জিতেই নিশীথ প্রামাণিককে বিঁধলেন উদয়ন গুহ। —নিজস্ব চিত্র।
কোচবিহার জেলা থেকে নিশীথ প্রামাণিকের নাম মুছে যাবে। দিনহাটার উপনির্বাচনে এক লক্ষ ৬০ হাজারের বেশি ভোটে জয়ের পর কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নিয়ে এমনটাই বললেন দিনহাটায় জয়ী তৃণমূল প্রার্থী উদয়ন গুহ। ঘটনাচক্রে এর আগের বার দিনহাটায় জয়ের খুব কাছ থেকে ফিরে এসেছিলেন উদয়ন। তাঁকে মাত্র ৫৭ ভোটে হারিয়ে ওই কেন্দ্রে জয় পেয়েছিলেন নিশীথ।
মঙ্গলবার উপনির্বাচনের ফল প্রকাশের দিন। গণনার প্রথম থেকেই তৃণমূল এবং বিজেপি-র মধ্যে ব্যবধান বাড়তে থাকে চারটি বিধানসভা কেন্দ্রেই। তার মধ্যে দিনহাটায় তৃণমূল দেড় লক্ষের ব্যবধানে জিতেছে। স্বাভাবিক ভাবেই উচ্ছ্বসিত উদয়ন। নিশীথের নাম না করে তিনি বলেন, ‘‘দলে যোগদানের সময় এক জন বলেছেন, ওঁকে কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী না বলে কেন্দ্রীয় প্রতিবন্ধী মন্ত্রী বলা দরকার। এটা প্রমাণ হয়ে গিয়েছে উনি কেন্দ্রীয় প্রতিবন্ধী মন্ত্রী। অশোক মণ্ডল ফ্যাক্টর নয়। উনি ৯৩ ভোট পেয়েছেন নিজের বুথে।’’ উদয়নের মতে নিশীথ, ‘‘কোচবিহারের রাজা, স্বঘোষিত মহারাজ।’’ আত্মবিশ্বাসের সুরে উদয়ন আরও বলেন, ‘‘কমল গুহ অনেক কিছু পারেননি। আমি কমল গুহের ছায়ায় ঢাকা পড়ে গিয়েছি। পুরসভায় প্রার্থী দিয়ে সব আসনে জয় এটা বাবা পারেননি। আমি পেরেছি। এই যে ফল হল আমার জীবদ্দশায় কেউ ভাঙতে পারবেন কি না জানি না।’’
দিনহাটার লড়াই যে চ্যালেঞ্জের ছিল তা মানছেন উদয়ন। তাঁর দাবি, ‘‘এটা আনন্দের জয় এ নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই। আমাদের নেতা-কর্মীরা চ্যালেঞ্জ নিয়ে এই সাম্প্রদায়িক শক্তিকে ধুলোয় মিশিয়ে দিয়েছি।’’ এই সূত্রেই নিশীথের প্রসঙ্গ টেনে উদয়ন আরও বলছেন, ‘‘দিনহাটার বুকে, কোচবিহার জেলায় যে ভগবান তৈরির চেষ্টা হচ্ছিল সে যে শূন্য, তার যে কোনও মূল্য নেই, সেটা আজ প্রমাণ করে দিতে পারলাম। নিশীথ প্রামাণিকের নাম আর কোচবিহার জেলার রাজনীতিতে কেউ নেবে না। তার ব্যবস্থা করে দিতে পারলাম। ও কাগুজে বাঘ।’’ বিজেপি প্রার্থী অশোক মণ্ডলকে নিয়ে উদয়নের মত, ‘‘প্রার্থী পায়নি বলেই ওঁকে বলির পাঁঠা করা হয়েছে।’’
উদয়নের মতে, দিনহাটার এই জয় গোটা রাজ্যে সর্বকালীন রেকর্ড। উচ্ছ্বাসের সুরে তিনি বলে দিয়েছেন, ‘‘আমরা দেখিয়ে দিলাম, দু’পা পিছিয়ে যাওয়া মানে জোরে ধাক্কা দেওয়া।’’ একইসঙ্গে এ-ও জানিয়েছেন, দিনহাটার বিপুল জয় নিয়ে রাজ্য নেতৃত্বের সঙ্গেও কথা হয়েছে। এই বিপুল জয়ের পর কি মন্ত্রী হবেন? উদয়নের উত্তর, ‘‘এই বিষয়টি মুখ্যমন্ত্রীর উপর নির্ভর করছে।’’