রংবেরং: থানায় আঁকা হচ্ছে নদী, জঙ্গল ও বন্যপ্রাণের ছবি। ছবি: সন্দীপ পাল
বোদাগঞ্জে ভ্রামরীদেবী মন্দিরে উল্টো দিকে ঘন জঙ্গলে দাঁড়িয়ে রয়েছে গজরাজ। কিছুটা এগোলেই জঙ্গলের মধ্যে গন্ডার, বাইসন ও হরিণ ছুটে বেড়াচ্ছে। কিছুটা অবাক হলেও এখন থেকে জলপাইগুড়ি কোতোয়ালি থানায় প্রবেশ করলেই এই দৃশ্য দেখা যাবে। জেলার নদী, জঙ্গল ও বন্যপ্রাণের দৃশ্যকে ছবির মাধ্যমে তুলে ধরে পরিবেশ বান্ধব থানা গড়তেই এই উদ্যোগ বলে দাবি পুলিশের।
থানা! এই শব্দটি সকলের কাছে পরিচিত। কেউ নাম শুনেই পিছু হঠেন। থানা-পুলিশ করতে গেলে অনেকেই এখনও উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন। আর সেই মূহূর্তে চোখের সামনে ভেসে ওঠে রংচংহীন একটা ঘর। নোংরা দেওয়াল। আলো নেই। দম আটকানো পরিবেশ।
এই ধারণা থেকে বেরিয়ে আসতেই অভিনব উদ্যোগ জলপাইগুড়ি কোতোয়ালি থানার। থানায় প্রতিটি দেওয়াল ঝাঁ চকচকে করে রং করা হয়েছে। প্রবেশের মুখে থানায় সেন্ট্রি দাঁড়িয়ে রয়েছেন সামনে বালির বস্তা। এগিয়ে যেতেই বাঁ দিকে ভ্রামরীদেবীর মন্দির উল্টো দিকে গজরাজ, কিছুটা দূরে হরিণ। সবটাই দেওয়ালের অঙ্কনের মাধ্যমে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। যেমন ছবিতে তুলে ধরা হয়েছে জঙ্গলের হাতি তাড়ানোর টঙ ঘর, জঙ্গলে উড়ে বেড়ানো প্রজাপতির দলও। আবার নদীর জলে খেলা করছে বিভিন্ন প্রজাতির মাছ। যে দিকেই তাকাবেন সবুজ আর সবুজ।
এই রকম পরিবেশ বান্ধব থানা অঙ্কণের মাধ্যমে ফুটিয়ে তুলেছেন চিত্রশিল্পী নীহার মজুমদার। তিনি বলেন, ‘‘আমাদের জেলায় নদী, জঙ্গল দিয়ে ঘেরা। সেই প্রাকৃতিক সৌন্দর্যকে তুলে ধরা হয়েছে অঙ্কনের মাধ্যমে।’’
জেলা পুলিশ সুপার অভিষেক মোদী বলেন, ‘‘থানা সম্পর্কে মানুষের মনের ভাবনাকে বদলাতেই এই উদ্যোগ। কোতোয়ালি থানাকে সাজিয়ে তোলা হয়েছে। একই রকম ভাবে জেলার সব ক'টি থানাকে পরিবেশ বান্ধব থানা গড়ে তোলা তুলতেই এই উদ্যোগ। অন্য দিকে পুলিশ এখন শুধু অপরাধী ধরতে ব্যস্ত নয়। সামাজিক কাজও করা হচ্ছে।’’
যদিও অনেকেরই বক্তব্য, থানায় ছবি এঁকে পরিবেশ বান্ধব পরিস্থিতি গড়ে তোলা সহজ। কিন্তু শক্ত হল, সত্যিই পরিবেশকে রক্ষা করা। কাঠ পাচার, বন্যপ্রাণ হত্যা রুখতে বন দফতরের পাশাপাশি পুলিশকেও সক্রিয় হতে হবে।