হাতিটিকে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা চলছে। —প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র।
দু’দিন ধরে নিখোঁজ জলপাইগুড়ির গরুমারা জাতীয় উদ্যানের গর্ভবতী হাতি রামি। রবিবার বিকেল থেকে সোমবার সন্ধ্যা পর্যন্ত তার খোঁজে জঙ্গলে কুনকি নিয়ে তল্লাশি চালিয়েও হদিস পায়নি বন দফতর। মঙ্গলবার তার দেখা মিলেছে। তবে এখনও তাকে পিলখানায় ফেরানো যায়নি। প্রশ্ন উঠছে, কী ভাবে একটি গর্ভবতী কুনকি হাতি নজরদারি এড়িয়ে পিলখানা থেকে জঙ্গলে চলে গেল। যদিও এই ঘটনাকে স্বাভাবিক বলেই মনে করছেন বন দফতরের কর্তারা। একই মত বিশিষ্ট হস্তীবিশারদ পার্বতী বড়ুয়ার।
উত্তরবঙ্গ বন্যপ্রাণী বিভাগের বনপাল ভাস্কর জেভি বলেন, ‘‘এই ঘটনা অস্বাভাবিক কিছু নয়। মঙ্গলবারও হাতিটির দেখা মিলেছে। হাতিটি আমাদের নজরেই রয়েছে। শীঘ্রই সেটিকে পিলখানায় ফিরিয়ে আনা হবে।’’
পিলখানা ছেড়ে অবশ্য রামির জঙ্গলে পালিয়ে যাওয়ার ঘটনা এই প্রথম নয়। ২০২০ সালের ডিসেম্বর মাসের শেষ দিকে পিলখানা ছেড়ে জঙ্গলে পালিয়ে গিয়েছিল রামি। ন’দিন ধরে অনেক খোঁজাখুঁজির পরে তাকে ফের পিলখানায় ফেরাতে সক্ষম হন বনকর্মীরা। তবে এ বার পরিস্থিতিটা অনেকটাই আলাদা। গরুমারার এই পূর্ণবয়স্ক কুনকি হাতিটি অন্তঃসত্ত্বা। যে কোনও সময় সে সন্তান প্রসব করতে পারে বলে মনে করছে বনকর্মীরা। অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার কারণে তাকে বিশ্রামে রাখা হয়েছিল। প্রতি দিনের মতো রবিবারও তাকে মূর্তি নদীতে স্নান করাতে নিয়ে গিয়েছিলেন তার মাহুত। ফেরার সময় হঠাৎই মেজাজ বিগড়ে যায় রামির। মাহুত কোনও কিছু বুঝে ওঠার আগেই গভীর জঙ্গলে ঢুকে পড়ে সে। তার পর থেকেই শুরু হয় রামিকে খোঁজার পালা। রবিবার রাতের পর সোমবার দিনভর গরুমারার সমস্ত কর্মী, অন্য কুনকিদের নিয়ে জঙ্গলের আনাচে-কানাচে রামির খোঁজ চলে।
রামি নিখোঁজ হওয়ার পরে বন দফতরের কর্মীরা মুখে কুলুপ এঁটেছেন। দিনকয়েক আগে বন দপ্তরের নাথুয়া জঙ্গলে নিরাপত্তার জন্য রাখা কুনকি হাতি মিতালিও তার পিলখানা ছেড়ে লোকালয়ে চলে গিয়েছিল। অবশ্য তাকে সে দিনই ফেরাতে সক্ষম হন বন কর্মীরা। হস্তীবিশারদ তথা বন্যপ্রাণ সংগঠন ন্যাফের ডিরেক্টর কৌস্তভ চৌধুরী বলেন, ‘‘হাতিটি যখন অন্তঃসত্ত্বা, সেক্ষেত্রে বন দফতরের আরও নজর দেওয়া উচিত ছিল। তবে আশা করছি বন দফতর খুব শীঘ্রই হাতিটিকে পিলখানায় ফিরিয়ে আনতে পারবে।’’