বৃষ্টির অভাবে রায়গঞ্জের হাতিয়ায় ধানের জমির মাটি শুকিয়ে ফেটে গিয়েছে। তা পরিদর্শন করছেন জেলা কৃষি উপ অধিকর্তা।
সপ্তাহ তিনেক বৃষ্টি হয়নি। পাশাপাশি, দিনভর চড়া রোদের তাপ। এই পরিস্থিতিতে উত্তর দিনাজপুর জেলায় জলের অভাবে তিন হাজার হেক্টরেরও বেশি জমির আমন ধানের চাষ ক্ষতির মুখে পড়েছে। ইতিমধ্যেই জেলার রায়গঞ্জ, কালিয়াগঞ্জ, হেমতাবাদ, ইটাহার, করণদিঘি, ইসলামপুর, চোপড়া, গোয়ালপোখর ১ ও ২ ব্লকে বৃষ্টির অভাবে ধান চাষে সমস্যার রিপোর্ট জমা পড়েছে। উদ্বেগ বাড়ছে জেলা কৃষি দফতরে।
এ বছর জেলায় প্রায় আড়াই লক্ষ হেক্টর জমিতে আমন ধানের চাষ হচ্ছে। তার মধ্যে, ৮০ শতাংশ জমিতে সরকারি জলসেচের পরিকাঠামো গড়ে ওঠেনি বলে অভিযোগ। জেলা কৃষি দফতরের দাবি, বৃষ্টির অভাবে জেলার ন’টি ব্লকের উঁচু জমির মাটি শুকিয়ে ফেটে গিয়েছে। তবে, অনেক চাষি পাম্পের মাধ্যমে দূরবর্তী জলাশয় বা নদী থেকে জল এনে জমিতে দিচ্ছেন। অনেকে, পাম্প ভাড়া করে জমিতে জলসেচ দিচ্ছেন। ফলে, চাষের খরচ বেড়ে গিয়েছে। গরিব চাষিরা সমস্যায় পড়েছেন। রায়গঞ্জের মোহনবাটী হাই স্কুলের ভূগোলের শিক্ষক বিশ্বজিৎ রায় বলেন, ‘‘জুলাই মাসে জেলায় গড়ে ৩৫০-৪০০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়। এ বছর, মাত্র আট মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে।’’ হেমতাবাদের ধানচাষি মজিবুর রহমানের দাবি, ‘‘বৃষ্টির অভাবে প্রতি বিঘা জমিতে ঘণ্টাপিছু ২০০ টাকা খরচে পাম্প ভাড়া করে জলসেচ দিতে হচ্ছে। বৃষ্টি না হলে ধান চাষের খরচটুকুও উঠবে না।’’
জেলার উপ কৃষি অধিকর্তা প্রিয়নাথ দাস বলেন, “বৃষ্টির অভাবে জেলার ন’টি ব্লকে দু’হাজার হেক্টর জমির মাটি শুকিয়ে গিয়েছে বলে জানা গিয়েছে। ফলে, সেই সব জমির ধানচাষের ক্ষতির আশঙ্কা বাড়ছে। সোম ও মঙ্গলবারও জেলায় বৃষ্টি না হওয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত জমির পরিমাণ বেড়ে চলেছে।” ইতিমধ্যেই জেলা ও ব্লক কৃষি দফতরের কর্তারা জেলার বিভিন্ন এলাকায় ধানের জমিতে গিয়ে বৃষ্টির অভাবে ধান চাষের সমস্যা খতিয়ে দেখতে শুরু করেছেন। সোম ও মঙ্গলবার রায়গঞ্জ ব্লকের নানা এলাকা পরিদর্শন করেন প্রিয়নাথ। তিনি এই দিন এই প্রসঙ্গে বলেন, “জেলার বিভিন্ন এলাকায় জমি শুকিয়ে ধানগাছের পাতা হলদে হতে শুরু করেছে। আপাতত, চাষিদের ধানগাছের পাতায় তরল ইউরিয়া, ফসফেট ও নাইট্রোজেন-যুক্ত তরল ডিএপি সার স্প্রে করার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।”