শিশু ফিরে পাওয়ার খবরে স্বস্তিতে পরিবার। নিজস্ব চিত্র
হারিয়েও ফিরে পাওয়া যে ধন, সে তো হারাধনই! হারানো সেই শিশুটিকে ফিরে পাওয়ার খবরের আনন্দে পড়শিদের কেউ কেউ এই নামটাই বার বার বলে যাচ্ছিলেন কথায় কথায়। শনিবার সকাল থেকেই শিলিগুড়ি মহকুমার বুড়াগঞ্জের ভোগভিটার বাড়িতে ভিড়। বাড়িতে সাজোসাজো পরিবেশ। বাড়ির প্রায় সবাই তৈরি হচ্ছিলেন উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ এবং হাসপাতালে যাওয়ার জন্য। হারানো সদ্যোজাতকে শুক্রবার রাতে উদ্ধার করেছে পুলিশ। তাকে আনতে যাওয়ার জন্যেই এত তোড়জোড়! আর যেন তর সইছে না শিশুটির দাদু, কাকা, জ্যাঠাদের।
শিশুর জন্মের ছ’দিনে বাড়িতে প্রথম অনুষ্ঠান করার কথা। কিন্তু ঘরে না ফেরা পর্যন্ত কোনও অনুষ্ঠান নয় বলে জানিয়েছেন পরিবারের প্রধান অঘন সিংহ। গত বৃহস্পতিবার উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ থেকে অঘনের পুত্রবধূর রঞ্জিতা সিংহের পুত্রসন্তান চুরি হয়। সে দিন থেকে ভোগভিটা যেন শোকে পাথর। অঘনের তিন ছেলে। বড় এবং মেজোর বিয়ে দিয়েছেন। তাঁদের একটি করে সন্তান রয়েছে। তৃতীয় সন্তানের বিয়ে এক বছর আগে হয়েছিল। রঞ্জিতার প্রথম সন্তান নিখোঁজের ঘটনায় শোকে কাতর হয়ে পড়েন গোটা পরিবার এবং পড়শিরাও। খাওয়াদাওয়াই বন্ধ হতে বসেছিল বাড়িতে। পড়শিরা নিজের সাধ্যমতো তাদের আত্মীয় থেকে বিভিন্ন স্তরে শিশু চুরির ঘটনা জানিয়ে খোঁজার অনুরোধ করেছিলেন বলে দাবি। সেই শিশুই ফিরে পাওয়ার খবরে সকলের চোখে-মুখে স্বস্তির শ্বাস। অনেকে নাম রাখলেন হারাধন। কেউ বা শখ করে নাম দিলেন লক্ষ্মীকান্ত। তবে দেখার আগ্রহ যেন এলাকার মানুষকে অনেকটা অস্থির করে তুলেছে।
অঘনের বক্তব্য, ‘‘হারানো ধন ফিরে পেয়েছি। সবার প্রচেষ্টায় এটা সম্ভব হয়েছে। কিন্তু যতক্ষণ না দোষীরা শাস্তি পাচ্ছেন মনের ভিতরের ক্ষোভ নিরসন হবে না।’’ অঘনের ভাইয়ের ছেলে সঞ্জয় সিংহ এলাকার নির্দল পঞ্চায়েত সদস্য। সঞ্জয় বলেন, ‘‘এই কয়েক দিনে মাথার উপর দিয়ে যে ঝড় বয়ে গিয়েছে তা আমরা জানি। কিন্তু প্রশাসনকেও ধন্যবাদ জানাতে হবে।’’