শিল্পী: প্রতিমা গড়তে মগ্ন রাতুল। নিজস্ব চিত্র
ছবি আঁকা বা মডেল তৈরির প্রথাগত কোনও শিক্ষা তার নেই। সাত বছর থেকে লেখাপড়ার অবসরে আপন খেয়ালেই বাড়িতে ছোট্ট দুর্গা প্রতিমা তৈরি শুরু করেছিল। এখনও সেই ছোট্ট প্রতিমাই তৈরি করে চলেছে মালদহের নবম শ্রেণির ছাত্র রাতুল রায়। শুধু তাই নয়, পুজোর চার দিন নিজেই নিয়মনিষ্ঠা মেনে পুজো করবে রাতুল। করোনা পরিস্থিতিতে এ বছরে পুজোমণ্ডপে না গিয়ে বাড়ির সকলে সেই দুর্গামূর্তিকেই পুষ্পাঞ্জলি দেবেন।
মালদহের ইংরেজবাজার শহরের দুর্গামন্দিরে বাড়ি রাতুলের। সে ললিতমোহন শ্যামমোহিনী বিদ্যাভবনের নবম শ্রেণির ছাত্র। বাবা সঞ্জীব রায় মালদহ জেলা পরিষদের সভাধিপতির আপ্তসহায়ক। মা তিতির মজুমদার রায় গৃহবধূ। পারিবারিক সূত্রে জানা গিয়েছে, রাতুলের বয়স যখন সাত বছর তখন থেকেই সে আপন খেয়ালে বাড়িতে দুর্গাপ্রতিমা তৈরি শুরু করে। প্রথমে কাঠ আর প্লাইবোর্ড দিয়ে দু’ফুটের একটি একচালা তৈরি করে তার উপরে মাটি দিয়ে দেড় ফুটের দুর্গাপ্রতিমা তৈরি করে ফি বছর। এ বারও ব্যতিক্রম হয়নি। রথযাত্রার দিন নিজেই কাঠামো পুজো করে প্রতিমা গড়ার কাজ শুরু করেছে। তবে প্রতি বছর লেখাপড়ার ফাঁকে রথযাত্রা থেকে তিলে তিলে প্রতিমা তৈরির কাজ শেষ করত সে।
এ বারে করোনা পরিস্থিতিতে স্কুল বন্ধ। তাই রথযাত্রার দিন কাঠামো পুজো করেই সে রেখে দিয়েছিল। অগস্ট মাসের শেষ দিকে প্রতিমা গড়ার কাজ শুরু করে। প্রতিমায় জরি দিয়ে সাজসজ্জাও করা হয়েছে। বাড়ির দোতলার বারান্দায় প্রতিমা রেখে সেখানে একটি মণ্ডপও তৈরি করেছে রাতুল। জ্বালানো হয়েছে টুনির আলো।
রাতুল বলে, ‘‘আমি নিজেই আমার তৈরি মূর্তির পুজো করি। বাড়ির বড়রা আমাকে উৎসাহ দিয়েছে।’’ সে আরও বলে, ‘‘প্রতি বছর বাবা-মায়ের সঙ্গে ঘুরে ঘুরে বিভিন্ন মণ্ডপে প্রতিমা দেখতাম। এ বারে বাইরে বার হব না। বাড়িতেই পুজো দেব, অঞ্জলিও হবে।’’ রাতুলের বাবা সঞ্জীব বলেন, ‘‘এ বার ছেলের তৈরি দুর্গামূর্তিতেই বাড়ির সকলে পুষ্পাঞ্জলি দেব।’’