদাপাড়ার কুনকি হাতি ‘সুন্দর’কে নিয়ে ফের এক বার নাজেহাল বন দফতর। রবিবার ‘ডিউটি’ থেকে পিলখানায় ফিরেই মাহুতকে পিঠ থেকে ফেলে ফের একবার পালালো সে। তার পর চিলাপাতা এলাকায় রীতিমতো ঘুমপাড়ানি গুলি ছুড়ে কাবু করতে হল তাকে। এ দিনের এই ঘটনার জেরে আপাতত সুন্দরকে আবারও কিছুদিনের জন্য নির্বাসনে ফেরানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে বনদফতর।
গত বছর ২৪ নভেম্বর স্নান করতে বেরিয়ে এই সুন্দরই পাতাওয়ালা বাপী বর্মণকে পিঠ থেকে ফেলে পালিয়ে যায়। পর দিন জলদাপাড়ার জঙ্গলে সুন্দরের দেখা মিলতেই পায়ে শিকল বেঁধে তাকে ধরতে যান মাহুত দীপক কার্জি। কিন্তু রেগে গিয়ে দীপককে মাটিতে ফেলে তাঁর বুকে দাঁত ঢুকিয়ে দেয় সুন্দর। যার জেরে মৃত্যু হয় দীপকের। এর পর বনকর্মীদের চোখে ধুলো দিয়ে জঙ্গলের এক দিক থেকে অপর দিকে পালিয়ে বেরাতে থাকে সে। শেষ পর্যন্ত অবশ্য গত ৫ ডিসেম্বর ঘুমপাড়ানি গুলির সাহায্যে তাকে কাবু করা হয়। তার পরই শুরু হয়
সুন্দরের নির্বাসন।
বন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, মে মাসের শেষে ফের একবার ‘ডিউটিতে’ ফেরানো হয় সুন্দরকে। তার আগে অবশ্য জলদাপাড়া জাতীয় উগদ্যানে অভিজ্ঞ মাহুত বলে পরিচিত সাইমন ওরাওঁকে সুন্দরের মাহুতের দায়িত্ব দেওয়া হয়। পাতাওয়ালার দায়িত্বে থাকেন বাপীই। বন দফতর সূত্রের খবর, এ দিন থেকে জলদাপাড়ায় মাহুত ও পাতাওয়ালাদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার কাজ শুরু হয়েছে। পার্বতী বড়ুয়ার উপস্থিতিতে চলছে সেই প্রশিক্ষণ। এ দিন ওই প্রশিক্ষণে যান বাপী। যদিও সুন্দরকে নিয়ে ডিউটিতে বেরোন সাইমন।
সূত্রের খবর, এই মুহূর্তে জলদাপাড়ার শিসামারা বিটে কর্মরত সুন্দরকে নিয়ে ডিউটি সেরে সাইমন সেখানকার পিলখানাতে ফেরেনও। তার পরই শিকল দিয়ে পা বাধার জন্য অন্য এক পাতাওয়ালার সাহায্য চান তিনি। আর সেই পাতাওয়ালা এগিয়ে আসতেই সেখান থেকে আচমকা ছুটতে শুরু করে সুন্দর। গাছে ধাক্কা লেগে সুন্দরের পিঠ থেকে পড়ে যান মাহুত। যদিও বন দফতর অবশ্য সে কথা মানতে চায়নি।
জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যানের সহকারী বন্যপ্রাণ সহায়ক নভোজিৎ দে বলেন, “মাহুত সম্পূর্ন সুরক্ষিত রয়েছেন। সুন্দর পালিয়ে চিলাপাতার দিকে চলে যায়। সে যাতে লোকালয়ে ঢুকে কারও ক্ষতি করতে না পারে সে জন্য আরও কয়েকটি কুনকি হাতিকে নিয়ে বনকর্মীরা তার পিছু ধাওয়া করে। একটি জায়গায় গিয়ে তাকে ঘিরে ফেলা হয়। তার পর ঘুমপাড়ানি গুলির সাহায্যে কাবু করে ফের পিলখানায় নিয়ে যাওয়া হয় সুন্দরকে।”