নিয়মিত নিয়োগ হয় ডাক্তার। প্রতীকী চিত্র।
চিকিৎসক সঙ্কট মেটাতে সম্প্রতি কলকাতায় প্রশাসনিক বৈঠকে স্বাস্থ্য দফতরের কর্তাদের ডাক্তারিতে ‘ডিপ্লোমা কোর্স’ করানো নিয়ে মন্তব্য করেন মু্খ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যদিও পরে, রাজ্য সরকারের বিবৃতিতে ‘ডিপ্লোমা’ কথার উল্লেখ নেই, দাবি স্বাস্থ্য দফতরের কর্তাদের একাংশের। গত, সোমবার মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে গঠিত ১৫ জনের বিশেষজ্ঞ কমিটি এই বিষয়ে বৈঠক করে। সে বৈঠকে ‘ডিপ্লোমা ডাক্তার’ কথার ব্যবহার নিয়ে কমিটির সদস্যদের একাংশ আপত্তি জানান। তবে প্রশিক্ষণপ্রাপ্তদের ‘হেল্থ কেয়ার প্রোভাইডার’ বলা যেতে পারে বলে বৈঠকে আলোচনা হয়েছে, দাবি স্বাস্থ্য দফতরের একাংশের। এই অবস্থায় প্রশ্ন উঠছে, গ্রামীণ ও প্রত্যন্ত এলাকায় চিকিৎসার দায়িত্বে, তবে কি ওই প্রশিক্ষণপ্রাপ্তেরা থাকবেন? গ্রামে যেতে ‘অনিচ্ছুক’ চিকিৎসকদের জায়গা নেবেন ‘হেল্থ কেয়ার প্রোভাইডারেরা’?
স্বাস্থ্যকর্তাদের দাবি, জেলায়-জেলায় বিভিন্ন চিকিৎসাকেন্দ্রের ঝাঁ চকচকে ভবন রয়েছে। তবে সঙ্কট রয়েছে চিকিৎসকের। গৌড়বঙ্গের তিন জেলা মালদহ ও দুই দিনাজপুরে এমনই ছবি গ্রামীণ এবং ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলিতে, দাবি স্থানীয়দের। যদিও গ্রামীণ হাসপাতালগুলিতে নিয়ম করে চিকিৎসক নিয়োগ করা হয় বলে দাবি মালদহ জেলা স্বাস্থ্য দফতরের। তার পরেও কেন সঙ্কট মিটছে না, তা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন। স্বাস্থ্য দফতরের কর্তাদের একাংশের দাবি, গ্রামীণ হাসপাতালগুলিতে ভবন তৈরি হলেও, এখনও চিকিৎসা পরিষেবার পরিকাঠামো উন্নতি হয়নি। এ ছাড়া, চিকিৎসকদের একাংশের মধ্যে নিরাপত্তার অভাব বোধ কাজ করে বলেও দাবি স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের। শুধু তা-ই নয়, চিকিৎসকদের থাকারও সুব্যবস্থা নেই গ্রামীণ স্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলিতে। যার ফলে, চিকিৎসকদের একাংশ কাজে যোগ দিয়েও, গ্রামীণ হাসপাতালে দীর্ঘ মেয়াদে থাকার ক্ষেত্রে ‘অনীহা’ প্রকাশ করেন।
এরই সঙ্গে গ্রামীণ হাসপাতালগুলিতে নবনিযুক্ত চিকিৎসকদের একাংশ স্নাতকোত্তর স্তরে পড়াশোনার জন্যও হাসপাতাল ছেড়ে চলে যান। মালদহের মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক পাপড়ি নায়েক বলেন, “গ্রামীণ হাসপাতালের কিছু চিকিৎসক উচ্চ শিক্ষার জন্য পড়তে চলে যান। সে ক্ষেত্রে অনেক সময় গ্রামীণ হাসপাতালগুলিতে চিকিৎসকের ঘাটতি তৈরি হয়। সে বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানোও হয়।”
চিকিৎসকদের একাংশ গ্রামের বদলে শহরের চিকিৎসায় বেশি আগ্রহী থাকেন, মত স্বাস্থ্য দফতরের কর্তাদের একাংশের। দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সুদীপ দাস বলেন, ‘‘গ্রামীণ এলাকায় স্বাস্থ্য পরিষেবা নিয়ে একটি সমীক্ষা করছি। কী পরিস্থিতি রয়েছে, খতিয়ে দেখে তার পরে পদক্ষেপ করা হবে।’’