উদ্ধার ৩ কোটির সোনা, ধৃত মিজোরামের চার

মঙ্গলবার পর্যন্ত টানা জেরার পরে ধৃতদের আদালতে তোলা হয়। গোয়েন্দারা জানাচ্ছেন, চোরাপথে মায়ানমার থেকে মিজোরাম, সেখান থেকে বাসে করে শিলিগুড়ি আনা হয়েছিল সোনা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ১৭ অক্টোবর ২০১৯ ০৭:৫৪
Share:

প্রতীকী ছবি।

ফের শিলিগুড়ি থেকে উদ্ধার হল বিপুল পরিমাণে চোরাই সোনা। সোমবার ভোরবেলা ওই সোনা উদ্ধার করেন কেন্দ্রীয় রাজস্ব গোয়েন্দা দফতরের (ডিআরআই) আধিকারিকরা। ঘটনায় গ্রেফতার করা হয়েছে চারজনকে। ধৃতদের মধ্যে রয়েছেন এক মহিলা। ধৃতদের নাম থমাস মিংথানমাওইয়া, লালনুনসাংগা, লালচুয়ানসাংগি, লমাসাংগা। এর মধ্যে লমাসংগা লালচুয়ানসাংগির বাবা। প্রত্যেকেই মিজোরামের আইজলের বাসিন্দা।

Advertisement

মঙ্গলবার পর্যন্ত টানা জেরার পরে ধৃতদের আদালতে তোলা হয়। গোয়েন্দারা জানাচ্ছেন, চোরাপথে মায়ানমার থেকে মিজোরাম, সেখান থেকে বাসে করে শিলিগুড়ি আনা হয়েছিল সোনা। চার অভিযুক্তই জুতোর সোলের ভিতরে আঠা মিশ্রিত টেপ দিয়ে ৩৮টি সোনার বিস্কুট এবং ১টি সোনার বার লুকিয়ে রেখেছিল। সোনার মোট ওজন প্রায় ৭ কেজি ৩০৮ গ্রাম। যার বাজারমূল্য ২ কোটি ৮৯ লক্ষ ৩৬ হাজার টাকার মত। ধৃতদের হেফাজত থেকে মোবাইল, নগদ টাকা, পাসপোর্ট, মায়ানমারের এবং দিল্লির দু’টি ঠিকানার নথিপত্র মিলেছে। ৬৭ বছরের লমাসাংগার কাছ থেকে মায়ানমারের কিছু নগদ টাকাও মিলেছে। সকলেই একটি আন্তজার্তিক সোনা পাচার চক্রের সক্রিয় সদস্য বলে গোয়েন্দাদের দাবি।

মঙ্গলবার ধৃতদের জেল হেফাজতের পক্ষে সওয়াল করেন ডিআরআই-র আইনজীবী ত্রিদীপ সাহা। তিনি বলেন, ‘‘ধৃতরা কোথায় সোনা পাচারের চেষ্টা করছিল তা গোয়েন্দারা খতিয়ে দেখছেন।’’ বিচারক ধৃতদের ১৪ দিনের জেল হেফজাতের নির্দেশ দিয়েছেন। শুল্ক আইনে ১ কোটি টাকা অবধি সোনা উদ্ধার হলে অভিযুক্তদের জামিন পাওয়ার কথা। পরে নথিপত্র জমা দেওয়ার একটা সুযোগ থাকে। অভিযুক্তদের আইনজীবী অখিল বিশ্বাস জানান, দু’টি আলাদা বাসে অভিযুক্তরা শিলিগুড়ি এসেছিল। চারজনের কাছ থেকে আলাদা আলাদা সোনা উদ্ধার হয়েছে। কিন্তু ডিআরআই একসঙ্গে চারজনকে জুড়ে সোনা উদ্ধার দেখিয়েছে। তাতে সোনার দাম প্রায় ৩ কোটি হওয়ায় কারও জামিন হয়নি।

Advertisement

ডিআরআই সূত্রের খবর, ক’দিন ধরেই তারা খবর পাচ্ছিলেন উত্তর-পূর্বাঞ্চল থেকে শিলিগুড়ি হয়ে বড় অঙ্কের সোনা পাচার হবে। সেই মতন শিলং থেকে শিলিগুড়িগামী একটি বাস এবং গুয়াহাটি থেকে শিলিগুড়িগামী আর একটি বাসকে মাল্লাগুড়ির একটি অভিজাত হোটেলের সামনে ধরা হয়। চারজনকে চিহ্নিত করার পরে টানা ২৪ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ চলে। তল্লাশি চালিয়ে উদ্ধার হয় সোনা।

এই নিয়ে গত ছ’মাসে কয়েক কোটি টাকার সোনা উদ্ধার হল। গত মে মাসে শহরের বাসস্ট্যান্ড এলাকা থেকে মণিপুরের ছ’জনকে গ্রেফাতার করা হয়। তখন উদ্ধার হয় ৮ কোটি টাকার সোনা। জুলাইয়ে সরাইঘাট এক্সপ্রেসে ৬ কেজি সোনা পাচারের সময় এক মহিলা-সহ চারজনকে ধরা হয়েছিল। অগস্টেও ফাঁসিদেওয়া থেকে মিজোরামের তিনজনকে ১০ কেজি সোনা-সহ ধরা হয়। গোয়েন্দারা জানাচ্ছেন, কলকাতা, দিল্লি, মুম্বই নিয়ে সোনাগুলি চোরাবাজারে সরবরাহ করা হয়। সেখানে সোনার নকল নথিপত্র তৈরি হয়ে যায়।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement