তুরতুরি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় দৌড়াত্ব ‘বুড়ি’র। নিজস্ব চিত্র।
জঙ্গল থেকে বেরিয়ে লোকালয়ে হাতির হানার ঘটনা ঘটল আলিপুরদুয়ারেও। আলিপুরদুয়ার- ২ ব্লকের তুরতুরিতে শনিবার গভীর রাতে তাণ্ডব শুরু করে একটি হাতি। অভিযোগ, দুটি বাড়ি ভাঙচুর ও ফসল নষ্টের পাশাপাশি একটি বাড়িতে ঢুকে ভাতও খেয়ে নেয় হাতিটি। কোনও রকমে জানালা দিয়ে পালিয়ে প্রাণে বাঁচেন ওই বাড়ির চার জন বাসিন্দা।
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, সম্প্রতি প্রায় প্রতি রাতেই জঙ্গল থেকে বেরিয়ে ওই হাতিটি তুরতুরি গ্রাম পঞ্চায়েতের বিভিন্ন গ্রাম দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। হামলা চালানো ওই স্ত্রী হাতিটির বয়স হয়ে যাওয়ায় এলাকায় সেটি ‘বুড়ি হাতি’ নামেই পরিচিত। মূলত ধানের লোভেই হাতিটি বারবার গ্রামে ঢুকছে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। তাঁদের আরও অভিযোগ, ইতিমধ্যেই বুড়ি হাতির তাণ্ডবে এলাকায় ফসলের অনেক ক্ষতি হয়েছে।
এলাকার বাসিন্দারা জানিয়েছেন, শনিবার গভীর রাতে তুরতুরির বেলতলা এলাকায় প্রথম তাণ্ডব শুরু করে হাতিটি। ওই এলাকারই বিশ্বাস পাড়ায় বাড়ি সুরজিৎ বিশ্বাসের। এলাকার বেশ কিছু চাষের জমিতে তাণ্ডব চালানোর পরে ওই বাড়িতে হানা দেয় হাতিটি। সুরজিৎ বলেন, ‘‘বাড়িতে তিনটি ঘরের একটিতে আমি ও আমার স্ত্রী ঘুমিয়ে ছিলাম। পাশের ঘরে মা ও বোন ছিল। বাবা বাইরে থাকায় একটি ঘর ফাঁকা ছিল। সেই ফাঁকা ঘরেই হামলা চালায় বুড়ি
হাতি। ঘরটি ভেঙে দেয়। সেখানে মজুত ধান খায়। হাড়িতে থাকা ভাতও খেয়ে নেয়। ততক্ষণে আমাদের ঘুম ভেঙে গিয়েছে। কিন্তু দরজা খুলে বাইরে যাওয়ার উপায় নেই। কারণ বুড়ি হাতি তখন উঠোনে দাঁড়িয়ে। প্রাণ বাঁচাতে তাই চার জনই জানালা দিয়ে বাইরে লাফ মারি।”
ততক্ষণে এলাকার অনেকেই সুরজিতের বাড়ির কাছে চলে আসেন। পটকা ফাটিয়ে ও চিৎকার করে হাতিটিকে তাড়ানোর চেষ্টা করেন তাঁরা। অভিযোগ, এর পরই পাশের গ্রামে গিয়ে আরও একটি ঘরে ভাঙে হাতিটি। ইতিমধ্যেই বনকর্মীরা সেখানে পৌঁছে যান। শেষ পর্যন্ত দিনের আলো ফোটার পরে হাতিটি জঙ্গলে ফিরে যায়। বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের ক্ষেত্র অধিকর্তা বুদ্ধরাজ সেওয়া বলেন, ‘‘এমন ঘটনা এড়াতে আমরা সতর্ক রয়েছি। জঙ্গল লাগোয়া এলাকায় প্রতি রাতেই বন দফতরের টহল চলে।’’
এ দিকে, হাতির সঙ্গে মানুষের সংঘাত এড়াতে পূর্ব রাজাভাতখাওয়া রেঞ্জের অধীন গদাধর গ্রামের বাসিন্দাদের হাতে সার্চ লাইট তুলে দিয়েছে বন দফতর। বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের বনকর্তারা জানান, গদাধর গ্রামে ৩৩২ জনকে সার্চ লাইট
দেওয়া হয়েছে।